ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নতুন ভেন্যু কুমিল্লায় খেলবে মোহামেডান, ম্যাচে বিদেশী ফুটবলার খেলবেন ৫ জন

শুরুর আগেই ১৪ দিন পেছাল বিপিএল ফুটবল

প্রকাশিত: ১২:০২, ৩০ জানুয়ারি ২০২০

শুরুর আগেই ১৪ দিন পেছাল বিপিএল ফুটবল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর প্রিমিয়ার ফুটবল লীগের দ্বাদশ আসর মাঠে গড়াবার কথা ছিল বৃহস্পতিবার থেকে। কিন্তু নানা কারণে তা যথাসময়ে শুরু হবে না, এটা ছিল পুরনো খবর। নতুন খবর হলো শুরুর আগেই লীগ পেছানো হয়েছে ১৪ দিন! বুধবার সভা করে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে দেশীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বুধবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বোর্ড রুমে পেশাদার ফুটবল লীগের এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে সভাপতিত্ব করেন বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং পেশাদার ফুটবল লীগ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদী এমপি। আরও উপস্থিত ছিলেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, সদস্য আবদুর রহিম, শওকত আলী খান জাহাঙ্গীর, ইলিয়াছ হোসেনসহ পেশাদার লীগের সব ক্লাবের কর্মকর্তারা। সালাম মুর্শেদী তার বক্তব্যে বলেন, ‘কদিন আগেই বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট শেষ হলো। এই আসর শুরুর আগেই আপনাদের জানিয়েছিলাম এই মাসের শেষদিকে আমরা প্রিমিয়ার লীগ ২০১৯-২০ শুরু করব। যা হোক ইতোমধ্যেই আমরা লীগ শুরুর ব্যাপারে ক্লাবগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছি। ১ ফেব্রুয়ারি সিটি নির্বাচন, এই উপলক্ষে দুদিন যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়া এবারের এএফসি কাপে আবাহনী লিমিটেড অংশ নিচ্ছে এবং আগামী ৫ ও ১২ ফেব্রুয়ারি তাদের হোম এবং এ্যাওয়ে ম্যাচ খেলা আছে মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টস এ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের বিরুদ্ধে, এই আসরে ক্লাব অনেকটা জাতীয় দলের মতোই দেশকে প্রতিনিধিত্ব করে। এই ব্যাপারটা মাথায় রেখে ক্লাবগুলো জানিয়েছে, আবাহনী যেন এই আসরে অংশ নিয়ে ভাল ফল করে দেশের গৌরব বৃদ্ধি করতে পারে এবং সেজন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিতে পারে, সেজন্য তারা চাচ্ছে প্রিমিয়ার লীগ যেন পিছিয়ে দেয়া হয়। বাফুফের পেশাদার লীগ কমিটি তাদের এই বক্তব্য আমলে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রিমিয়ার লীগ ৩০ জানুয়ারির পরিবর্তে পিছিয়ে দিয়ে কয়েকদিন পর আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে। কোন ভেন্যুতে কোন ক্লাবের খেলা হবে, সেই সূচী আমরা পরে জানিয়ে দেব।’ লীগে বিদেশী খেলোয়াড় খেলানো নিয়ে ক্লাবগুলোর আবদারের প্রেক্ষিতে বাফুফে এর আগে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, বুধবারের সভায় সেই সিদ্ধান্ত আবারও বদলে গেছে। আগে বলা হয়েছিল পাঁচ বিদেশীকে নিবন্ধন করানো যাবে এবং ম্যাচে চারজনকে খেলানো যাবে। কিন্তু আন্ডারডগ কয়েকটি ক্লাবের নতুন আবদারÑ এতে তাদের বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, খেলোয়াড় চোট পেলে খেলার ফল তাদের প্রতিকূলে যাবে। তাই পাঁচ বিদেশীকেই ম্যাচে খেলানোর অনুমতি দেয়া হোক। বাফুফে তাদের এই আবেদন মেনে নিয়েছে। তবে নতুন নিয়ম বেঁধে দিয়েছে ম্যাচে পাঁচ বিদেশীকে একসঙ্গে পুরো ৯০ মিনিট খেলানো যাবে না। অর্থাৎ চতুর্থ জনকে নামিয়ে দিয়ে পঞ্চম জনকে বদলি হিসেবে খেলানো যাবে। তবে সেই পঞ্চম বা বদলি খেলোয়াড় হিসেবে স্থানীয় খেলোয়াড়কেও মাঠে নামানো যাবে। এছাড়া বাইলজ অনুযায়ী এশিয়ান কোটায় একজন বিদেশী খেলানোর নিয়ম বহাল থাকবে এবারও। প্রিমিয়ার লীগে এবার ম্যাচে একজন বেশি বিদেশী ফুটবলারকে খেলানোর কারণে দেশীয় ফুটবলারদের সাইডবেঞ্চে বসে থাকতে হবে। জাতীয় দলে এর কুপ্রভাব পড়বেই। এমনিতেই তারা জাতীয় দলের হয়ে গোল খরায় ভোগে। ফলে এই নিয়মটি করাটা কি ঠিক হলো? সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘দেশীয় স্ট্রাইকাররা যদি ম্যাচে গোল করতে না পারে, তাহলে কি আমি মাঠে নেমে সেই গোল করে দেব? ধরুন লীগে বিদেশী ফুটবলারই নেই, কিন্তু তারপরও কি দেশীয় স্ট্রাইকাররা ম্যাচে সেভাবে গোল করতে পারে? আমি তো তেমন কাউকে দেখি না, যার মধ্যে গোলের ক্ষুধা থাকবে, গোল করার জন্য স্বার্থপরতা থাকবে! প্রতিপক্ষের ডি বক্সের মধ্যে বল পেলে তো তারা খেই হারিয়ে ফেলে। গোলপোস্টে শট মারা নিয়ে ভয় পায়, দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে! এভাবে তো চলতে পারে না। ক্লাবগুলো তো রেজাল্ট চায়। তাদের অনেক টাকা বিনিয়োগ করা থাকে। সেই টাকা উঠিয়ে আনতে হলে তাদের বিদেশী ফুটবলার প্রয়োজন। এটাই বাস্তবতা। আমরা যখন ফুটবল খেলতাম তখন সালাউদ্দিন, চুন্নু, আসলামরা এতটাই কোয়ালিটি স্ট্রাইকার ছিলেন, তখন তাদের বিদেশীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই একাদশে ঢুকতে হতো এবং নিয়মিত গোল করতে হতো। কিন্তু এখন সে রকম মানের ফুটবলার কোথায়? আমাদের সময় তখন লাল-সবুজ নামে দুটো আলাদা জাতীয় দল করা যেত, আর এখন? এগুলো বুঝতে হবে।’
×