ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ৪ জানুয়ারি ২০২০

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম

জাককানইবি সংবাদদাতা ॥ ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ২০১৯ সালের মে মাসে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে ২০ পদের বিপরীতে ৩৫ জন নিয়োগ দেয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এর ৭ মাস পর লিখিত পরীক্ষা নেয়ার তারিখ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ২৭ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করে চিঠি প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেখানে স্থগিত থাকে সেকশন অফিসার পদে দুইজনকে নিয়োগ দেয়ার কথা। কিন্তু এই পদে আবেদনকারীদের মধ্যে প্রভাবশালী কয়েকজন রয়েছে। পদ সংখ্যা দুইজন হওয়ায় বিপাকে পড়েন উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান। তাই এই পদের নিয়োগ স্থগিত রেখেই অন্য পদের নিয়োগ পরীক্ষা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (৩১ডিসেম্বর) দুপুরে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে ২৪ ঘন্টার কম সময়ের মধ্যেই মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্যে বুধবার (১ জানুয়ারি) আহ্বান করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষা নেয়া পদগুলোর মধ্যে নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ), সহকারী প্রকৌশলী (ইন্সট্রুমেন্ট) এবং অডিটর পদে প্রত্যাশিত প্রার্থী উপস্থিত না থাকায় এই পদগুলোতে অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীদের অনুর্ত্তীন দেখানো হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক এবং কর্মকর্তা বলেছেন, এবারের নিয়োগ প্রক্রিয়া সব থেকে বিতর্কিত। একটি সিঙ্গেল নিয়োগও স্বচ্ছ হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের পরিচিত এক ব্যক্তিকে অডিট অফিসার পদে নিয়োগ দিতে ব্যাপক অর্থের লেনদেন করা হয়েছে। এছাড়া কম্পিউটার অপারেটর পদে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ এর পরও ব্যবহারিক পরীক্ষার দিন নতুন করে রোল (২৭) কে যুক্ত করা হয়। যা উপাচার্যের হস্তক্ষেপে করা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে একটি বিশ্বস্ত সুত্র। এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফলাফল প্রকাশে একটু ভুল হয়েছে তাই সংশোধন করা হয়েছে। ভুল হলে প্রশাসন যেকোন মুহূর্তে সংশোধন করতে পারে। আর আমরা সেটিই করেছি। অন্যদিকে, অডিট অফিসার পদে রোল (৫০)ধারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের ভাই হিসেবে পরিচিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় সেই শিক্ষক থাকবেনা বললেও তিনি ওই মৌখিক পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন বলেন জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক- শিক্ষার্থী- কর্মকর্তা বলেন, এবারের প্রায় সব নিয়োগ এককেন্দ্রিক নিয়োগ হয়েছে। উপাচার্য স্যার তো সকল জায়গায় বলেন, কেউ আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করতে পারবে না। তার এই নিয়োগ পরীক্ষা ছিলো কেবল দেখানো। আগে থেকেই যাদের নেয়া হবে তা নির্ধারিত ছিলো। তারা অভিযোগ করেন, দুদক বা ইউজিসি যদি একটা অডিট করে বা ভালো ভাবে তদন্ত করে তবে সব প্রকাশ পাবে। এই নিয়োগে উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা, শিক্ষক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ভাগ করে দেয়া হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, এখনো সিন্ডিকেট হয়নি আমাকে জিজ্ঞেস করলে আমি রোলসহ বলে দিবো ২০ পদে কারা বসছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, প্রশাসন এর সকল সিদ্ধান্ত উপাচার্য স্যারের নির্দেশ অনুযায়ী হচ্ছে। আর যারা লিখিত পরীক্ষায় চান্স পেয়েছে বেশিরভাগই ময়মনসিংহ অঞ্চলের। তাছাড়া আগে থেকেই ফোনে জানানো হয়েছে তাদের।যা হচ্ছে নিয়মের মধ্য দিয়েই হচ্ছে।নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে হুমায়ুন কবীর বলেন, এসব বিষয়ে আমি অবগত নই। উপাচার্য স্যার সকল তথ্য দিতে পারবেন। আর আমার দেখা অনুযায়ী নিয়ম মাফিক সকল কিছুই হচ্ছে।
×