ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফিলিপিন্সে ফানফোনের আঘাত

প্রকাশিত: ০৯:২৭, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯

ফিলিপিন্সে ফানফোনের আঘাত

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপিন্সে বুধবার টাইফুন ফানফোনের আঘাতে অন্তত ১৬ জন মারা গেছেন বলে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া ৬ জন নিখোঁজ আছে বলে জানান হয়েছে। মঙ্গলবার ঝড়োবাতাস, ভারি বর্ষণ ও হঠাৎ বন্যা নিয়ে টাইফুনটি আঘাত হানে। টাইফুনের প্রভাবে ম্লান হয়ে পড়ে বড়দিন উৎসব। বিবিসি, এএফপি ও রয়টার্স। ফিলিপিন্সে প্রবল বেগে আছড়ে পড়া টাইফুন ফানফোনের আঘাতে ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়াও ঝড়ের কবলে ৬ জন নিখোঁজের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। বড়দিনের উৎসবের মধ্যেই দেশটির প্রত্যন্ত এলাকার কিছু গ্রাম ও কেন্দ্রীয় পর্যটন এলাকায় টাইফুনটি আঘাত হানে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আগেই ৫৮ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়। সতর্কতার অংশ হিসেবে বিভিন্ন বন্দরের অসংখ্য ফেরি চলাচলও বন্ধ করে দেয়া হয়; বাতিল হয় বিমানের কয়েক ডজন ফ্লাইট। সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্ট্রেইট টাইমস ফানফোনে নিহতের সংখ্যা ১৬ বলে জানিয়েছে। ফিলিপিন্সের দুর্যোগ মোকাবেলার দায়িত্বে থাকা সংস্থা মধ্যাঞ্চলীয় কাপিজ, ইলোইলো ও লেইতে প্রদেশে হতাহতের খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১৩ বছর বয়সী এক বালক বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে, গাছের ডাল পড়ে একজন এবং গাড়ি দুর্ঘটনায় আরেকজন নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে তারা। বৃধবার রাতেই টাইফুন ফানফোন ফিলিপিন্স ছেড়েছে। এটি এখন পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দক্ষিণ চীন সাগরের দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ফিলিপিন্সের আবহাওয়া বিভাগ। টাইফুন ফানফোনের সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার। ঝড়ে বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রন্ত হয়। বিদ্যুতবিচ্ছিন্ন হয়েছে পড়েছে বিভিন্ন স্থান। বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত টাইফুনে মোট ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি। তবে টাইফুন আঘাতের পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বোরাকে, কোরোন এবং অন্যান্য জনপ্রিয় পর্যটন এলাকায়ও আঘাত হেনেছে টাইফুন ফানফোন। এসব এলাকা শুভ্র বালির বীচের জন্য বিদেশী পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। টাইফুনের আঘাতে দেশটির কালিবো বিমানবন্দরে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশ কিছু সড়ক এখনও বন্ধ রয়েছে। তবে বিভিন্ন এলাকায় যানবাহন চলাচলের জন্য রাস্তা স্বাভাবিকের চেষ্টা চলছে। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, কালিবো বিমানবন্দরের ১শ’ মিটার এলাকায় বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিমানের ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় বহু মানুষ বিপাকে পড়েছেন। ট্যাক্সি চলাচল করলেও প্রচণ্ড ঝড়োবাতাস ও বৃষ্টির কারণে লোকজন বিমানবন্দরও ছাড়তে পারছে না। ফেরি বন্ধ থাকায় আটকা পড়েছেন হাজারও পর্যটক। অনেক ফ্লাইটও বাতিল করা হয়েছে। গাছপালা উপড়ে বিভিন্ন শহরের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ঝড়োহাওয়া ও বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যার কারণে অনেক মানুষ আটকা পড়েছেন। ফিলিপিন্স প্যাসিফিক টাইফুন বেল্টের অন্যতম একটি অঞ্চল। দেশটিতে প্রতিবছর গড়ে ২০টি ঝড় এবং টাইফুন আঘাত হানে।বুধবার নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। ফেরি এবং বিমান সেবা বাতিল হওয়ায় অনেকেই তাদের পরিবারের কাছে ফিরতে পারেনি। টাইফুনের আঘাতে নিহতদের মধ্যে এক পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন। রেডক্রস জানিয়েছে, টাইফুনে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের আশু খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। বাড়িঘর ভেঙ্গে যাওয়ায় অনেকেই খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। বৃহস্পতিবার টাইফুন ফানফোন দক্ষিণ চীন সাগরের দিকে অগ্রসর হয়।
×