ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তুলসীগঙ্গার ভাঙ্গনে শ্মশান ও মন্দির হুমকিতে

প্রকাশিত: ০৮:৩৪, ২৯ নভেম্বর ২০১৯

 তুলসীগঙ্গার ভাঙ্গনে শ্মশান ও মন্দির হুমকিতে

নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়পুরহাট, ২৮ নবেম্বর ॥ আক্কেলপুর উপজেলা সদরের নবাবগঞ্জঘাট মহাশ্মশান, মন্দির ও সংলগ্ন দেবোত্তর সম্পত্তি অবকাঠামো তুলসীগঙ্গা নদীতে যে কোন সময় বিলীন হয়ে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদীর পাড়ে আরসিসি পাইলিং রিটার্নিং ওয়াল ও ব্লক না থাকায় প্রতিবছর মন্দির ও শ্মশান প্রাঙ্গণ ভেঙ্গে চলেছে। ফলে প্রতিবছর বন্যায় আক্কেলপুর উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। জানা যায়, ১৮১৬ সালে আক্কেলপুর এলাকার সুরতলাল চৌধুরী, মহাদেব আগরওয়ালা, ভীমরাজ আগরওয়ালা ও স্থানীয় মারোয়ারী সমিতির উদ্যোগে তুলসীগঙ্গা নদীর তীরে নবাবগঞ্জ ঘাটে হিন্দু ও মারোয়ারী সম্প্রদায়ের মৃত ব্যক্তিদের দাহ ও সমাধী দেয়ার জন্য নিজেদের অর্থে ১১ বিঘা জমি শ্মশানের নামে দান করে। সেই জমিতে বিভিন্ন দেবদেবীর মন্দির নির্মাণ করা হয়। প্রতিবছর এখানে দুর্গাপূজা ছাড়াও অন্য দেবতাদের পূজার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও এখানে সমাধির স্থান, চুল্লি ও বিশ্রামাগার রয়েছে। আক্কেলপুর-জয়পুরহাট সড়ক থেকে প্রায় দুইশ’ গজ হেঁটে যাবার পথটি বন্যায় চলাচল অনুপযোগী হয়ে যায়। তখন চরম বিপর্যয়ে পড়তে হয় শবদেহ নিয়ে যেতে। শ্মশানের এই সংকট ও দুর্ভোগ নিরসনে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন সুফল পায়নি। ফলে তাদের মাঝে শঙ্কা বেড়েই চলেছে। নবাবগঞ্জঘাট মহাশ্মশান, দেবোত্তর ও সমাজ কল্যাণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক সুশীল কুমার আগরওয়ালা জানান, আক্কেলপুর ও নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার কয়েক হাজার হিন্দু ও মারোয়ারী জনগোষ্ঠীর শবদেহ দাহ ও সমাধি দেয়ার একমাত্র জায়গা এই মহাশ্মশান সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য আমরা ইতোমধ্যেই সরকারের সমাজসেবা অধিদফতর ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে যথাক্রমে নিবন্ধন ও তালিকাভুক্ত সনদপত্র নিয়েছি। জয়পুরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের নিকট শ্মশান উন্নয়নের জন্য আর্থিক সহযোগিতা পেলেও শ্মশান, মন্দির বন্যায় তুলসীগঙ্গা নদীতে বিলীন হওয়া থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। এই অবস্থায় সুশীল কুমার আগরওয়ালা পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে শ্মশান ও মন্দির রক্ষায় লিখিতভাবে আবেদন করেছেন। শ্মশান, মন্দির ও সংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য দাবি জানিয়েছেন আক্কেলপুর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এ্যাডভোকেট রাজেন্দ্র প্রসাদ আগরওয়ালা, আক্কেলপুর উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ব্যবসায়ী নেতা ওমপ্রকাশ আগরওয়ালা।
×