ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্বাধীনতা স্তম্ভসহ চার প্রকল্প দ্রুত সম্পন্ন করুন ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:৫০, ২৮ নভেম্বর ২০১৯

  স্বাধীনতা স্তম্ভসহ চার প্রকল্প দ্রুত সম্পন্ন করুন ॥ প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণসহ (তৃতীয় ধাপ) মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে গৃহীত চারটি প্রকল্পের কাজ দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করার পাশাপাশি প্রকল্পগুলোকে যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উক্ত চারটি প্রকল্পের পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা প্রত্যক্ষকালে তিনি এ নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘আমি চাই এই প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুত সম্পন্ন হোক।’ তিনি প্রকল্পগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। প্রকল্প চারটি হচ্ছে- ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্প (৩য় পর্যায়), অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্প, মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্যানোরমা নির্মাণ প্রকল্প। এসব প্রকল্পের মধ্যে প্রথম প্রকল্পের জন্য ২৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজের শতকরা ৩০ শতাংশ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের (৩য় পর্যায়) আওতায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ দেয়ার স্থানটিতে এবং ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দখলদার পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থানে দুইটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে। জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রদানের স্থানটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ দানরত ১৮ ফুট দীর্ঘ একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মাণাধীন আবাসন প্রকল্পে ‘বীর নিবাস’ শিরোনামে ১৪ হাজার এক তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ২৫৩ কোটি টাকা। জাতির পিতার জম্নশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী এই ভবনগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের উপহার হিসেবে প্রদান করবেন। ৪ ডেসিমাল জমির ওপর ৯শ’ স্কয়ার ফুট আয়তনের এসব এক একটি ভবনের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তৃতীয় প্রকল্পের আওতায় জনগণের সামনে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার জন্য মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরে ‘মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র’ নির্মাণ করা হবে। যে প্রকল্পটি বর্তমানে ৮১ দশমিক ৭৬ একর জমির ওপর বাস্তবায়িত হচ্ছে, এর জন্য আরও অতিরিক্ত ৪৯ দশমিক ২৭ একর জমির প্রয়োজন পড়বে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে একটি প্যানোরমা নির্মাণের প্রস্তাব সংক্রান্ত প্রকল্পও প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুত, জ্বলানি এবং খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান, পিএমও সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং স্থাপত্য বিভাগের প্রধান স্থপতি এএসএম আমিনুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। দেশের খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী হাশেম খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক নিসার হোসেনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব এসএম আরিফুর রহমান পাওয়ার পয়েন্টে প্রকল্পগুলো উপস্থাপন করেন।
×