ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শি’র চিন্তার সঙ্গে পরিচিত হতে হবে সাংবাদিকদের

প্রকাশিত: ০৮:৫৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 শি’র চিন্তার সঙ্গে পরিচিত  হতে হবে  সাংবাদিকদের

আগামীতে এশিয়ার পরাশক্তিখ্যাত চীনের গণমাধ্যমে কাজ করার জন্য সকল সাংবাদিককে একটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। যেখানে তাদের প্রেসিডেন্ট শি জিন-পিংয়ের মতাদর্শ নিয়ে বোঝাপড়া এবং তার আনুগত্যের দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। গার্ডিয়ান। গত মাসে দেশটির কয়েকটি মিডিয়াতে পাঠানো নোটিসে চীনা সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান এই পরীক্ষার কথা জানায়। যেখানে বলা হয়, দেশের যে কোন নাগরিককে সাংবাদিকতার অনুমোদন নবায়ন করতে হলে তাকে ‘স্টাডি শি’ নামে একটি এ্যাপের ওপর সাংবাদিকদের পরীক্ষা দিতে হবে। অনেকের ধারণা, শীঘ্রই এই নিয়ম চীনের সকল সাংবাদিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন-পিংয়ের সকল চিন্তাকে দলীয় গঠনতন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন করে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি। আধুনিক চীনের রূপকার হিসেবে স্বীকৃত মাও সে তুংয়ের পর শি জিন-পিং হলেন দেশটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তি। ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় যার চিন্তা দলীয় গঠনতন্ত্রে মতাদর্শের মর্যাদা পেল। গণমাধ্যমের দাবি, মতাদর্শের মর্যাদা পাওয়ায় মাও-এর মতবাদ যেমন দেশটিতে মাওবাদ হিসেবে বিবেচিত হয়, ঠিক তেমনই শির চিন্তাধারাও এখন থেকে শিবাদ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যে কারণে এখন থেকে জনগণের যে কোন চ্যালেঞ্জ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে অবস্থান হিসেবে বিবেচিত হবে। শি জিন-পিংয়ের চিন্তাধারা নিয়ে চলতি বছরের শুরুতে চালু হয় নতুন এ্যাপ ‘স্টাডি শি’। এবার মূলত সেই এ্যাপের মাধ্যমেই সাংবাদিকদের পরীক্ষা নেয়া হবে। দেশটির অন্তত তিনটি স্বনামধন্য গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা ‘দ্য গার্ডিয়ান’কে জানিয়েছে, তাদের প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে সেই এ্যাপে রেজিস্ট্রেশনের জন্য একটি অনানুষ্ঠানিক নোটিস পেয়েছে। সানদং প্রদেশের একটি গণমাধ্যমের কর্মীরা বলেন, উঁচু সারি থেকে শুরু করে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত কেউই এই কার্যক্রম থেকে বাঁচতে পারবে না বলে আমাদের বিশ্বাস। আগামী অক্টোবরে শুরু হতে যাওয়া পরীক্ষাটি মূলত পাঁচটি অংশে বিভক্ত। যার মধ্যে দুটি থাকবে নতুন যুগে শি জিন-পিংয়ের সমাজতান্ত্রিক শিক্ষা এবং প্রোপাগান্ডা ইস্যুতে তার গুরুত্বপূর্ণ চিন্তা। বিশেষজ্ঞদের মতে, গণমাধ্যম কর্মীদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কম মুক্ত দেশগুলোর একটি এই চীন। ‘রিপোর্টর্স উইদাউট বর্ডাসে’র সাম্প্রতিক তালিকায় বিশ্বের মতো ১৮০টি দেশের তালিকায় ১৭৭তম অবস্থানে আছে এশিয়ার পরাশক্তিখ্যাত এই চীন। দেশটির সাংবাদিকদের কাছে এর আগেও বেশ কয়েকবার নিজের প্রতি আনুগত্যের দাবি তুলেছেন প্রেসিডেন্ট শি জিন-পিং। ২০১৬ সালে তিনটি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ‘সিনহুয়া’র সাংবাদিকদের প্রোপাগান্ডা ফ্রন্টের সদস্য আখ্যা দিয়েছিলেন। তার ভাষায়, তাদের (সাংবাদিকদের) অবশ্যই আমাদের পার্টিকে সম্পূর্ণই নিজেদের পরিবার হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
×