ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য কয়লা নিয়ে বন্দর ছেড়েছে জাহাজ

প্রকাশিত: ১১:২১, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য কয়লা নিয়ে বন্দর ছেড়েছে জাহাজ

রশিদ মামুন ॥ পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্র চালাতে আমদানি কয়লার জাহাজ বন্দর ছেড়েছে। সোমবার রাতে ইন্দোনেশিয়া থেকে ২০ হাজার টন কয়লা নিয়ে জাহাজটি বন্দর ছাড়ে। বন্দর ছাড়ার ৯ দিন পর আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর পায়রা বন্দরের জেটিতে নোঙর করার কথা রয়েছে। এই প্রথম দেশে বিদ্যুত কেন্দ্র চালানোর জন্য বিপুল কয়লা আমদানি করা হচ্ছে। বিদ্যুত কেন্দ্রটির প্রকল্প পরিচালক শাহ আবদুল মাওলা সোমবার বিকেলে জানান, জাহাজে কয়লাবোঝাই শেষ হয়েছে। রাতেই বাংলাদেশের উদ্দেশে জাহাজ ছেড়ে আসবে। প্রথমে কেন্দ্রটির জন্য ২০ হাজার টন কয়লা আনা হচ্ছে। আগামী ২৫ বা ২৬ সেপ্টেম্বর কয়লা পুড়িয়ে টেস্টিং করা হবে। তবে বিদ্যুত কেন্দ্রটি উৎপাদন শুরুর জন্য পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির ৪শ’ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছে তারা। এর আগে দেশী গ্যাস ও তরল জ্বালানি অর্থাৎ তেল দিয়ে বিদ্যুত উৎপাদন করা হতো। এরপর সরকার বিদ্যুত উৎপাদনে বহুমুখী জ্বালানি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়। গত বছরের শেষ দিক থেকে সরকার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি শুরু করেছে। এ বছরের শেষ নাগাদ কয়লাও আমদানি করা হচ্ছে, যা দিয়ে প্রথম দেশে বড় কোন বিদ্যুত কেন্দ্র চালানো হবে। পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্রটি ডিসেম্বরে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার কোম্পানি পিটি বায়ার্ন রিসোর্স টিবিকের সঙ্গে বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) গত জুনে কয়লা আমদানির চুক্তি করে। ১০ বছর মেয়াদী কয়লা সরবরাহ চুক্তিতে তারা পায়রায় বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য কয়লা আমদানি করবে। পায়রা এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্রটি এ কয়লা দিয়ে চালানো হবে। ইন্দোনেশিয়ার কোম্পানি পিটি বায়ার্ন রিসোর্স টিবিকে এ অঞ্চলের সব থেকে বড় কয়লা সরবরাহকারী কোম্পানির অন্যতম। কয়লা উৎপাদনের সঙ্গে পিটি বায়ার্নের রয়েছে বন্দর অবকাঠামো। প্রথম কয়লা আমদানি শুরু কলেও আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশের বড় আরও দুটি কয়লাচালিত বিদ্যুত কেন্দ্র উৎপাদনে আসবে। ’২১ সালে রামপাল ও ’২৬ সালে মাতারবাড়ি বিদ্যুত কেন্দ্র উৎপাদন শুরু করবে। এ দিয়েই দেশে মোট তিন হাজার ৮৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্র উৎপাদন শুরু করবে। এতে দেশে আমদানি করা কয়লার ব্যাপক চাহিদা তৈরি হবে। কয়লা আমদানির জন্য সরকার মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে। এই বন্দরের নির্মাণ কাজ শেষ হলে তখন বন্দরে সরাসরি তিন লাখ মেট্রিক টনের জাহাজ নোঙর করতে পারবে। এতে দেশে কয়লার পরিবহন ব্যয় কমে আসবে। আর কয়লার পরিবহন ব্যয় কমলে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ হ্রাস পাবে। বার্ষিক সাড়ে চার মিলিয়ন টন অর্থাৎ ৪৫ লাখ মেট্রিকটন কয়লা সরবরাহ করবে পিটি বায়ার্ন। ইন্দোনেশিয়ার এই কোম্পানিটি সর্বোচ্চ ভালমানের কয়লা সরবরাহ করবে। প্রতি টন কয়লার বর্তমান মূল্য ধরা হয়েছে ৫৫ ডলার। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ ২৫ ডলার যোগ হয়ে পায়রা কেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছাতে ব্যয় দাঁড়াবে ৮০ ডলার। কয়লা পরিবহনের জন্য জার্মানির কোম্পানি ওলডেনডরফ এর সঙ্গে পৃথক চুক্তি করছে বিসিপিসিএল। ওই চুক্তিটির মেয়াদ পাঁচ বছর। ওলডেনডরফ বিশ^ব্যাপী বাল্ক শিপিং এ পরিচিত নাম।
×