ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মানবতার মর্মবাণীতে ছায়ানটের স্মরণে কবি নজরুল

প্রকাশিত: ১১:১৮, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

মানবতার মর্মবাণীতে ছায়ানটের স্মরণে কবি নজরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সৃৃষ্টির আলোয় বাঙালীর কাছে কবি নজরুল একদিনের নয়, প্রতিদিনের। সঙ্কটে বা দুঃসময়ে তার গান-কবিতার মাঝেই মেলে অভয় বাণী। অশুভ শক্তির বিনাশেও অবলম্বন হয়ে ওঠেন এই বিদ্রোহী কবি। মানুষে মানুষে জাত-পাতের বৈষম্য ঘুচিয়ে সাম্যের সমাজ গড়ার প্রেরণাটিও ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো এই কবির কাছ থেকে। প্রেম-ভালবাসার প্রকাশেও জুড়ি নেই তার। শনিবার সন্ধ্যায় কাজী নজরুলের গানের সুর আর কবিতার শিল্পিত উচ্চারণের মাঝে শ্রোতারা খুঁজে পেলেন সেই সকল বারতা। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৩ তম প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট। গানের সুরে ও কবিতার শিল্পীরা ভালবাসা নিবেদন করলেন কবির স্মৃতির প্রতি। জানালেন শ্রদ্ধাঞ্জলি। ছায়ানট ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে নজরুলের বৈচিত্র্যময় সুর-ঐশ^র্যের সম্মোহনে উঠে আসে অসাম্প্রদায়িক চেতনার অনুসারী মানবতার মর্মবাণী। সাম্যবাদী ও দ্রোহী চেতনার ধারক বাংলাদেশের জাতীয় কবির জীবনবোধ শিল্পীরা গানে, কবিতায় ফুটিয়ে তোলেন। সম্মেলক গানের সুরে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। অনেক কণ্ঠ এক হয়ে গেয়ে ‘এসেছি তব দ্বারে ভক্তি-শূন্য প্রাণে। করুণাময় প্রভু ! কর হে পূর্ণ দানে।’ Ñ গানে নজরুলেরই এই আহ্বান যেন সকলের কাছে প্রার্থনা হয়ে ধরা দিল। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম যেন তার গানের কথার মতোই আমাদের কাছে কখনও প্রেরণার আধার, কখনও বিদ্রোহের, প্রেমের প্রতীক হয়ে ধরা দেন। বিপ্লবে শক্তি জোগাতে, হতাশায় মনে আশার আলো জ¦ালান আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল। তার কবিতায়, গানের পঙক্তিমালার ভেতর দিয়ে আজও জাতির ক্রান্তিকালে তিনি উপস্থিত হন অশুভবিনাশী শক্তি রূপে। সম্মেলক কণ্ঠে শিল্পীরা গেয়ে ওঠেন ‘জাগো অমৃত-পিয়াসী চিত’। অনুষ্ঠানে একক কণ্ঠের পরিবেশনায় মৌমিতা সরকার মুমু গেয়ে শোনান ‘হে প্রিয় আমারে দিব না ভুলিতে’। শুক্লা পাল সেতুর কণ্ঠে গীত হয় ‘বল্ রে জবা বল্’। কানিজ হুসনা আহম্মাদী গেয়ে শোনান ‘কেনো আন ফুল-ডোর’। অর্পিতা চক্রবর্তী পরিবেশন করেন ‘ওগো অন্তর্যামী ভক্তের তব’। তমা সরকারের গাওয়া গানের শিরোনাম ছিল ‘ঘুমিয়ে গেছে শ্রান্ত হয়ে’। পপি আক্তার পরিবেশন করেন ‘পরাণ-প্রিয়! কেন এলে অবেলায়’। সুস্মিতা দেবনাথ শুচি শুনিয়েছেন ‘মনে পড়ে আজ’। শেখর ম-ল গেয়েছেন ‘মেঘে মেঘে অন্ধ অসীম’। সুদীপ্ত শুভ পরিবেশিত গানের শিরোনাম ছিল ‘সাঁঝের পাখিরা ফিরিল’। সুস্মিতা দাস শুনিয়েছেন ‘তোমার বীণার মূর্ছনাতে’। একক পরিবেশনার মাঝে সম্মেলক কণ্ঠে শিল্পীরা গেয়ে শোনান ‘বেদনার সিন্ধু মন্থন শেষ’ ও ‘নীরন্ধ্র মেঘে মেঘে’। নজরুলের কবিতা থেকে পাঠ করেন আবৃত্তিশিল্পী কৃষ্টি হেফাজ ও জাহীদ রেজা নূর। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে শেষ হয় অনুষ্ঠান। আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য চিত্র কর্মশালার সমাপনী ॥ তরুণ নির্মাতাদের জন্য প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ শেখার চমৎকার এক আয়োজন ঢাকা ডক ল্যাব। শেখার পাশাপাশি নিজেদের ছবিও উপস্থাপনের সুযোগ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক এ আয়োজন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে বৈশি^ক প্রেক্ষাপটে তুলে ধরতে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের যৌথ প্রযোজনায় ছবি নির্মাণের কলাকৌশল প্রশিক্ষণ দিতে তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত ‘প্রামাণ্যচিত্রের যৌথ প্রযোজনার কলাকৌশল ও যৌথ প্রযোজনার বাজার’ সংক্রান্ত ছয় দিনব্যাপী এই আর্ন্তজাতিক কর্মশালার শেষদিন ছিল শনিবার। বিকেলে আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে সমাপনী অনুষ্ঠানে তরুণ প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতাদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এম আব্দুল মোমেন এমপি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা ডকল্যাবের চেয়ারপার্সন নাসির উদ্দীন ইউসুফ। স্বাগত বক্তব্য দেন ডকল্যাবের পরিচালক তারেক আহমেদ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ডকল্যাব ট্রাস্টি বোর্ডর সদস্য সামিয়া জামানসহ বিদেশী অতিথিবৃন্দ ও অংশগ্রহণকারীরা।
×