ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কূটনীতিকদের আরও জোরালো ভূমিকা চায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ৩০ আগস্ট ২০১৯

কূটনীতিকদের আরও জোরালো ভূমিকা চায় বাংলাদেশ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে কূটনীতিকদের আরও জোরালো ভূমিকা চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বৃহস্পতিবার বিদেশী কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে এ প্রত্যাশার কথা জানান তিনি। রোহিঙ্গা সঙ্কটের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরতে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিদেশী কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। খবর ওয়েবসাইটের। ব্র্রিফিং শেষে ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে আরও জোরালো ভূমিকা রাখার জন্য কূটনীতিকদের আহ্বান জানিয়েছি। এক প্রশ্নের উত্তরে ড. মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে চীন মধ্যস্থতা করতে চায়। তারা এ বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছে। আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যেসব এনজিও রোহিঙ্গাদের নানাভাবে বিভ্রান্ত করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মিয়ানমার গণহত্যা চালালেও তাদের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্র সামরিক মহড়া চালাচ্ছে- এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এটা আপনারাই যুক্তরাষ্ট্রকে জিজ্ঞাসা করুন, কেন তারা মহড়া চালাচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মোঃ শহীদুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা ব্রিফিংয়ে অংশ নেন। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার তাদের দায়িত্ব পালন করেনি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমার গত ২২ আগস্ট এক প্রেস রিলিজ দেয়। সেখানে আমাদের ওপর দায় চাপিয়ে বলেছে, বাংলাদেশ প্রত্যাবাসন শুরু করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা আয়োজন সম্পূর্ণ করতে পারেনি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বললাম, বাংলাদেশের যা যা করার সবই করেছে। এটা মিয়ানমারের দায়িত্ব তাদের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরতে রাজি করানো। এটা বাংলাদেশের দায়িত্ব না। মিয়ানমার তাদের দায়িত্ব পালন করেনি বলে রোহিঙ্গারা যায়নি।’ রোহিঙ্গা সঙ্কটে গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে চীন-জিমিং ॥ ঢাকায় নবনিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে আরও গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে চীন। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকায় নবনিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে কাজ করছে। এই সঙ্কট সমাধানে আরও গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে চীন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ-চীনের দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যু ছাড়াও রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সূত্র জানায়, গত ২২ আগস্ট দ্বিতীয়বারের মতো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ভেস্তে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এ সময় রোহিঙ্গা সঙ্কটের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে তাদের কাছে সহায়তা চাওয়া হয়। রোহিঙ্গা সঙ্কট শুরুর পর থেকে বিভিন্ন সময় সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশী কূটনীতিকদের কাছে পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এ উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর সীমান্ত অতিক্রম করে পালিয়ে আসে ৭ লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা। বর্তমানে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বসবাস করছে। শুরুতে মানবিক কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিলেও অধিক জনসংখ্যার ছোট দেশে তাদের দীর্ঘসময় ধরে আশ্রয় দেয়া সম্ভব নয়। এর আগে অনেক প্রচেষ্টা ও প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১৫ নবেম্বর প্রথম পর্যায়ে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত যাওয়ার কথা থাকলেও সেবারও রোহিঙ্গাদের অনিচ্ছার কারণে প্রত্যাবাসন আটকে যায়।
×