ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

দ্রুত ‘শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ বাস্তবায়নের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৪৮, ১ জুলাই ২০২৫

দ্রুত ‘শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ বাস্তবায়নের দাবি

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পাস হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে। এরপর আর কোনো অগ্রগতি নেই। দীর্ঘসূত্রতায় আটকে আছে শরীয়তপুরের মানুষের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়। দ্রুত ‘শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন জেলার বিশিষ্টজনরা।সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন ফোরাম’-এর আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ দাবি জানান।

বৈঠকে ফোরামের আহ্বায়ক এবং আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার, শিক্ষাবিদ ও গবেষক ড. মোশাররফ হোসেন মাসুদ বলেন, শরীয়তপুরের উর্বর মাটিতে ধান, পাট, পেঁয়াজ, আদা, টমেটোসহ বহু ফসল উৎপন্ন হয়, যার মধ্যে অনেক পণ্য রপ্তানিযোগ্য। কৃষিভিত্তিক এই জেলার উন্নয়নের জন্য একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত জরুরি।

তিনি বলেন, ২০২১ সালের ৬ অক্টোবর শরীয়তপুরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে আইন প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন হয়। ২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ সংসদে পাস হয়। পরবর্তীতে ২০২৫ সালের ১৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ রাখা হয়। আইন পাস হলেও গত দুই বছরে বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নে কার্যকর কোনো অগ্রগতি হয়নি।

ড. মোশাররফ হোসেন মাসুদ বলেন, এ জেলায় নেই সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নেই বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে উন্নয়নবঞ্চিত মানুষ কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতির জন্য অধীর। এখনই প্রয়োজন মানবসম্পদ উন্নয়ন, অবকাঠামো গড়ে তোলা এবং পদ্মার ভাঙন রোধ। শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত চালু করে এই সম্ভাবনাময় জনপদকে এগিয়ে নিতে সকলের ঐক্য ও সহযোগিতা কামনা করছি।

বৈঠকে ফোরামের সদস্যসচিব শিকদার মো. মেসবাহউদ্দিন বলেন, পদ্মাপাড়ের নৈসর্গিক এলাকার পলিমাটিতে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের দীর্ঘদিনের আকুতি ছিল। ২০২১ সালে তৎকালীন সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় শরীয়তপুরে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব পেশ করে। ২০২৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় আইনও পাস করে সরকার। কিন্তু এরপর আর কোনো অগ্রগতি নেই। এই জটিলতা নিরসনে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নে আপনাদের সবার সহযোগিতা চাই।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. এম. নুরুল ইসলাম বলেন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের যা যা উপযোগিতা থাকতে হয়, শরীয়তপুরে তার সব গুণই বিদ্যমান। সরকারের কাছে এটা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবিও ছিল। সেই দাবির প্রেক্ষিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় আইনও পাস হয়েছে। তাহলে কেন এই দীর্ঘসূত্রতা?

এই বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় জেলার সামগ্রিক চেহারা বদলে দেবে। এজন্য সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সরকারের দোরগোড়ায় দাবিটি পৌঁছে দেব। আশা করি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন হবে।

বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন মোটেক্স ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ কবির রানা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আহসানউল্লাহ, ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি গ্লোবাল নেশন-এর সম্পাদক ও প্রকাশক ড. মাহবুবুর রহমান, সিটি ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় ও অর্থনীতি অনুষদের ডিন এবং ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. জুলফিকার হাসান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহিদুল ইসলাম, পালং-জাজিরা ফোরামের সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান, ধলপুর আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ বাচ্চু, অধ্যাপক এম. এ. শাহাবুদ্দিন, তরুণ ব্যবসায়ী ও শিক্ষানুরাগী সাইয়েদ জোবায়ের, ঢাকাস্থ শরীয়তপুর স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার-এর সাবেক সভাপতি তাহমিদ জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত জাজিরার শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘পদ্মা’-র সভাপতি রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

আফরোজা

×