ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

ক্যানসার চিকিৎসায় আলঝেইমার ঝুঁকি কমে, নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য

প্রকাশিত: ০১:০১, ১ জুলাই ২০২৫

ক্যানসার চিকিৎসায় আলঝেইমার ঝুঁকি কমে, নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য

ছবি: সংগৃহীত।

ব্রেস্ট ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত রেডিয়েশন থেরাপি আলঝেইমার রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে—দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষকদের নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই সম্ভাবনার ইঙ্গিত।

গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রেস্ট ক্যানসার থেকে বেঁচে যাওয়া নারীদের মধ্যে আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৮ শতাংশ কম। প্রায় ৭.৩ বছর ধরে ৭০ হাজার ৭০১ জন ব্রেস্ট ক্যানসার রোগী এবং ১ লাখ ৮০ হাজার ৩৬০ জন সুস্থ নারীর স্বাস্থ্যতথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা এ তথ্য প্রকাশ করেন।

তবে গবেষকরা সতর্ক করে বলছেন, এটি একটি পর্যবেক্ষণমূলক (observational) গবেষণা, ফলে সরাসরি কারণ-পরিণতি প্রমাণ করা যায় না। তথাপি, পরিসংখ্যানগতভাবে এই ঝুঁকি হ্রাস ভবিষ্যতে বড় পরিসরে স্বাস্থ্যনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।

গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, “ব্রেস্ট ক্যানসার সারভাইভারদের মধ্যে অনেকেই মনোযোগ এবং স্মৃতিশক্তি হ্রাসের সমস্যায় ভোগেন, যেটিকে অনেকে ‘কেমোব্রেইন’ বলে থাকেন। তবে আলঝেইমার রোগের সঙ্গে এর সরাসরি সংযোগ এখনও মিশ্র এবং অস্পষ্ট।”

বিস্ময়ের বিষয় হলো, গবেষণায় এমনটা দেখা গেছে যে, রেডিয়েশন থেরাপি পাওয়া রোগীদের মধ্যেই আলঝেইমারের ঝুঁকি সবচেয়ে কম। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই প্রভাব বেশি স্পষ্ট হয়েছে—বিশেষ করে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে, যাদের মধ্যে আলঝেইমারের প্রবণতা বেশি।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি ১,০০০ নারীর মধ্যে বছরে আলঝেইমারে আক্রান্ত হওয়ার হার ব্রেস্ট ক্যানসার সারভাইভারদের ক্ষেত্রে ২.৪৫ জন, আর সাধারণ নারীদের ক্ষেত্রে ২.৬৩ জন।

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ঝুঁকি হ্রাসের প্রভাব কমে যেতে পারে, যা ইঙ্গিত দেয় যে রেডিয়েশন থেরাপির কিছু জটিল এবং এখনও সম্পূর্ণভাবে অনুধাবন না করা প্রভাব থাকতে পারে—বিশেষত মস্তিষ্কের প্রদাহ হ্রাসে এর ভূমিকা নিয়ে।

গবেষকরা বলেন, “ব্রেস্ট ক্যানসার সারভাইভারদের জন্য আলঝেইমার ঝুঁকি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদিও কেমোব্রেইন ও দীর্ঘমেয়াদী মানসিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ আছে, আমাদের গবেষণা বলছে ব্রেস্ট ক্যানসারের চিকিৎসা সরাসরি আলঝেইমার ডিমেনশিয়ার কারণ নয়।”

উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী নারীদের মধ্যে ব্রেস্ট ক্যানসারই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। তবে সময়মতো ধরা পড়লে ৯০ শতাংশের বেশি রোগীই সুস্থ হয়ে ওঠেন।

এই গবেষণা ভবিষ্যতের আরও গবেষণার দরজা খুলে দিয়েছে, বিশেষত ব্রেস্ট ক্যানসার সারভাইভারদের দীর্ঘমেয়াদি মানসিক স্বাস্থ্য ও স্মৃতিশক্তি সংরক্ষণে নতুন দিকনির্দেশ দিতে পারে বলে আশা গবেষকদের।

সূত্র: https://short-link.me/11Zf-

মিরাজ খান

×