ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রোমের সম্রাট সেই নাদাল

প্রকাশিত: ১০:১৯, ২১ মে ২০১৯

 রোমের সম্রাট সেই নাদাল

জিএম মোস্তফা ॥ রাফায়েল নাদাল আর নোভাক জোকোভিচের লড়াই! স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনায় ভরপুর। কোর্টের দুই প্রান্তে এ্যাড্রিনালিনের ফোয়ারা। যা গ্যালারিতেও ছড়িয়ে যায় মুহূর্তে। এই গ্যালারিকে মাতিয়েই স্বরূপে ফিরলেন ক্লে কোর্টের। রোম মাস্টার্সের ফাইনালে রাফায়েল নাদাল ৬-০, ৪-৬ এবং ৬-১ গেমে হারালেন নোভাক জোকোভিচকে। সেইসঙ্গে রোম মাস্টার্সের রেকর্ড নবম শিরোপা জয়ের অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়েন স্প্যানিশ টেনিস তারকা। বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান রাফায়েল নাদালের এটা ৩৪তম মাস্টার্স শিরোপা। চলতি মৌসুমের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে উঠেছিলেন নাদাল। কিন্তু সেবার জোকোভিচের কাছে হেরে যান তিনি। এর পরের সময়টা খুব বাজেভাবে পার করতে হয় স্পেনের এই টেনিস তারকাকে। ক্লে কোর্টে তো একেবারেই ভিন্ন নাদালকে দেখা যায় এবার। রোম সফরের আগে ক্লে কোর্টের চার টুর্নামেন্টের কোনটিতেই চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি তিনি। ২০০৪ সালের পর যা প্রথম! এর ফলে রোম ওপেনে কতটুকু এগিয়ে যাবেন নাদাল? প্রশ্ন ছিল অনেক টেনিসবোদ্ধার। তবে সব শঙ্কা আর সংশয় উড়িয়ে দিয়ে জাত চ্যাম্পিয়ন সঠিক সময়েই জ্বলে উঠলেন। ফ্রেঞ্চ ওপেনের ঠিক আগেই রোম মাস্টার্স প্রয়োজনীয় আত্মবিশ্বাস জুগিয়ে দিল তার জন্য। আবারও মনে হলো কিং অফ ক্লে। সেইসঙ্গে ১২তম ফরাসি ওপেন খেতাব জেতার দাবিদারও হয়ে গেলেন ৩১ বছর বয়সী নাদাল। রজার ফেদেরার আর রাফায়েল নাদালের টক্করে থাকতে পারে চিরন্তন টেনিস মাদকতা। কিন্তু রাফা বনাম জোকারও লড়াই যে কম কিছু নয় সেটা প্রমাণ হলো আরও একবার। তাছাড়া টেনিসের সর্বকালের সবচেয়ে লম্বা প্রতিদ্বন্দ্বিতাও এই দুজনের মধ্যেই। রোম মাস্টার্সের ফাইনালে নাদাল ও জোকোভিচ খেললেন নিজেদের মধ্যে ৫৪তম ম্যাচ। যেখানে নোভাক জোকোভিচের জয় ২৮ ম্যাচে। অন্যদিকে রাফায়েল নাদালের ২৬। ফরাসী ওপেনেও এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা আবার দেখার প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিল রোম মাস্টার্সের ফাইনাল ম্যাচ। রোমে রাফা-জোকার ম্যাচে সবাই যখন ছিলেন হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের প্রতীক্ষায়, তখন প্রথম সেটটাই ছিল অবাক করার মতো। নাদাল যে ক্লে কোর্টের রাজা, সেটা বুঝিয়ে দিলেন প্রথম সেটেই। এই সময়ে জোকোভিচ যেন ¯্রফে দর্শক। নাদালের ফোরহ্যান্ড ডাউন দ্য লাইন বা টপস্পিনের কোনো জবাব ছিল না জোকোভিচের কাছে। নিজের সার্ভিসই ধরে রাখতে পারলেন না। নাদাল প্রথম সেট জিতে নিলেন ৬-০ গেমে। দ্বিতীয় সেটে আবার জোকোভিচ স্বমহিমায়। ৪-৪ পর্যন্ত লড়াই চলে হাড্ডাহাড্ডি। তারপরই নাদালের সার্ভিস ব্রেক করে ফেললেন সার্বিয়ান তারকা। এর ফলে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর খেলোয়াড় জোকোভিচ দ্বিতীয় সেট জিতে নেন ৬-৪ গেমে। তৃতীয় সেটের শুরুতেই জোকোভিচের সার্ভিস ব্রেক করেন নাদাল। ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেল এই ব্রেকটাই। আর ফেরার সুযোগ পাননি নোভাক জোকোভিচ। এই সেটে নাদাল তিনবার সার্ভিস ভাঙেন। শেষ পর্যন্ত জোকোভিচের বিপক্ষে দারুণ জয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে হারার প্রতিশোধটাও যেন নিয়ে নিলেন নাদাল। এদিকে মহিলা এককে রবিবারই ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় ক্লে কোর্ট ট্রফি জিতলেন ক্যারোলিনা পিসকোভা। রোম ওপেনের ফাইনালে গ্রেট ব্রিটেনের জোহানা কন্টাকে ৬-৩ এবং ৬-৪ গেমে হারান চেক প্রজাতন্ত্রের এই তারকা খেলোয়াড়। এই ট্রফি জয় তাকে ডব্লিউটিএ র‌্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বরে তুলে আনবে। সেইসঙ্গে ফরাসী ওপেনেরও অন্যতম দাবিদার করে দিল পিসকোভাকে। কিছু দিন আগেই কনচিতা মার্টিনেজকে কোচ হিসেবে ঘোষণা করেন পিসকোভা। রবিবার রোমে ফাইনালের সময়ে গ্যালারিতেই ছিলেন কনচিতা। জেতার পর পিসকোভা কোর্টে ডেকে আনেন কনচিতা এবং তার টিমের বাকি খেলোয়াড়ের। পিসকোভা বলেন, আশা করব, ক্লে কোর্টের এই ফর্ম থাকুক ফরাসী ওপেনেও। যে ভাবে খেলেছি, তাতে নিশ্চিত প্যারিসেও আমার সম্ভাবনা আছে। পুরুষ এককের দ্বৈতে পরপর দুই বার চ্যাম্পিয়ন হলেন কলম্বিয়ান জুটি খুয়ান সেবাস্তিয়ান কাবাল ও রবার্ত ফারা। ফাইনালে তারা ৬-১ এবং ৬-৩ গেমে হারান র‌্যাভেন ক্লাসেন ও মাইকেল ভেনাসকে। মেয়েদের ডাবলসে খেতাব জিতলেন অস্ট্রেলিয়ার এ্যাশলি বার্টি ও বেলারুশ সুন্দরী ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা। ফাইনালে তারা গ্রোয়েনফেল্ড-স্কার্স জুটিকে সুপার টাইব্রেকে ৪-৬, ৬-০ এবং ১০-৩ গেমে পরাজয়ের স্বাদ উপহার দেন।
×