ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সফটওয়ারের ভুলে শর্ট সেল

প্রকাশিত: ১১:৫০, ২৭ মার্চ ২০১৯

সফটওয়ারের ভুলে শর্ট সেল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন সফটওয়্যার ফ্লেক্সট্রেডের’ ত্রুটির কারণ সোমবার লেনদেন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। এই ত্রুটির কারণে অনেকগুলো ব্রোকারহাউজে বিধিবহির্ভূত ‘শর্ট সেল’ এর ঘটনা ঘটেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানিয়েছে, দিনের শুরুতেই ডিএসইর সফটওয়্যার সমস্যার মুখে পড়ে। এতে লেনদেনেও সমস্যা শুরু হয়। এর মধ্যে প্রধান সমস্যা ছিল শর্ট সেল। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীর এ্যাকাউন্টে থাকা শেয়ার বিক্রির উপযোগী না থাকা সত্ত্বেও অনেক বিনিয়োগকারীর শেয়ার বিক্রি হয়ে যায়, যা আইনে নিষিদ্ধ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্রোকারেজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, ডিএসইতে সফটওয়ারের জটিলতা নতুন কিছু নয়। কয়েক কোটি টাকা খরচ করে ফ্লেক্সটেডের মতো সফটওয়্যার কিনেও ভোগান্তি কাটছে না ব্রোকারেজ হাউসের। মাঝের মধ্যেই শর্ট সেলের মতো ঘটনা ঘটেছে। এর আগে বসুন্ধরা পেপারের প্রথম লেনদেনের দিনেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এরপর সোমবারও একই ঘটনা ঘটেছে। ডিএসইর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এরপরও কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি সমস্যা সমাধানে। উল্লেখ, বর্তমান নিয়ম অনুসারে শেয়ার কিনলেই যে কোন সময় তা বিক্রি করা যায় না। এই শেয়ার বিক্রির উপযোগী হতে সময় লাগে। বর্তমানে এ, বি ও এন ক্যাটাগরির শেয়ার কেনার পর তা বিক্রির উপযোগী হতে দুদিন (টি+২) সময় লাগে। অর্থাৎ শেয়ার কেনার পর তৃতীয় দিনে তা বিক্রি করা যায়। কোন কারণে এর আগে কোন শেয়ার বিক্রি করা হয়ে গেলেও ওই লেনদেনটি চূড়ান্তভাবে নিষ্পন্ন হয় না। তখন ডিএসইর অনুমতি নিয়ে তার মাধ্যমে বিশেষভাবে তা নিষ্পন্ন করতে হয়। বর্তমান শর্ট সেল আইনগতভাবে নিষিদ্ধ। কোন ব্রোকারহাউজে ইচ্ছাকৃত বা ভুল করে কোন শর্ট সেলের ঘটনা ঘটলে ওই ব্রোকারহাউজকে তার দায় নিতে হয়। এমনকি ‘ডিএসই এ্যাপ’ এর মাধ্যমে সরাসরি লেনদেনে অংশ নিয়ে শর্ট সেল করে ফেললে তার দায়ভারও ব্রোকারের ঘাড়ে চাপে। ডিএসইতে সফটওয়্যারের সমস্যা সঙ্গী করেই লেনদেন শুরু হয়। লেনদেন শুরু আধা ঘণ্টা পড়ে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। সঙ্গে সঙ্গে সব ব্রোকার হাউজে জরুরী ইমেল পাঠিয়ে বিষয়টি তাদের নজরে আনা হয়। এতে বলা হয়, সফটওয়্যারের সমস্যার কারণে কোন কোন ব্রোকার হাউজে শর্ট সেলের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এমনটি হয়ে থাকলে যেন ডিএসইর সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ব্রোকার হাউজগুলো ডিএসইতে যোগাযোগ করলে বিষয়টির সমাধানে তাদেরকে করণীয় বলে দেয়া হয়। যোগাযোগ করা হলে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম মাজেদুর রহমান কাছে সফটওয়্যারের ত্রুটির বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, সর্বোচ্চ সতর্কতার পরও যান্ত্রিক ত্রুটি হতেই পারে। তারপরও ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের সমস্যা এড়ানো যায়, সে লক্ষ্যে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছি আমরা। তিনি দাবি করেন, সফটওয়্যারে সমস্যা হলেও লেনদেনে বড় কোন সমস্যা হয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্রোকার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেক টাকা দিয়ে ডিএসই ওই সফটওয়্যার কিনেছে। আমাদেরকে বলা হয়েছিল এটি বিশ্বের সেরা সফটওয়্যার। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে এই সফটওয়্যারের কারণে তাদেরকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
×