ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অত্যাশ্চর্য ১৫ স্থান

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ১ মার্চ ২০১৯

অত্যাশ্চর্য ১৫ স্থান

পাহাড়, পর্বত, উপত্যকা, বনজঙ্গল, তৃণভূমি, মরুভূমি- পৃথিবীর এ ধরনের নানা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করার মতো। কিন্তু আপনার কেমন লাগবে যখন আপনি কিছু আশ্চর্যজনক এবং চমৎকার স্থান দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন? অথচ দুঃখজনক হলেও এটা আপনাকে মেনে নিতে হবে। কারণ পৃথিবীর এমন অনেক অত্যাশ্চর্য স্থান রয়েছে, যেখানে সর্ব সাধারণের যাওয়ার কোন অনুমতি নেই। এমন ১৫টি অত্যাশ্চর্য স্থান নিয়ে লিখেছেন- নাবিহা আক্তার রাদিতা নর্থ সেন্টিনেল আইল্যান্ড, আন্দামান এই দ্বীপটিতে বাইরের যারা প্রবেশ করে তাদের এখানকার অধিবাসীরা নির্মমভাবে মেরে ফেলে। যেহেতু এখানকার উপজাতিরা ঘনজঙ্গলে বসবাস করে তাই তারা বাইরের জগত সম্পর্কে অসচেতন। দ্বীপটিতে আধুনিকতার ছোঁয়া পরেনি। এই দ্বীপটির বাসিন্দারা আধুনিক যুগের মানুষের সঙ্গে কোন যোগাযোগ করতে চায় না। উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপটি তাই ভারত তথা বহির্বিশ্বের কাছে আজও রহস্যই হয়ে আছে। আধুনিক সভ্যতার লোকজন এখনও দ্বীপটির মানুষের ভাষা, ধর্মানুষ্ঠান এবং তাদের বসত বাড়ির রহস্য খুব কমই জানতে পেরেছেন। আধুনিককালে অত্যাধুনিক সব ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও ওই দ্বীপের মানুষের স্পষ্ট কোন ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। কিছু ছবি তোলা হলেও তা স্পষ্ট নয়। হেয়ার্ড আইল্যান্ড ভলক্যানো, অস্ট্রেলিয়া এই দ্বীপটিতে ২০০০ সালে ২৭৪৫ ফুট উঁচু জটিল আগ্নেয়গিরির সৃষ্টি হয়েছিল। মাদাগাস্কার এবং এ্যান্টার্কটিকার মধ্যে অবস্থিত এই দ্বীপটিতে ২ কিলোমিটার লম্বা লাভা প্রবাহিত হয়ে আসছে ২০০০ সাল থেকে। ৩৬৮ বর্গ মাইলের এই দ্বীপটি পাহাড়ে ভরপুর। এছাড়াও রয়েছে ৪১টি হিমবাহ। পেঙ্গুইন, সিল এবং সামুদ্রিক পাখির আবাসস্থল এই প্রাকৃতিক বিস্ময়কর দ্বীপ। স্নেক আইল্যান্ড, ব্রাজিল ব্রাজিলের ইলহা দ্য কুয়েইমাদা গ্রানডি নামক দ্বীপটি সম্পর্কে জানলে শুধু আপনি কেন, বিশ্বের কোন পর্যটকই সেখানে যেতে সাহস করবে না। তাছাড়া দ্বীপটিতে সর্ব সাধারণের প্রবেশে সরকারী নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। এর কারণ হচ্ছে, এটি স্নেক আইল্যান্ড অর্থাৎ সাপের দ্বীপ হিসেবে পরিচিত। ব্রাজিলের সাও পাওলো থেকে প্রায় ৯০ মাইল দূরে অবস্থিত এই দ্বীপ। পুরো দ্বীপজুড়ে কেবল সাপের বিচরণ। এখানে শুধু যে প্রায় হাজার চারেকের বিষধর সাপের বাস তাই নয়, পৃথিবীর সবচেয়ে বিষধর সাপ গোল্ডেন ল্যান্সহেডের বাস একমাত্র এই দ্বীপটিতেই। গোল্ডেন ল্যান্সহেডের বিষ এতটাই শক্তিশালী যে, এই বিষ মানুষের শরীরে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর তা শরীরের মাংস পর্যন্ত গলিয়ে দিতে পারে। লাসকাউক্স কেভস, ফ্রান্স বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ এই গুহাটির শিল্পকর্মের যেন ক্ষতি না হয় তাই ফ্রান্স সরকার জনসাধারণের এখানে প্রবেশাধিকার বন্ধ রেখেছে। কয়েকজন বিজ্ঞানী মাসের কেবলমাত্র কয়েকদিন এই গুহায় প্রবেশের অনুমতি পায়। নর্থওয়েস্টান ফ্রান্সে অবস্থিত এই গুহাটি ১৭ হাজার বছর আগেকার বলে ধারণা করা হয় এবং গুহার দেয়ালে আঁকা রয়েছে ৬০০ চিত্রকর্ম, যা ১৭ হাজার বছর আগেকার আদিম মানুষদের আঁকা। যার মধ্যে তখনকার সময়ের বড় প্রাণীদের ছবি অঙ্কিত রয়েছে দেয়ালে, যেগুলো জীবাশ্ম গবেষণার অন্তর্ভুক্ত। ইউনেস্কো কর্তৃক ‘বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থান’ এর তকমা পেয়েছে এই গুহা। পোভেগলিয়া, ইতালি ইতালির ভেনিস ও লিডো শহরের মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থিত এই ছোট্ট এই দ্বীপটি বিশ্বের সবচেয়ে ভুতুরে স্থান হিসেবে পরিচিত। যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের আত্মা, প্লেগ রোগে মৃতদের আত্মা এবং খুনী ডাক্তারের আত্মা এই দ্বীপটিতে রয়েছে বলে মনে করা হয়। রোমান যুগে এই দ্বীপটি ব্যবহার করা হতো প্লেগে আক্রান্ত রোগীদের রাখতে ও তাদের পুড়িয়ে মেরে ফেলতে। ১৯২২ সালে এখানে একটি মানসিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয় কিন্তু হাসপাতালটি ১৯৬৮ সালে বন্ধ করে দিতে হয়। কেননা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ে। রোগীরা প্রায়ই মৃতদের দেখতে পেত বলে দাবি করতো। ইতালির সরকার এই দ্বীপটিকে ২০১৪ সালে ৯৯ বছরের জন্য লিজে দেয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু কেউ এই সুযোগ গ্রহণ করার জন্য আগ্রহ দেখায়নি। ভ্যাটিকান সিক্রেট আর্কাইভ বিশ্বের সবচেয়ে ব্যক্তিগত পাঠাগার হিসেবে অভিহিত করা হয় ভ্যাটিকানের সিক্রেট আর্কাইভকে। অষ্টম শতাব্দী থেকে এ পর্যন্ত পোপদের ব্যক্তিগত নথিপত্র সংরক্ষিত রয়েছে এই পাঠাগারে। অনেক গোপন ডকুমেন্টও এখানে সংরক্ষিত আছে। সাধারণ মানুষের এই গ্রন্থাগারে প্রবেশের অধিকার নেই। খুব কমসংখ্যক স্কলার বা পণ্ডিতেরই এখানে ঢোকার সৌভাগ্য হয় বা হয়েছে। তাও পোপের অনুমতি ছাড়া সেটি একেবারেই অসম্ভব। আর অনুমতি পাওয়ার প্রক্রিয়াও অত্যন্ত জটিল। পাঠাগারের ভেতরে প্রায় ৫৪ কিলোমিটার বইয়ের দীর্ঘ তাক রয়েছে। সেখানে রাখা আছে ৩৫ হাজার ভলিউম নথি। এটিকে পোপের ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আইস গ্র্যান্ড শ্রাইন, জাপান জাপানের রাজবংশের দেশের উচ্চপদস্থ যাজক-যাজিকা ছাড়া অন্য সকলের প্রবেশাধিকার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ এই শ্রাইনে (মঠে)। এই মঠটি ৩য় শতকে সর্বপ্রথম তৈরি করা হয়। প্রতি ২০ বছর পর পর এটি ভেঙে আবার পুনর্নির্মাণ করা হয়। এই মঠে রয়েছে দুইটি প্রধান মঠ আর তার চারপাশে রয়েছে আরও ছোট বড় ১২৫ মঠ। কঠোর গোপনীয়তায় এখানে যা রয়েছে, যা বিশ্বের সামনে কখনই আসেনি। এরিয়া ৫১, নেভাডা, যুক্তরাষ্ট্র এটি মানুষের সৃষ্টি পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় স্থান। যা নিয়ে বিশ্বের কৌতূহলেরও শেষ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এরিয়া ৫১ একটি সামরিক ঘাঁটি। যার আয়তন ২৬,০০০ বর্গকিলোমিটার। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে এবং লাস ভেগাস থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম রেকেল গ্রামের কাছে অবস্থিত। খুবই গোপনীয় এই সামরিক ঘাঁটি গ্রুম হ্রদের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত। এরিয়া ৫১ এতটাই গোপনীয় যে, ২০১৩ সালের আগ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর অস্তিত্ব কখনোই স্বীকার করেনি। কিন শি হুয়াংয়ের সমাধি, চীন চীনের প্রথম স¤্রাট কিন শি হুয়াংয়ের রহস্যময় সমাধিস্থান চীন সরকার জনসাধারণেরর জন্য বন্ধ রেখেছেন। ২১০ খ্রিস্টপূর্বে মৃত্যুবরণকারী কিন শি হুয়াংয়ের সমাধি মধ্য চীনের একটি পাহাড়ের নিচে অবস্থিত। পাহাড়ের গভীরে বিষাক্ত পারদের পরিখাঘেরা এক সমাধি। এবং এটি টেরাকোটা ভাস্কর্য দ্বারা পরিবেষ্টিত। মেট্রো-২, রাশিয়া ধারণা করা হয়, রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে একটা গোপন ভুগর্ভস্থ মেট্রো সিস্টেম আছে, যা মেট্রো-২ নামে পরিচিত। সাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত মস্কো মেট্রোর পাশাপাশি গোপনে এটি পরিচালনা করা হয়। মনে করা হয় এটা স্টালিন এর সময়ে তৈরি করা হয়েছিল, কেজিবির প্রজেক্ট ছিল এটা যার কোডনেম ডি-৬। গুজব রয়েছে মেট্রো-২ পাবলিক মেট্রো থেকে দৈর্ঘ্যে অনেক বড় এবং চলাচল করে মাটির ৫০ এবং ২০০ মিটার নিচ দিয়ে। ধারণা করা হয় এতে ৪টি লাইন রয়েছে, যা ক্রেমলিনের সঙ্গে এফএসবির (আগে ছিল কেজিবি) প্রধান কার্যালয়ের সংযোগ স্থাপন করেছে। যেহেতু এর অস্তিত্ব সম্পর্কে কেউ এখনও সঠিক খবর দিতে পারে না আর তাই সেখানে যাওয়ার আশাও করা যায় না। সার্টসি, আইসল্যান্ড ১৯৬৩ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত আগ্নেয়গিরির বড় অগ্ন্যুৎপাতের কারণে এই স্থানটি সর্বসাধারণের বন্ধ রয়েছে। আইসল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত এই দ্বীপটিতে শুধু বিজ্ঞানীদের যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। নিকোবার দ্বীপপুঞ্জ এসব দ্বীপে উদ্ভিদ ও সামুদ্রিক প্রাণীর এমন সব প্রজাতি রয়েছে, যারা বাইরের হস্তক্ষেপ থেকে নিজেদের আলাদা করে রেখেছে। ইউনেস্কো এই দ্বীপপুঞ্জকে বিশ্ব নেটওয়ার্কের জীবমন্ডল ভাণ্ডারের একটি অংশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। যদিও শুধুমাত্র গবেষণাকারী এবং বিজ্ঞানীরাই এখানে প্রবেশের অনুমতি পায়। মোগাদিসু সৈকত, সোমালিয়া আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতিতে রয়েছে এই স্থান। সন্ত্রাসবাদের শিকার হওয়া কিংবা অপহরণের মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে, বিশেষ করে পশ্চিমাদের ক্ষেত্রে। এই সৈকতটি সোমালিয়ার পশ্চিম উপকূলে প্রসারিত লাভ করেছে, সঙ্গে ভারত মহাসাগর থাকায় এটি অবিশ্বাস্য সুন্দর এলাকা। এর সৈকতে রয়েছে সোনালি বালি। বোভেট দ্বীপ, নরওয়ে কঠোর ভূখ- এবং আবহাওয়ার কারণে সকলের কাছে এটি জনমানবশূন্য দ্বীপ হিসেবে পরিচিত। এই দ্বীপের ৯৩ শতাংশ বরফে ঢাকা। বোভেট দ্বীপে বেঁচে থাকা খুবই কঠিন ব্যাপার। দ্বীপটি দক্ষিণ আটলান্টিকের মাঝখানে অবস্থিত। এ যাবতকালে সন্ধান পাওয়া দ্বীপের মধ্যে সবচেয়ে দুর্গম বলে অভিহিত করা হয় দ্বীপটিকে। হোয়াইট জেন্টলম্যানস ক্লাব, লন্ডন এই ক্লাবের সদস্য হতে হলে রাজকীয় পরিবারের সদস্য, প্রতিপত্তিশীল ও ধনসম্পদের অধিকারী এবং পুরুষ হতে হয়। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে অভিজাত ক্লাব এবং টাকা থাকলেও সহজে সদস্য হওয়ার সুযোগ নেই। ক্লাবের বর্তমান সদস্যের মধ্যে রয়েছে প্রিন্স উইলিয়াম, তার বাবা প্রিন্স চার্লস এবং প্রাক্তন সদস্যের মধ্যে রয়েছে ডেভিড ক্যামেরন।
×