ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

একাদশ সংসদের যাত্রা শুরু

প্রকাশিত: ১০:৫২, ৩১ জানুয়ারি ২০১৯

একাদশ সংসদের যাত্রা শুরু

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সংসদীয় গণতন্ত্রের পথে ফের আনুষ্ঠানিক যাত্রা করল বাংলাদেশ। সরকার ও বিরোধী দলের সরব উপস্থিতির মধ্য দিয়ে বুধবার শুরু হলো একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে শুরু হওয়া সংসদের প্রথম অধিবেশন ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। ’৭৩ পরবর্তী দেশের ইতিহাসে বৃহত্তম সরকারী দলের পাশাপাশি ক্ষুদ্রতম বিরোধী দল নিয়ে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। জয়-পরাজয়ের ব্যবধানে দেশের ইতিহাসে রেকর্ড সৃষ্টিকারী একাদশ জাতীয় সংসদের সূচনাতেই স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার পদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া। আর সংসদে প্রধান হুইপ পদে নিয়োগ পেয়েছেন নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন। অধিবেশনের শুরুতেই সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় সংসদের ষোলোতম স্পীকার হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। স্পীকার পদে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সমর্থন করেন নতুন চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন। স্পীকারের আসনে থাকা ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া প্রস্তাবটি ভোটে দিলে সরকার ও বিরোধী দলের কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতিক্রমে তৃতীয়বারের মতো স্পীকার নির্বাচিত হন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। স্পীকার নির্বাচনের পর সংসদের অধিবেশন ২০ মিনিটের জন্য মুলতবী করা হয়। মুলতবীর সময়ে সংসদ ভবনের সপ্তম তলায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পুনর্নির্বাচিত স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। এ সময় চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। শপথ গ্রহণ শেষে ফের অধিবেশন শুরু হলে স্পীকারের আসনে বসেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বিকেল তিনটায় ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে পর্দা উঠে একাদশ জাতীয় সংসদের। অধিবেশন শুরুর আগে বেলা বারোটার পর থেকেই পুরো সংসদ ভবন নবীন-প্রবীণ সংসদ সদস্যের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম তিন শ’ আসনের মধ্যে ২৫৮ আসনেই বিজয়ী হয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। প্রবীণের চেয়ে নবীন সংসদ সদস্যের আধিক্য ছিল চোখে পড়ার মতো। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের ভূমিধস বিজয়ের রেশ চোখে পড়ে সংসদ অধিবেশনেও। পুরো সংসদে ঐতিহ্যবাহী মুজিবকোট পরা এমপিদের আধিক্যে বিরোধী দলকে খুঁজে পাওয়াই দায় হয়ে পড়ে। উদ্বোধনী অধিবেশন দেখতে প্রতিটি গ্যালারিই ছিল দর্শনার্থীতে কানায় কানায় পূর্ণ। সংসদ অধিবেশনে ঢোকার আগেই দুপুর দুটায় সংসদের নবম তলার সরকারী দলের কমিটি কক্ষে আওয়ামী লীগ এবং অন্যপাশে বিরোধী দলের সভাকক্ষে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা সভায় বসে নিজ নিজ দলের কর্মকৌশল চূড়ান্ত করে। আওয়ামী লীগের সভায় সর্বসম্মতক্রমে স্পীকার পদে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পীকার হিসেবে এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়াকে মনোনয়ন দেয়া হয়। আর প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি সংসদের প্রধান হুইপ হিসেবে নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন এবং ৬ জন যথাক্রমে আতিউর রহমান আতিক, ইকবালুর রহীম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, পঞ্চানন বিশ্বাস, সামশুল হক চৌধুরী ও মাহবুব আরা গিনিকে নিয়োগ দেন। ছয় হুইপের মধ্যে তিনজনই নতুন মুখ। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন সংসদ সদস্যদের সংবিধান ও কার্যপ্রণালী বিধিসহ সংসদীয় কার্যক্রম শিখতে বেশি করে লাইব্রেরীতে যাওয়ার নির্দেশ দেন। আধঘণ্টা বিরতির পর বিকেল তিনটা ৫৪ মিনিটে নয়া স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমেই তিনি ডেপুটি স্পীকার পদে নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করেন। ওই পদে একটিমাত্র মনোনয়ন জমা পড়ে। দ্বিতীয়বারের মতো ডেপুটি স্পীকার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া। তার পক্ষে প্রস্তাব করেন হুইপ আতিউর রহমান আতিক, সমর্থন করেন অপর হুইপ ইকবালুর রহীম। এরপর স্পীকার প্রস্তাবটি ভোটে দিয়ে কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতক্রমে ডেপুটি স্পীকার নির্বাচিত হন ফজলে রাব্বি মিয়া। নির্বাচিত হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। স্পীকার তার স্বাগত বক্তব্যে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হওয়ায় আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করে সংসদীয় গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার বাস্তবায়নে সংসদীয় গণতন্ত্রকে বিকশিত করে। আইন প্রণয়নের পাশাপাশি জনগণের জীবন মানোন্নয়নের সার্বিক কল্যাণ সাধনের প্রত্যাশা পূরণে গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় একাদশ জাতীয় সংসদ কার্যকরে ভূমিকা রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। এ সময় তিনি বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে সংবিধান ও সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি গণতন্ত্রকে সুসংহত করে। দুনিয়ার সব পার্লামেন্টারি কনভেনশনে যেসব নীতিমালা আছে, সেগুলো আমরা মেনে চলতে চাই। সঙ্গে সঙ্গে এমন একটি পার্লামেন্টারি প্রসিডিউর ফলো করতে পারি যাতে দুনিয়া আমাদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে । স্পীকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সমগ্র বিশ্বে উন্নয়নের বিস্ময়। এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ আমাদের ওপর আস্থা ও গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছে- তা যথাযথভাবে পালন করাই হোক আমাদের আজকের প্রত্যয়। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রার মধ্য দিয়ে উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদ কার্যকর ভূমিকা রাখবে এই হোক আমাদের সকলের সম্মিলিত কাজ। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলি। এর পর পুনর্নির্বাচিত স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও বিরোধী দলের উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তারা সবাইকে স্পীকারকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি গঠনমূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে সংসদীয় গণতন্ত্রের ভিতকে আরও মজবুত করার অঙ্গীকার করেন। সংসদে জাতীয় পার্টি সত্যিকারের বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে বলে জানান বিরোধী দলের উপনেতা জিএম কাদের। স্বাগত বক্তব্য শেষে সদ্য প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে দেশে-বিদেশে মৃত্যুবরণকারী বিশিষ্ট ব্যক্তি ও রাজনীতিকের জন্য শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্পীকার। শোক প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য শেষে মৃত্যুবরণকারীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের বজলুল হক হারুন। শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করেন সংসদ নেতা শেখ হাসিনা, জ্যেষ্ঠ নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ নাসিম ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গ্রহণ শেষে সভাপতিম-লীর সদস্য ঘোষণা করা হয়। স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকারের অনুপস্থিতিতে সংসদ পরিচালনাকারী সভাপতিম-লীর সদস্যরা হলেন- আবুল কালাম আজাদ, শামসুল হক টুকু, এবি তাজুল ইসলাম, ফখরুল ইমাম এবং সাগুফতা ইয়াসমীন এমিলি। এরপর আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম রাষ্ট্রপতির জারি করা ৫টি অধ্যাদেশ সংসদে উত্থাপন করেন। অধ্যাদেশগুলো হলো ‘রিপ্রেজেনটেশন অব দি পিপল (এ্যামেন্ডমেন্ট) অর্ডিন্যান্স-২০১৮’, ‘ইট প্রস্তুত ও ভাঁটি স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০১৮’, ‘চিটাগাং হিল ট্রাক্টস (ল্যান্ড ইকুইজেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০১৮’, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ্যাভিয়েশন এ্যান্ড এ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ-২০১৮’ এবং ইপিজেড শ্রম অধ্যাদেশ-২০১৯। সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুতে রেওয়াজ অনুযায়ী ৩৫ মিনিটের বিরতি শেষে সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় স্পীকারের সভাপতিত্বে ফের শুরু হয় সংসদ অধিবেশন। বিউগল বাজানোর মধ্য দিয়ে সোয়া ছয়টায় রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করলে সবাই দাঁড়িয়ে তাকে সম্মান জানান। রাষ্ট্রপতি প্রবেশের সময় যন্ত্রের মাধ্যমে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। স্পীকারের পাশের আসনে বসে নতুন বছরের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দেন তিনি। এর পর জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন শেষে সন্ধ্যা সাতটা ২৪ মিনিটে রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্য শেষ করেন। এর পর রাষ্ট্রপতি সংসদ অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করলে স্পীকার সংসদের অধিবেশন আগামী রবিবার বিকল সাড়ে চারটা পর্যন্ত মুলতবী করেন। যাদের নামে শোক প্রস্তাব গৃহীত ॥ সৈয়দ আশরাফ ছাড়াও যাদের নামে শোক প্রস্তাব নেয়া হয় তারা হলেন- সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আবদুল বাতেন, নুরুল আলম চৌধুরী, তরিকুল ইসলাম, ড. ফজলে রাব্বী চৌধুরী, মাওলানা নুরুল ইসলাম, আশরাফুন নেছা মোশাররফ ও বোরহান উদ্দিন খান, কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা, গীতিকার ও চিত্রনাট্যকার, অভিনয়শিল্পী এবং লেখক আমজাদ হোসেন, বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী, সুরকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, উপমহাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃণাল সেন, নারী মুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতীক তারামন বিবি, জাতীয় প্রতীকের নক্সাকার মোহাম্মদ ইদ্রিস, প্রখ্যাত সাংবাদিক শাহরিয়ার শহীদ, ভাষাসৈনিক সৈয়দ আব্দুল হান্নান, একাত্তরের বীরযোদ্ধা ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার কুলদীপ সিং চাঁদপুরী, চলচ্চিত্র নির্মাতা সাইদুল আনাম টুটুল এবং প্রখ্যাত চিত্রগ্রাহক আলোকচিত্রী আনোয়ার হোসেন ও সাবেক স্পীকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর স্ত্রী মেহজাবিন চৌধুরী। উল্লেখিত ব্যক্তিদের জীবনবৃত্তান্ত সংবলিত শোক প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন ও সংসদ সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সবাই একদিকে ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশন কক্ষে সদস্যদের আসন বিন্যাসে বড় ধরনের পরিবর্তন আসেনি; তবে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীরা সবাই একদিকে বসেছেন। আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা যারা এবার মন্ত্রী হননি, তারা আগের মতো সামনের সারিতেই বসেছেন। সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদকে গত সংসদের মতোই প্রধানমন্ত্রীর ডান দিকের আসন দেয়া হয়েছে। আর মন্ত্রীর, প্রধানমন্ত্রীর পেছনের সারিতে, তাঁর পেছনে বসেছেন প্রতিমন্ত্রীরা। দশম সংসদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আগে স্পীকারের সামনের দিকে বসলেও এবার তার আসন পরিবর্তন হয়েছে। তাকে প্রধানমন্ত্রীর ডান দিকে আনা হচ্ছে। প্রথম সারিতে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের আসনে এবার বসেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। আগের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের আসনে বসেছেন নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রধানমন্ত্রীর ঠিক পেছনের আসনে বসেছেন নতুন চীফ হুইপ। তার পাশে বসেছেন আইনমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী। মোহাম্মদ নাসিমসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা সামনের আসনেই বসেছেন। আওয়ামী লীগের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদের হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পার্টি জেপি প্রধান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু গতবারের মতো আগের আসনেই বসেছেন। তারা তিনজনই স্পীকারের বাঁ দিকে বিরোধী দলের আসনের পাশে প্রথম সারিতে বসেছেন। তবে এবার বয়সে তরুণ এবং প্রথমবার নির্বাচিত এমপিদের সবার উপরে আসন দেয়া হয়েছে। প্রথমবার নির্বাচিতদের মধ্যে যারা বয়সে প্রবীণ, তাদের নিচের দিকে আসন দেয়া হয়েছে। গত ৩ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। এই সংসদে আওয়ামী লীগ ২৫৮, জাতীয় পার্টি ২২, ওয়ার্কার্স পার্টি তিন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) দুটি, বিকল্পধারার দুটি, তরিকত ফেডারেশনের একটি, জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) একটি এবং স্বতন্ত্র সদস্যরা তিনটি আসন পেয়েছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৮ সদস্য এখনও শপথ নেননি। ফলে বুধবার উদ্বোধনী দিনে অনুপস্থিত ছিলেন বিএনপিসহ যুক্তফ্রন্টের ৬ সংসদ সদস্য।
×