ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

একে অভাবনীয় সাফল্য বললেন মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কয়েক বছরে প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তি বেশি

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২৪ জানুয়ারি ২০১৯

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কয়েক বছরে প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তি বেশি

ফিরোজ মান্না ॥ তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাতে গত কয়েক বছরে প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তি বেশি ঘটেছে। সরকারের সাহসী সিদ্ধান্তে দেশের আজকের এ উত্তরণ। মহাকাশ জয় হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের অধিকারী বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করেছে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে শহর ও গ্রামের বৈষম্য দূর হবে। বেড়েছে ইন্টারনেট মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা। সবচেয়ে বড় অর্জন হয়েছে দেশে ব্যান্ডউইথ ব্যবহারে। গত ১২ বছরে যত ব্যবহার হতো- ফোরজি চালু হওয়ার পর তিন গুণ বেড়ে গেছে। এ থেকেই প্রমাণিত হয় দেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে কত দূর এগিয়েছে। এ বছর তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে দেড় বিলিয়ন ডলার আয় অর্জিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের এই সাফল্য বিশ্বজুড়ে আলোচনা হচ্ছে। বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ’২১ সালের আগেই ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে। ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এ তথ্য জানিয়েছেন। তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ অর্জন করেছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার, যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক চালু, দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত, ডাক টাকার প্রচলন, সফটওয়্যার ও সেবা খাতে রফতানি ক্ষেত্রে হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ফোরজি ও মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) চালু, দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণ, ব্যান্ডউইথের ব্যবহার ১ টেরার বেশি, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯ কোটি ১১ লাখ ৯৪ হাজারে উত্তীর্ণ হয়েছে, মোবাইল সংযোগ ১৫ কোটি ৫৮ লাখ ১০ হাজার। এসবই তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাতে অভাবনীয় উন্নতির স্বাক্ষর। শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরকারের ৪০ ধরনের সেবা নিতে পারছেন। চালু হয়েছেÑ ই-কৃষি, ই-হেল্থসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অনেক সেবা মানুষ ঘরে বসেই এখন এসব সেবা পাচ্ছেন। বিচার বিভাগে ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্পের অগ্রগতি ঘটেছে, বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ডাটা সেন্টার নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, এ্যাপস ও গেমিং ডেভেলপমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি প্রকল্পের কাজ চলছে। মহেশখালীকে ডিজিটাল দ্বীপে রূপান্তর করা হয়েছে। সারাদেশে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব তৈরি, ই-কমার্স নীতিমালা ও ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট বাস্তবায়ন করা হয়েছে বিদায়ী বছরেই। ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশে ডিজিটাল আইন জরুরী ছিল। সাইবার ক্রাইম মাত্রা ছাড়িয়েছিল, যে হারে সাইবার জগতকে অপপ্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল তাতে দেশ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো। আমরা সাইবার জগতকে নিরাপদ রেখে জনগণের কাছে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দিতে চাই। দেশের মানুষের কাছে ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়া আমাদের অঙ্গীকার। দেশের প্রতিটি মানুষের হাতে ইন্টারনেট সুবিধা থাকলে দেশের উন্নয়ন কেউ রোধ করতে পারবে না। উন্নত দেশের কাতারে দেশ এখনই অবস্থান করছে। ভিশন ২০২১ সালের আগেই আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষমতা অর্জন করব। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে সাইবার জগতকে নিরাপদ রাখতে হবে। প্রতিটি মানুষকেও নিরাপদে রাখতে হবে। এ জন্য ডিজিটাল আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। যার যা খুশি তাই সামাজিক যোগাযোগাগের মাধ্যমে পোস্ট করা যাবে না। এতে সমাজের শান্তি বিনষ্ট হতে পরে। এই চিন্তা মাথায় রেখেই আইনটি প্রণয়ন করা হয়। প্রথম দিকে আইনটি নিয়ে দেশের বেশ কিছু লোক আমাকে গালমন্দ করেছে। পরে আইনটির প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরে এখন তারাই আইনটির সুবিধা ভোগ করছেন। পৃথিবীর অন্য দেশকেও এখন আমাদের অনুসরণ করতে হচ্ছে। এ আইন কপি করা ছাড়া তাদের বিকল্প রাস্তা নেই। তথ্যপ্রযুক্তি জগতকে এখন আর কেউ অপরাধের কাজে ব্যবহার করতে পারছে না। দেশের যুব সমাজ এখন জ্ঞানভিত্তিক কাজে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। তারা তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ হচ্ছে। এভাবে এগিয়ে যেতে পারলে আমরা অল্পদিনের মধ্যেই উন্নত দেশের সারিতে দাঁড়াব।
×