স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ॥ ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নৌকার অবিস্মরনীয় বিজয় হবে মন্তব্য করে আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, কাজিপুরের মাটি আওয়ামীলীগের ঘাঁটি, এই কাজিপুরে নৌকা কোনদিনও পরাজিত হয়নি। বঙ্গবন্ধুর টুঙ্গিপাড়ার পরেই শহীদ এম মনসুর আলীর কাজিপুর যুগ যুগ ধরে নৌকার বিজয় হয়েছে।
তিনি বুধবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দুরে কাজিপুরে এক নির্বাচনী জনসভায় এ কথা বলেছেন। এর আগে তিনি চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়নের বড়শিভাঙ্গা গ্রামে মরহুম তাঁতী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে যান,তার কবর জিয়ারত করেন এবং তাঁতী সম্প্রদায়ের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় উপস্থিত সকলেই ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেয়ার শ্রতিশ্রুতি দেন। জনসভায় শুভগাছা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রিপন তালুকদারের নেতৃত্বে বিএনপি থেকে প্রায় দুই শ’ নেতাকর্মী শেখ হাসিনার প্রতি অবিচল আস্থা রেখে মোহাম্মদ নাসিমের হাত ধরে আওয়ামীলীগের যোগদান করেন।
উপজেলা পরিষদ চত্তরে আয়োজিত নির্বাচনী সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শওকত হোসেন। বক্তব্য দেন মোহাম্মদ নাসিমের সহধর্মিণী বেগম লায়লা নাসিম, সাবেক এমপি প্রকৌশলী তানভীন শাকিল জয়, নাসিমপুত্র তন্ময় মনসুর, আওয়ামীলীগ জাতীয় কমিটির সদস্য আডভোকেট কেএম হোসেন আলী হাসান, জেলা আাওয়ামীলীগের সহসভাপতি আবু ইউসুফ সূর্য্য, কাজিপুর উপজেলা চেয়াম্যান মোজাম্মেল হক বকুল,উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন, স্বাচিপ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইকবাল আর্সালান, যুগ্ম সম্পাদক ডাঃ উত্তম কুমার বড়–য়া, যুবলীগের আলী আসলাম, ছাত্রলীগের রাজু আহমেদ প্রমুখ।
কাজীপুরে আওয়ামীলীগের হেভিওয়েট প্রার্থী মোহাম্মদ নাসিমের নির্বাচনী জনসভাকে কেন্দ্র করে কাজীপুরের মানুষ জেগে উঠেছিল। আওয়ামীলীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার আকৃতিতে নির্মাণ করা হয়েছিল জনসভার বিশাল মঞ্চ। জনসভার চারদিকে কাজীপুরের নানা মাত্রিক উন্নয়নের ছাপচিত্র শোভা পাচ্ছিল। কাজীপুর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড ,কাজীপুর উপজেলার ১২ ইউনিয়ন এবং সিরাজগঞ্জ সদরের ৫ ইউনিয়ন থেকে দলের নেতাকর্মীরা গ্রাম গ্রামান্তর থেকে এমনকি দুর্গম চরাঞ্চল থেকে নৌকায় চড়ে দলের নেতাকর্মীসহ সাধারন মানুষ বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে মুর্হুমুহু শ্লোগানে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে দুপুর ৩ টার মধ্যে জনসভাস্থল এসে পৌছায়। উপজেলা পরিষদ চত্তরের বিশাল মাঠ কানায় কানায় ভরে ওঠে। অনেক ইউনিযন থেকে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা গরুগাড়িতে তুলে তা রঙবেরঙের কাগজে সাজিয়ে জনসভাস্থলে নিয়ে আসা হয়। পাকা সড়ক পথে নৌকায় মাঝি ও বাইসাল বৈঠা চালিয়ে নির্বাচনে নৌকার বিজয়ের আগাম সংকেত জানান দেয়।
বিজয়ের মাস ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আওয়ামীলীগকে ভোট দেবার আহবান জানিয়ে তিনি আরো বলেছেন-বাংলার মানুষ বিশ্বাস করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ছাড়া উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। গত ১০ বছরে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশকে অন্ধকারের চোরাগলি থেকে উন্নয়নের আলোয় আলোকিত করেছেন। দেশের মানুষ শান্তিতে আছে,স্বস্তিতে আছে।
তাঁর বক্তৃতায় এক পর্যায়ে তিনি নিজেই শ্লোগান তোলেন- মার্কা আছে, কোন সে মার্কা, নৌকা মার্কা, বঙ্গবন্ধুর মার্কা, নৌকা মার্কা, শেখ হাসিনার মার্কা নৌকা মার্কা মোহাম্মদ নাসিমের মার্কা নৌকা মার্কা। ৩০ ডিসেম্বর প্রত্যেক ভোটারকে ভোট কেন্দ্রে যাবার আহবান জানিয়ে নাসিম আরো বলেন-ভোট কেন্দ্র থাকবে নির্বাচন কমিশনের তত্বাবধানে। জনগণ থাকবে পাহারায়। কোন ভয়ভীতি দেখিয়ে সাধারণ ভোটারকে দমিয়ে রাখা যাবে না।
জনসভায় বিএনপি.র সমালোচনা করে ড. কামাল প্রসঙ্গ টেনে মোহাম্মদ নাসিম বলেন- বিগত তত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই কামাল গংরা মামরা দিয়েছিল। সেই মামলায় খালেদা জিয়া জেলে আছেন। এখন সেই কামাল গংরা খালেদা জিয়ার দলে যোগ দিয়ে জাতির সঙ্গে তামাশা করছেন। তার পক্ষ অবলম্বন করে এমপি হবার খায়েশে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এর জবাব ৩০ ডিসেম্বর জনগণ দেবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আওয়ামীলীগ ছাড়া দেশে অন্য কোন সরকার দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন করেনি মন্তব্য করে আওয়ামীলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য,১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন- বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত এক দশকে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী কাঠামোর উপর দাঁড় করানো হয়েছে,স্বাস্থ্য সেবাখাতের উন্নয়নসহ দক্ষিন এশিয়ায় সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে পরিচিত করে দেশে উন্নয়নের জোয়ার সৃষ্টি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: