ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’-এর গোলটেবিলে প্রত্যাশা

তরুণ ভোটারদের প্রথম ভোট হোক স্বাধীনতার পক্ষে

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৩০ নভেম্বর ২০১৮

তরুণ ভোটারদের প্রথম ভোট হোক স্বাধীনতার পক্ষে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তরুণ প্রজন্মকে বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের মুখপাত্র হয়ে ড. কামাল মাঠে নেমেছেন। তিনি নাকি দেশ বাঁচাতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করেছেন! জাতি জানতে চায়, তিনি কার হাত থেকে দেশ বাঁচাতে চান? মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির হাত থেকে? মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়নকারী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত থেকে? তিনি কার কাছে দেশ তুলে দিতে চান- রাজাকারদের পৃষ্ঠাপোষক ও দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার হাতে? আসলে তিনি তারেক জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করতে চাচ্ছেন। এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু নেই। জনগণ ও তরুণ সমাজকে তিনি বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছেন। কিন্তু এ দেশের তরুণরা তা হতে দেবে না। তরুণরা কী করতে পারে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ দেখিয়ে দিয়েছে। এবারও তরুণরা আওয়াজ তুলেছে, তারুণ্যের প্রথম ভোট মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে হোক। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘আসন্ন নির্বাচন : নতুন প্রজন্মের কাছে প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘পথ হারাবে না বাংলাদেশ’ ধারাবাহিক আলোচনা অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনের এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্প্রতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাঃ নুজহাত চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবিব, সাবেক রাষ্টদূত ও সচিব এ কে এম আতিকুর রহমান, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ও কথা সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, চলচ্চিত্র নায়ক ফেরদৌস, গবেষক ও কলামিস্ট সুভাস সিংহ রায়, বিএমএ নেতা প্রফেসর ডাঃ মাহবুবুর রহমান, প্রফেসর ডাঃ ইফতেখার আলম অনন্ত, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক সারিতা মিল্লাত, ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাংবাদিক নেতা বরুণ ভৌমিক নয়ন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ নেতা মতিউর রহমান লাল্টু, ইয়ং মেনস ক্রিশ্চিয়ান এসোসিয়েশনের সভাপতি উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার, ছাত্রলীগ সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী, নন্দন হাসান প্রিয়, ইশতিয়াক আহমেদ তানভীর, জান্নাতুল নাইম সিম্মিসহ সদ্য ভোটার হওয়া একঝাঁক তরুণ। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল এবং কবি ও সাংবাদিক আলী হাবিব। সাবেক সচিব আতিকুর রহমান বলেন, বিএনপির কোন সদস্য যাতে কোন আসনে (নির্বাচিত হয়ে) আসতে না পারে তরুণ সমাজকে তা দেখতে হবে। মনে রাখতে হবে যুদ্ধাপরাধ ও স্বাধীনতা বিরোধিতার কারণে জামায়াতের প্রতিটি সদস্য নির্বাচনের অযোগ্য। শুনেছি বিএনপি থেকে জামায়াতের ২৫ জন সদস্য মনোনয়ন পেয়েছে। তাই দেখতে হবে আসলে মনোনয়ন কী জামায়াত পাচ্ছে না বিএনপি? চিত্রনায়ক ফেরদৌস বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পিছনেও সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল তরুণদের। এবারও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দাঁড়িয়েছে এই তরুণ সমাজ। আওয়াজ একটাই তারুণ্যের প্রথম ভোট মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে হোক। পীযূষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, আজকে আমরা তরুণদের কথা শুনতে চেয়েছি, শুনেছি। এরা সবাই এবার প্রথম ভোটার হয়েছে। এখানে দেখলাম সত্যকে সত্যই বলা হয়েছে। সাদাকে সাদা কালোকে কালোই বলা হয়েছে। আলোচনা অন্যদিকেও যেতে পারত, হতে পারত হয়নি, যায়নি। এজন্যই বলি বাংলাদেশের ইতিহাস নির্মিত হয়েছে যে তরুণদের হাতে, সে দেশের তরুণরা ভুল করতে পারে না, ভুল করবে না। এ সময় তিনি তরুণদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথে ও শেখ হাসিনার উন্নয়নের পথে যুক্ত থাকতে হবে, যুক্ত রাখতে হবে। মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ডাঃ নুজহাত চৌধুরী বলেন, একটি ভোট শুধু একটি সরকার বদল করে না, সেই সঙ্গে একটি জাতির গতিপথ পরিবর্তন করে দিতে পারে। সম্মুখ যাত্রার পথও রুদ্ধ করে দিতে পারে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে হিটলারও জনগণের ম্যান্ডেড নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন, তার পরিণতি কী হয়েছিল গোটা বিশ্ব জানে। সুতরাং ভোটের ক্ষমতা তরুণ প্রজন্মকে অনুধাবন করতে হবে। পূর্ব পুরুষের রক্তের প্রতি অনুগত থেকে ভোট দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আজীবন থাকতে হবে। নুজহাত আরও বলেন, একজন শহীদের সন্তান হিসেবে আমি আশা করি যুদ্ধাপরাধীদের দল বা তার সহযোগীদের বাক্সে নিজের পবিত্র আমানত, হাতের ভোটটি তারণ্য তাঁর রক্তের সঙ্গে বেইমানি করবে না। আমার ভোট আমি দেব মুক্তিযদ্ধের পক্ষে দেব। তরুণ ভোটার প্রথম ভোট স্বাধীনতার পক্ষে হোক।
×