ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রায়ে পুরোপুরি খুশি নয় আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১১ অক্টোবর ২০১৮

রায়ে পুরোপুরি খুশি নয় আওয়ামী লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ একুশ আগস্ট ভয়াল গ্রেনেড হামলার রায়ে অখুশি না হলেও ‘মাস্টারমাইন্ড’ তারেক রহমানের সর্বোচ্চ সাজা না হওয়ায় পুরোপুরি সন্তষ্টও নয় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এ কারণে ২১ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড তারেক রহমানের ফাঁসির দাবি করেছে দলটি। পাশাপাশি দলের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে তারেক রহমানের ফাঁসি নিশ্চিত করতে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করার আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। বুধবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে রায়ের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ওবায়দুল কাদের বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও ২১ আগস্ট মামলার রায় হয়েছে। আমরা ন্যায় বিচার চেয়েছি। আমরা জাস্টিস চেয়েছি, আমরা বিচারকে প্রভাবিত করিনি। আজকে আদালত বিলম্ব হলেও রায়টি দিয়েছে। আমরা মনে করি যে, এটা একটা ভাল রায়। রায়ের জন্য আদালতকে ধন্যবাদ জানাই এ কারণে যে অন্তত একটা বিচার হয়েছে। কিন্তু রায় নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। ২১ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড, প্লানার ও বিকল্প পাওয়ার হাউস তারেক রহমান সর্বোচ্চ শাস্তি পেতে পারতেন। তিনি যা করেছেন তার প্রাপ্য শাস্তিটুকু পেতে পারতেন। তাই আমরা তারেক রহমানের ফাঁসি দাবি করছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফাঁসি দাবি করছি। তিনি বলেন, যে বর্বর তা-ব করেছে ওইদিন, মুফতি হান্নানের জবানবন্দীতে তা এসেছে, বাস্তবতাও কিন্তু তাই-ই। হামলার সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পূর্ণমন্ত্রী না থাকায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান জানতেন, আর তিনি (খালেদা জিয়া) জানতেন না, এটা নয়। তাই খালেদা জিয়াও এই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। তাকেও এ মামলায় বিচারের আওতায় আনা উচিত। ওবায়দুল কাদের বলেন, সে সময় বনানীর হাওয়া ভবন থেকেই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হতো। তখন বেগম জিয়ার সরকার ক্ষমতায়, আর হাওয়া ভবনই বিকল্প পাওয়ার সেন্টার ছিল। মুফতি হান্নান নিজেই স্বীকারোক্তি দিয়ে গেছে যে, অপরাশেন চালানোর পূর্ব মুহূর্তে তারেক রহমানের অনুমতি নেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ভয়াল ২১ আগস্টের ওই নৃশংসা হত্যাকা-ের প্রধান টার্গেট ছিল তৎকালীন বিরোধীদলের নেতা আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে প্রধান টার্গেট করে যে হামলা এবং হত্যাকা-ের পরিকল্পনাকারী, মাস্টারমাইন্ড কে ছিল, এটা দেশের জনগণ ভাল করেই জানে। এটা এখন আর গোপন কিছু নয়। প্রকাশ্য দিবালোকের মতো সত্য। খালেদা জিয়াকে বিচারের আওতায় আনুন- ড. হাছান ॥ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় খালেদা জিয়াকেও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সেনাবাহিনী যুদ্ধে যে গ্রেনেড ব্যবহার করে ও সরকারের অস্ত্রাগারে যে গ্রেনেড থাকে সেই গ্রেনেড সেখানে ফাটানো হয়েছিল। জেলখানার মধ্যে গ্রেনেড পাওয়া গিয়েছিল। সুতরাং বেগম জিয়ার জ্ঞাতসারেই এই হামলা হয়েছে। তাই এই হামলার মামলায় বিচারের আওতায় বেগম জিয়াকেও আনার দাবি আমরা প্রথম থেকেই করে আসছিলাম। তারেকের ফাঁসি দাবি ছাত্রলীগের ॥ বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার জানান, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ফাঁসি না হওয়ায় রায় প্রত্যাখ্যান করেছে ছাত্রলীগ। তারেক রহমানকে ফাঁসি দিতে হবে এবং লন্ডন থেকে তাকে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করতে হবে এমন দাবি জানিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।
×