ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বড়পুকুরিয়া কয়লাকান্ড

কর্মকর্তাদের অবহেলা প্রমাণিত ॥ সংসদীয় কমিটি

প্রকাশিত: ০৭:৩৫, ৩১ আগস্ট ২০১৮

কর্মকর্তাদের অবহেলা প্রমাণিত ॥ সংসদীয় কমিটি

বিডিনিউজ \ বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা উধাওয়ের ঘটনায় ‘চুরি’ এখনও প্রমাণিত না হলেও দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ‘অবহেলা প্রমাণিত’ হয়েছে বলে মনে করছে সংসদীয় কমিটি। বৃহস্পতিবার বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের পর কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, দুর্নীতির বিষয়টা তদন্ত সাপেক্ষ। কিন্তু এটা প্রমাণিত যে কর্মকর্তারা দায়িত্বে অবহেলা করেছেন এবং এটা অপরাধ হিসেবে গণ্য না হওয়ার কারণ নেই। সংসদীয় কমিটি বলছে, কর্মকর্তাদের ‘অবহেলার’ কারণেই কয়লা মজুদের ‘বিভ্রান্তিকর তথ্য’ এসেছে। দায়িত্বে অবহেলার জন্য প্রচলিত আইনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করছে কমিটি। কয়লার মজুদে ‘সিস্টেম লস’ হয়ে থাকলেও সেটা আগে থেকে হিসেবে ধরা হয়নি কেন- সে প্রশ্নও উঠেছে কমিটির বৈঠকে। কয়লা উধাওয়ের ঘটনায় চলমান তদন্তের প্রতিবেদন আগামী এক মাসের মধ্যে কমিটিতে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। কয়লা না পাওয়ায় গত জুলায়ে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুত কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কয়লা উধাও হওয়ার বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হয়। দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা দিয়েই পাশের বিদ্যুতকেন্দ্রটি চলত। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ইতোমধ্যে বলেছেন, অনেক দিন ধরেই কয়লা নিয়ে ‘দুর্নীতি’ চলছিল। কয়লা উধাওয়ের ঘটনায় গত ২৪ জুলাই খনির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৯ জনকে আসামি করে দুর্নীতি দমন আইনে মামলা করেন কোম্পানির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনিছুর রহমান। প্রাথমিক তদন্তে এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ার ‘প্রমাণ পাওয়ার’ কথা জানিয়ে মামলার ১৯ আসামিসহ পেট্রোবাংলার কর্মকর্তাদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। বুধবার দুদকের জিজ্ঞাসাবাদের পর কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক এমডি হাবিব উদ্দিন আহম্মদ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, কয়লা গায়েব হয়নি যেটা পাওয়া যাচ্ছে না, সেটা ‘সিস্টেম লস’। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সংসদীয় কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যে বিষয়টি, সেটা যদি ধরেও নিই, তারপরেও হিসাবে সেটা লেখা হয়নি কেন? সাবেক এমডি হিসেবে এর দায় তাকে (হাবিব উদ্দিন) নিতে হবে। তিনি বলেন, সিস্টেম লসের বিষয়টি যদি মজুদের হিসাবে লেখা থাকত, তাহলে বিভ্রান্তির সুযোগ থাকত না। আর তদন্তে ‘তসরুফ’ প্রমাণ হলে আইন অনুযায়ী সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে মন্তব্য করেন তাজুল। কোল মাইনিং কোম্পানির মামলার অভিযোগ করা হয়েছে, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ মেট্রিক টন কয়লা খোলা বাজারে বিক্রি করে ২৩০ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। তৎকালীন এমডি হাবিব, কোম্পানি সচিব ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়া, মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নূর-উজ-জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) এ কে এম খালেদুল ইসলামসহ খনির ব্যবস্থাপনায় জড়িত অন্যরা কয়লা চুরির ঘটনায় জড়িত বলেও এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।
×