ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জোয়ারে পানি বৃদ্ধি

বাগেরহাটে প্লাবিত ১০ গ্রাম

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ১৭ আগস্ট ২০১৮

বাগেরহাটে প্লাবিত ১০ গ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বাগেরহাট-রূপসা পুরাতন সড়ক ভৈরব নদীর জোয়ারের পানিতে প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে। সড়কের যাত্রাপুর ইউনিয়নের রহিমাবাদ, বাগমারা, মাঝিডাঙ্গাসহ বিভিন্ন স্থানের প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক প্রতিদিন ২ থেকে ৩ ঘণ্টা তিন ফুট পর্যন্ত পানির নিচে থাকে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা ও যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। উপচে পড়া পানিতে অন্তত ১০টি গ্রামের মাছের ঘের, বাগান এবং বাড়ির উঠান ডুবে যাচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের রহিমাবাদ গ্রামের রাস্তার ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি উপচে লোকালয়ে ঢুকছে। কোন কোন জায়গায় রাস্তার উপরে প্রায় এক ফুট পানি দেখা গেছে। ফলে রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলতে প্রচুর সমস্যা হচ্ছে। প্লাবিত হচ্ছে রহিমাবাদ, বাগমারা, মাঝিডাঙ্গা গ্রাম। পানিতে পুকুর, ঘরবাড়ি ও মৎস্য ঘের তলিয়ে যাচ্ছে। ঘটছে দুর্ঘটনা। স্কুলের বাচ্চারা পানিতে ভিজে বাড়িতে যাচ্ছে। গত ৫ বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেই সড়কের ওপর এ পানি ওঠে যাচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ভোগান্তিতে পরছে রাস্তার এপারের অন্তত ৩টি গ্রামবাসী ও পথচারীরা। রহিমাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দিপা বলেন, রাস্তায় পানি থাকার কারণে আমাদের স্কুল ছুটি দেয়ার পর বাড়িতে যাওয়ার সময় প্রায়ই ভিজে যাই। অনেক সময় আমাদের বই খাতাও ভিজে যায়। যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মতিন বলেন, বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের সময় ভৈরব নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাগেরহাট-রুপসা সড়কের রহিমাবাদসহ বিভিন্ন জায়গার প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। এতে মাছের ঘের, বাগান এবং বাড়ির উঠান ডুবে যায়। জোয়ারের পানি ঠেকাতে প্রতি বছর বালুর বস্তা দিয়ে রাস্তার পাশে বাঁধ দিলেও কাজ হচ্ছে না। এ অবস্থা মূল রাস্তার প্রস্থ বৃদ্ধি ও রাস্তা উঁচু না করলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যসহকারী সাইদুর রহমান মীর বলেন, আমরা জরুরী ভিত্তিতে রাস্তার ভাঙ্গা ঠেকাতে গাছ ও মাটির বস্তা দিয়ে পাইলিংয়ের কাজ করছি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, এ সড়কের ঐ স্থানটি প্রচ- ঝুঁকিপূর্ণ। তারপরও আমরা কিছু কাজ করে রাস্তাটিকে চলাচলের উপযোগী করে রেখেছি। এ সড়কের দুরবস্থার স্থায়ী সমাধানের জন্য পুরাতন রেললাইনের ওপর থেকে বিকল্প সড়ক তৈরির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সাতক্ষীরায় বাঁধে ভাঙ্গন স্টাফ রিপোর্টার সাতক্ষীরা থেকে জানান, কপোতাক্ষ খনন প্রকল্পে তালার দোহার গ্রামে টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) প্রকল্পের বাঁধ ভেঙ্গে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ও রাস্তা তলিয়ে গেছে। উপজেলার শালিখা টিআরএম প্রকল্পের পশ্চিম পাশে দোহার খাল সংলগ্ন এলাকায় বুধবার দুপুরে বাঁধ ভেঙ্গে যায়। মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গণেশ দেবনাথ জানান, কপোতাক্ষ নদের পানি মাগুরাডাঙ্গা বিল ও মাদরা গুচ্ছগ্রামে প্রবেশ করেছে। পানিতে বিল ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে । তবে কপোতাক্ষ নদে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে গুচ্ছগ্রাম প্লাবিত হবার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল জানান, পাখিমারা বিলে টিআরএম প্রকল্পের কাজে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগে গত ১৪ আগস্ট দুদক খুলনার উপ-পরিচালক আবুল হোসেন বাদী হয়ে তিনটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় যশোরের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান, ঠিকাদার আলিম আল রাজী, কেশবপুরের সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, শফিকুল ইসলামসহ ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। দোহার গ্রামের অমল বাছাড় জানান, কপোতাক্ষ নদের পানিতে মাদরা গুচ্ছগ্রামের রাস্তা, মাধবখালী খাল ও উত্তর বিলের ২০টি মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া মাদরা ও মাদরা গুচ্ছগ্রামের অর্ধশতাধিক বাড়ি ও রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। অতিদ্রুত বাঁধ সংস্কার করা না হলে জালালপুর ইউনিয়নের দোহার বিল, মাগুরা ইউনিয়নের মাদরা বিল ও খেশরা ইউনিয়নের কলাগাছি, রাজাপুর, বিশ্বাসের চক, হরিহরনগর ও শাহপুর বিলের শত শত মৎস্য ঘের এবং বসতবাড়ি প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। ইলিশা ফেরিঘাটে দুর্ভোগ নিজস্ব সংবাদদাতা ভোলা থেকে জানান, ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ইলিশা ফেরিঘাট মেঘনার জোয়ারের পানিতে আবারও তলিয়ে গেছে । এতে উভয় পাড়ে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। ঘাটে পানি থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোন যানবাহন উঠানামা করতে পারছে না। অনেকটা জোয়ারভাটার ওপর নির্ভর করে চলছে ফেরি চলাচল। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষ। এ দিকে বিকল্প ব্যবস্থায় যাত্রীরা নৌকাতে পার হলেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের। এ অবস্থায় দ্রুত ঘাটের সমস্যা সমাধানে একটি হাই ওয়াটার লেভেল ঘাট স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা। স্থানীয়রা জানিয়েছে, দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে চট্টগ্রামের সহজ যোগাযোগ মাধ্যম ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ইলিশা ফেরিঘাটটি একটি ব্যস্ততম রুট। অথচ ইলিশায় একটি মাত্র ঘাট। তাও আবার নিচু টাইপের। হাই ওয়াটার ঘাট নির্মাণ না করা জরুরী হলেও তা নির্মাণ করা হয়নি।
×