ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিচারপতি জয়নুলের আগাম জামিন টিকলো না

প্রকাশিত: ২২:০২, ৩১ জুলাই ২০১৮

বিচারপতি জয়নুলের আগাম জামিন টিকলো না

অনলাইন রিপোর্টার ॥ অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধানের মধ্যে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনকে আগাম জামিন দিয়ে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেয়। এর ফলে বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের আগাম জামিন বাতিল হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের আইনজীবী মইনুল হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রোনা নাহরীন ও এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। গত বছরের ১০ জুলাই রুলের উপর শুনানি শেষ হয়েছিল। মঙ্গলবার রায়ের পর আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের বলেন, “নিয়মিত জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে বিচারপতি জয়নুল আবেদীনকে দেওয়া আগাম জামিন আর থাকছে না।” জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই সম্পদের হিসাব চেয়ে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনকে নোটিস দেয় দুদক। পরে দুদকের দেওয়া নোটিসের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১০ সালের ২৫ জুলাই তিনি হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। রিটের ওপর শুনানি নিয়ে সে সময় বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহাব মিঞা ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিষয়টি উত্থাপিত হয়নি বিবেচনায় খারিজ করে দেয়। পরে ওই বছর ২৫ অক্টোবর দুদক তাকে আরও একটি নোটিস দেয়। প্রয়োজনীয় তথ্যসহ ৩ নবেম্বর তিনি ওই নোটিসের জবাব দেন। এর সাত বছর পর গত বছরের জানুয়ারিতে সাবেক এ বিচারপতির বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক। এ বিষয়ে দুদক তার ব্যাখ্যা চাইলে বিচারপতি জয়নুল ব্যাখ্যাও দেন । এরই মধ্যে অনুসন্ধানের কথা বলে সুপ্রিমকোর্টের কাছে সাবেক এই বিচারকের বিষয়ে কাগজপত্র চেয়ে গত বছরের ২ মার্চ চিঠি দেয় দুদক। এর জবাবে ওই বছরের ২৮ এপ্রিল আপিল বিভাগের তখনকার অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুনাভ চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, “সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে দুদকের কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ সমীচীন হবে না বলে সুপ্রিম কোর্ট মনে করে।” কোনো বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অসদাচরণ, দুর্নীতি বা অন্য কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে, সুপ্রিমকোর্টের পরামর্শ ছাড়া তার প্রাথমিক তদন্ত বা অনুসন্ধান না করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেওয়া হয় সুপ্রিমকোর্টের ওই চিঠিতে। সুপ্রিমকোর্টের এ ধরনের চিঠি নিয়ে সংসদ অধিবেশনে কড়া সমালোচনা হয়। পরে জুনে একটি দৈনিক পত্রিকায় এ বিচারপতির জ্ঞাতআয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ও দুদকের অনুসন্ধান নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ‘গ্রেফতার ও হয়রানির’ আশঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি হাই কোর্টে জামিন আবেদন করেন। গত বছরের ১০ জুলাই হাইকোর্ট তাকে এ অভিযোগের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত জামিন দেয় এবং নিয়মিত জামিন কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে। সে রুলই মঙ্গলবার খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
×