ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মেরিনারকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে মোহামেডান

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ২৪ মে ২০১৮

মেরিনারকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে মোহামেডান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথমে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ছিল তিন দল। পরে হলো দুই দল। বুধবারের পর থেকে এক দল। আর যে দলটি এককভাবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে তারা হলো মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড। গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়ার ডিভিশন হকি লীগে তারা এদিন দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ৩-১ গোলে গোলে হারায় অপর শিরোপা প্রত্যাশী ঢাকা মেরিনার ইয়াংস ক্লাবকে। যদিও ম্যাচের প্রথমার্ধে মেরিনারই এগিয়েছিল ১-০ গোলে। ফলে তারা আক্ষেপ করতেই পারে লিড নিয়েও ম্যাচটি হেরে যাওয়াতে। আর মোহামেডান গর্ব করতেই পারে পিছিয়ে পড়েও জেতায়। তাছাড়া ম্যাচের শুরুতেই একটি পেনাল্টি স্ট্রোক পেয়েও সেটি কাজে লাগাতে পারেনি। কিন্তু তারপরও অসাধারণ খেলে জিতে যায় তারা। এই ম্যাচে জিতে তারা একই সঙ্গে নিয়ে নিল মধুর প্রতিশোধও। কেননা সর্বশেষ লীগে মেরিনারের কাছে টানা দু’বার (৩-১ এবং ৪-২ গোলে) হেরেছিল। নিজেদের দশম ম্যাচে এটা চারবারের প্রিমিয়ার লীগ চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানের দশম জয়। পূর্ণ ৩০ পয়েন্ট নিয়ে তারা এখন এককভাবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। পেছনে ফেলে দিল লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মেরিনারকে, যাদের সংগ্রহ সমান ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট। আর সর্বাধিক পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর সংগ্রহ ২৪ পয়েন্ট। তারা অবশ্য এক ম্যাচ কম খেলেছে। চলতি লীগে এই প্রথম তিক্ত হারের স্বাদ পেল মেরিনার। আর মোহামেডানের গর্ব টানা দুই ম্যাচে দুই পরাশক্তিকে পরাভূত করলো তারা। আগের ম্যাচেই তারা ২-১ গোলে হারিয়েছিল আবাহনীকে। যাহোক, বুধবারের ম্যাচের প্রসঙ্গে আসা যাক। পুরো ম্যাচটি ছিল বেশ ঝামেলার এবং গোলযোগপূর্ণ। খেলায় যেন কোন গোলমাল না হয় সেজন্য এই ম্যাচ পরিচালনার জন্য প্রথমবারের মতো বিদেশী দুই আম্পায়ার (একজন চীনের, অপরজন হংকংয়ের) আনা হয়। কিন্তু তারপরও খেলোয়াড়রা আম্পায়ারের একাধিক সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি। ভিডিও রেফারেলের ব্যবস্থা ছিল। ভিডিওতে রিভিউ দেখা হয় প্রেসবক্সের পাশের রুমে। আর রিভিউর রায় দেয়া হয় মাঠের বাইরে স্থাপিত বক্সে। দু’দলের খেলোয়াড়রা রায় দেয়ার জায়গায় জটলা করেন এবং রিভিউর রায় পছন্দ না হলে গোলমাল পাকান (ভাবখানা যেমনÑ ‘বিচার মানি, কিন্তু তালগাছ আমাদের!)। ম্যানেজাররা ডাগআউট ছেড়ে বারবার টেকনিক্যাল বক্সের সামনে চলে আসেন। বিদেশী আম্পায়ার, তারপরও তার সিদ্ধান্ত না মেনে কথায় কথায় তর্ক জুড়ে দেন খেলোয়াড়রা। খেলা চলাকালে মোহামেডানের অফিসিয়াল চন্দন বারবার মাঠে ঢুকে পড়েন। এসবকিছুর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া? সবমিলিয়ে প্রায় আধাঘণ্টা খেলা বন্ধ। ৭০ মিনিটের খেলা শেষ হতে লেগেছে ১১০ মিনিট। বড় ম্যাচে জিতে নিজেদের আধিপত্য টিকিয়ে রাখলো সাদা-কালোরা। যদিও নবম মিনিটেই গোল মিস করে হতাশায় পোড়ে তারা। গুরজিন্দর সিংকে গোলরক্ষক অসীম গোপ ফাউল করলে পেনাল্টি স্ট্রোক পায় মোহামেডান। কিন্তু অরবিন্দর সিংয়ের স্ট্রোক ফিরিয়ে দেন অসীম। পাপের প্রায়শ্চিত্তই যেন করলেন অসীম। উল্টো ৩৪ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় মেরিনার। ডানদিক থেকে মিমোর বাড়ানো বলে চমৎকার হিটে মেরিনারকে লিড এনে দেন হাসান জুবায়ের নিলয় (১-০)। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ম্যাচে ফিরতে মরিয়া মোহামেডান চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। ৪২ মিনিটে প্রতিপক্ষ এক খেলোয়াড়ের আঘাতে আহত হন মোহামেডানের অরবিন্দর সিং। কিন্তু তাকে চিকিৎসা দিতে বেশ সময় নষ্ট করে মেডিক্যাল টিম। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে সাদা-কালো শিবিরে। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়র সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন মোহামেডানের কামরুজ্জামান রানা। বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে ম্যাচ। খেলা শুরু হলে ৪৪ মিনিটে পেনাল্টি স্ট্রোক পায় মোহামেডান। দারুণ ফ্লিকে গুরুজিন্দর সিং বল জালে পাঠান (১-১)। ৬৪ মিনিটে পিসি পায় মোহামেডান। শমসের সিংয়ের পুশ স্টপ করেন রানা। উড়ানো হিটে লক্ষ্যভেদ করেন অরভিন্দর (২-১)। এর কিছুক্ষণ পর একই কম্বিনেশনে আবারও সফল হয় মোহামেডান। এবারও গোলদাতা অরবিন্দর (৩-১)। আর এই গোলেই জয় নিশ্চিত হয় সাদা-কালোদের। একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম ম্যাচে সাধারণ বীমা বনাম পুলিশ এসসির ম্যাচটি ৩-৩ গোলে ড্র হয়।
×