ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চারুকলার বকুল তলায় দিনব্যাপী রুদ্রমেলা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ২৯ এপ্রিল ২০১৮

 চারুকলার বকুল তলায় দিনব্যাপী রুদ্রমেলা অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘ভাষার কসম খেয়ে আমরা দাঁড়াবো ঘিরে আমাদের মাতৃভূমি, জল, অরণ্য জমিন’ শ্লোগানে দিনব্যাপী রুদ্রমেলা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুল তলায় আজ রবিবার। তারুণ্যের দৃপ্ত প্রতীক অকাল প্রয়াত কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ স্মরণে ষষ্ঠদশ বারের মতো এ মেলার আয়োজন করে রুদ্র সংসদ। প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া উপেক্ষা করে বিভিন্ন সংগঠনের পরিবেশনায় ছিল একক ও দলীয় আবৃত্তি, নৃত্য ও সঙ্গীত। সকালে দিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংস্কৃতিজন সৈয়দ হাসান ইমাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেলা উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি মোহাম্মদ নুরুল হুদা, কামাল চৌধুরী ও আসীম কুমার উকিল। মেলা উদ্যাপন কমিটির সদস্য সচিব ও রুদ্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক কামাল পাশা চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শুরু হয় উদ্বোধনী পর্ব। এরপর মেলা উদ্বোধন করেন সৈয়দ হাসান ইমাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সত্তর ও আশির দশকের কবিদের মধ্যে এক অনন্য প্রতিভার অধিকারী নিবেদিতপ্রাণ কবি। সাহিত্য ছাড়াও সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক কর্মকা তাঁর অবদান ছিল অপরিসীম। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। সাহসী উচ্চারণ, অনন্য দেশপ্রেম ও মননশীল রচনার জন্য রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বর্তমান তরুণ সমাজেরও প্রিয় কবি। প্রথমদিকে আয়োজন ছোট থাকলেও দেশের তরুণ সমাজের ব্যাপক অংশগ্রহণ উত্তরোত্তর মেলার পরিধিকে বিস্তৃত করে তোলে এবং তা বর্তমানে দেশের অন্যতম বৃহত্তম সাংস্কৃতিক মেলায় রূপ নিয়েছে। স্বাধীনতা উল্টর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে যে কয়জন কবি শিল্প ও জীবনাচারকে একই সূত্রে গ্রহিথ করার চেষ্টা করেছেন তাদের অন্যতম ছিলেন রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। তাইতো তার উচ্চারণ ‘জাতির পতাকা খামচে ধরেছে আজ পুরোনো শকুন’। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর পরই প্রচন্ড ঝড়ে অনুষ্ঠান কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক আয়োজন। এ পর্বের শুরুতে রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর ‘লাশগুলো আবার দাঁড়াক’ কবিতা আবৃত্তি করেন লায়লা আফরোজ। পরে দলীয় গান নিয়ে মঞ্চে আসে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। তারা পর পর পরিবেশন করে দুটি গান। এগুলো হচ্ছে ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ ও ‘হিমালয় থেকে সুন্দরবন’। কবি রুদ্র’র ‘আমি সেই অভিমান’ কবিতা আবৃত্তি করেন নাজমুল আহসান। তামান্না রহমান আবৃত্তি করেন ‘মানুষের মানচিত্র’ কবিতা। দলীয় আবৃত্তি নিয়ে আসে ত্রিলোক বাচিক পাঠশালা। তাদের পরিবেশনায় ছিল ‘মুখোমুখী’ কবিতা। ‘বিশ্বাসের হাতিয়ার’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন সুবর্ণা আরফিন। এছাড়া দলীয় আবৃত্তি করে স্বরচিত্র, প্রকাশ সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠন, কণ্ঠশীলন, মুক্তধারা সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রসহ বেশ কিছু সংগঠন। রবীন্দ্রনাথের ‘মম চিত্তে নিতি নৃত্যে’ গানের সঙ্গে দলীয় নাচ পরিবেশন করে নৃত্যজন। এছাড়া দলীয় নৃত্যে অংশ নেয় স্পন্দন। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী, ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী, বহ্নিশিখা ও আনন্দন। সন্ধ্যায় বাউল গান পরিবেশন করে অন্তর বাজাও, বাউল দেলোয়ার ও সনিয়া, সমীর বাউল ও তার দল এবং দিলবাহার।
×