ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদে নৌনিরাপত্তায় ফেরিঘাটে ১০ দফা সুপারিশ জাতীয় কমিটির

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১০ এপ্রিল ২০১৮

ঈদে নৌনিরাপত্তায় ফেরিঘাটে ১০ দফা সুপারিশ জাতীয় কমিটির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুর্যোগ মৌসুম বিবেচনায় নিয়ে আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহায় উপকূল, হাওড়, দ্বীপাঞ্চল ও পাহাড়ী জনপদে নৌ চলাচল নিরাপদ রাখার দাবি জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি। এছাড়া সারাদেশে নৌ নিরাপত্তা নিশ্চিত ও নৌ পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় সেনা মোতায়েনসহ দশটি সুপারিশ করেছে বেসরকারী সংগঠনটি। সোমবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে ‘চলমান দুর্যোগ মৌসুম, আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর ও নৌ নিরাপত্তা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এই সুপারিশ উত্থাপন করা হয়। এতে সংশ্লিষ্ট সেক্টরের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়ার সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুর রহমান সেলিম, শিশু সংগঠন খেলাঘরের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক তাহ্মীন সুলতানা স্বাতী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, বাংলাদেশ ইনল্যান্ড মাস্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বীমা) সভাপতি ক্যাপ্টেন কাজী আব্দুল হক, পুরান ঢাকা পরিবেশ উন্নয়ন ফোরামের আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাজিম। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় কমিটির জ্যৈষ্ঠ সহসভাপতি সঞ্জীব বিশ্বাস, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জসি সিকদার, নির্বাহী সদস্য মঈনউদ্দিন সেখ মোহন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। নৌপথ ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া দুর্যোগ মৌসুম ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। এই সময়ের মধ্যেই ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহা উদযাপিত হবে। ফলে নৌপথের ওপর চাপ বহুগুণ বেড়ে যাবে। তাই নিরাপত্তার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে ১০ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো- পদ্মার শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল নির্বিঘœ করতে পহেলা রমজান থেকে এ দুই স্থানে সেনাবাহিনী মোতায়েন, অবিলম্বে সকল নদীবন্দর ও নৌপথে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম শুরু ও বছরজুড়ে অব্যাহত রাখা, অবৈধ ও ত্রুটিপূর্ণ নৌযান চলাচল বন্ধে উপকূলীয়, হাওড় ও পাহাড়ী জনপদের জেলা পুলিশ প্রশাসনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সম্পৃক্তরণ, নৌযানের ফিটনেস যথাযথভাবে পরীক্ষার জন্য নৌ পরিবহন অধিদফতরে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিপ সার্ভেয়ার নিয়োগ, ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম সারাবছর সচল রাখতে নৌ পরিবহন অধিদফতরে অবিলম্বে আরও অন্তত তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন, নৌ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের মামলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে অবিলম্বে সরকারী আইনজীবী নিয়োগ এবং বার কাউন্সিলের সনদবিহীন প্রসিকিউটিং কর্মকর্তাকে রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনা থেকে অবিলম্বে প্রত্যাহার। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ নৌযানের মাস্টারশিপ ও ড্রাইভারশিপ পরীক্ষা পদ্ধতি স্বচ্ছ ও জবাবদিহি করতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, নৌ পরিবহন অধিদফতর ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ পরিবহন কর্তৃপক্ষের বিশেষজ্ঞ এবং যোগ্যতাসম্পন্ন অবসরপ্রাপ্ত মাস্টার ও চালকের সমন্বয়ে পরীক্ষা কমিটি গঠন, দক্ষ চালক তৈরির লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ নৌযানের মাস্টার ও চালকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম এইচএসসি পাস, পরীক্ষার আগে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে তিন মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণ এবং ৩০ নম্বরের রচনামূলক ও নৌ দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন, দায়ীদের শনাক্তকরণ ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়নের জন্য অভিজ্ঞ নৌ প্রকৌশলী, নৌ স্থপতি, মাস্টার মেরিনার, নৌ পরিবহনবিষয়ক গবেষক, পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ, নৌযান মালিক প্রতিনিধি, সিনিয়র গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং সামাজিক আন্দোলনের কর্মীদের সমন্বয় জাতীয় তদন্ত কমিটি গঠন ও সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি ও নৌনিরাপত্তার স্বার্থে অর্ধলক্ষাধিক অবৈধ নৌযানকে আইনের আওতায় আনতে অবিলম্বে সারাদেশে নৌ-শুমারি শুরুর দাবি জানানো হয়।
×