ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নেতৃত্ব নিয়ে আত্মবিশ্বাসী জাকারবার্গ

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ৬ এপ্রিল ২০১৮

নেতৃত্ব নিয়ে আত্মবিশ্বাসী জাকারবার্গ

ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ বুধবার সানফ্রন্সিসকোতে বলেছেন, তার প্রতিষ্ঠিত সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমটি কিছু ভুলভ্রান্তি করলেও তিনি যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি স্বীকার করেছেন ব্রিটিশ রাজনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ এ্যানালিটিকা ৮ কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারীর তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে। গত মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ সংখ্যা ৫ কোটি বলা হয়েছিল। এএফপি ও নিউইয়র্ক টাইমস। ব্যবহারকারীদের তথ্য হাতানো নিয়ে গত ফেসবুক ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। এর ফলে ফেসবুকের শেয়ারের দরও পড়ে যায়। এসব নিয়ে জাকারবার্গ চিন্তিত কি না, অথবা তিনি মনে করেন কি না প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্ব দিত তার সমস্যা হচ্ছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি জীবন মানে ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া এবং সামনে এগিয়ে যাওয়া।’ তিনি বলেন, ‘আপনি যখন ফেসবুকের মতো একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বসবেন, যে ধরনের প্রতিষ্ঠান আগে কোথাও ছিল না তখন কিছু ভুলভ্রান্তি ও অনিয়ম হতে পারে।’ জাকারবার্গ বলেন, ‘আমাদের অনেক কিছু করা উচিত ছিল। আমরা সেটা করব।’ তিনি আগে ভাবতেন, ফেসবুকের সুবিধা কে কীভাবে ব্যবহার করল, সেই দায় ব্যবহারকারীর ওপরই বর্তাবে। কিন্তু এখন ফেসবুক প্রধানের ধারণা হয়েছে, তার সেই চিন্তায় সীমাবদ্ধতা ছিল। তিনি এখন বুঝতে পারছেন, ফেসবুককেও আরও দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি জানান, অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধানে নতুন আরেক সমস্যা খুঁজে পেয়েছেন তারা। ফেসবুকের সার্চ বক্সে ই-মেইল ঠিকানা বা ফোন নম্বর দিয়ে কোন ব্যবহারকারীকে খোঁজার যে ফিচারটি আছে, কিছু লোক তার অপব্যবহার করছে। আপাতত ওই ফিচারটি বন্ধ রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ইউরোপীয় প্রাইভেসি রুলের আওতায় আগামী মাস থেকে ব্যবহারকারীদের কিছু টুলস অফার করা হবে। তিনি এদিন স্বীকার করেন ৫ কোটি নয় ৮ কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য এ্যানালিটিকার হাতে গেছে। ওই ব্যবহারকারীদের অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। তবে এক কোটি ৬০ লাখ ব্যবহারকারী অন্য দেশের, যাদের মধ্যে প্রায় ১১ লাখ যুক্তরাজ্যে থাকেন। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে প্রচারের কৌশল নির্ধারণে ওই ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য ব্যবহার করেছিল কেমব্রিজ এ্যানালিটিকা। ব্রিটিশ ওই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মী ক্রিস্টোফার উইলি গত মাসে ওই ঘটনা ফাঁস করে দিলে বড় ধরনের ধাক্কা খায় ফেসবুক। তীব্র সমালোচনার মুখে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের প্রাইভেসি সেটিংসে পরিবর্তন আনে। বিজ্ঞাপনদাতাদের পরামর্শক হিসেবে কাজ করে এমন কয়েকটি ডেটা ব্রোকার ফার্মের সঙ্গে ব্যবসাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কেমব্রিজ এ্যানালিটিকা ওই তথ্য কিনেছিল ‘দিস ইজ ইওর ডিজিটাল লাইফ’ নামের একটি কুইজভিত্তিক ফেসবুক এ্যাপের মালিকের কাছ থেকে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকের তৈরি করা ওই এ্যাপের মাধ্যমে চালানো ওই কুইজে অংশ নিয়েছিলেন ৩ লাখ ৫ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী। তাদের বন্ধু তালিকা থেকে আরও কয়েক কোটি ফেসবুক এ্যাকাউন্টধারীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয়া হয়েছিল ওই এ্যাপের মাধ্যমে। গ্রাহকদের ওই ব্যক্তিগত তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে বলে দাবি করেছিল কেমব্রিজ এ্যানালিটিকা। ফেসবুক কর্তৃপক্ষও তাদের ওই কথায় ভরসা রেখেছিল। কিন্তু চ্যানেল ফোর এক প্রতিবেদনে দেখিয়ে দেয়, ট্রাম্পের ভোটের প্রচারে কেমব্রিজ এ্যানালিটিকার ব্যবহার করা তথ্যের একটি অংশ এখনও বাইরে রয়ে গেছে। কতজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য কেমব্রিজ এ্যানালিটিকার হাতে গেছে, সে বিষয়ে একটি ব্লগে ধারণা দিয়েছেন ফেসবুকের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা। তিনি জানিয়েছেন, ওই সংখ্যা আট কোটি ৭০ লাখের মতো হতে পারে।
×