ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভবিষ্যতে গ্রাহক বাজার থেকে প্রি-পেইড মিটার সংগ্রহ করবেন

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৯ মার্চ ২০১৮

 ভবিষ্যতে গ্রাহক বাজার থেকে প্রি-পেইড মিটার সংগ্রহ করবেন

রশিদ মামুন ॥ প্রিপেইড মিটার সংগ্রহের দায়িত্ব গ্রাহকের উপর ছেড়ে দিতে চায় বিদ্যুত বিভাগ। এখন প্রিপেইড মিটার শুধুমাত্র বিতরণ সংস্থা সরবরাহ করে থাকে। ভবিষ্যতে খোলা বাজার থেকে গ্রাহক নিজেই মিটার সংগ্রহ করবেন। এ বিষয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করছে বিদ্যুত বিভাগ। নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন এ সম্পর্কে জনকণ্ঠকে বলেন, এখন যেভাবে একজন গ্রাহক বিদ্যুত সংযোগের জন্য বাজার থেকে মিটার কেনেন একই প্রক্রিয়ায় প্রিপেইড মিটারও ক্রয় করবেন। তারা মিটার ক্রয়ের পর সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছে নিয়ে আসবেন। এরপর সংশ্লিষ্টরা মিটারটি পরীক্ষা করে বিদ্যুত সংযোগ দিয়ে মিটারটি সিল করে দেবেন। গ্রাহক নিজে মিটার ক্রয় করলে মিটার ভাড়া দিতে হবে না। বিদ্যুত বিভাগের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে সারাদেশের অন্তত দুই কোটি গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে দেশের বেশিরভাগ গ্রাহক প্রিপেইড মিটার পেয়ে যাবেন। কিন্তু এখন খুব ধীর গতিতে প্রিপেইড মিটার সংযোজন করা হচ্ছে। বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানি প্রিপেইড মিটার দরপত্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করে। দরপত্র পক্রিয়া শেষ করতে বেশ সময় প্রয়োজন হয়। এরপর সেই মিটার বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংযোজন করা হয়। এখন খোলা বাজারে কোন প্রিপেইড মিটার পাওয়া যায় না। দরপত্র পক্রিয়ায়ও কিছু চীনা কোম্পানি অংশগ্রহণ করে। যাদের সংখ্যা হাতে গোনা ১০ থেকে ১২টি। ভবিষ্যতে সব মিটারই প্রিপেইড মিটার হলে এখানে প্রিপেইড মিটারের বাজার সম্প্রসারিত হবে। ইতোমধ্যে দেশেই অনেক কোম্পানির পাশাপাশি যৌথ মূলধনী কোম্পানি করে অনেকে প্রিপেইড মিটার তৈরি করতে চাইছে। বিদ্যুত বিভাগ বলছে প্রিপেইড মিটারের সফটওয়্যারটি হবে একই ধরনের। এছাড়া কিছু মানদ- নির্ধারণ করে দেয়া হবে। এসব দিক ঠিক রেখে যারাই বাজারে মিটার বিক্রি করবে তাদের মিটার গ্রাহক কিনতে পারবেন। এ সংক্রান্ত একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। সব বিতরণ কোম্পানির কাছে এই নীতিমালা পাঠানো হয়েছে। বিতরণ কোম্পানির মতামত সন্নিবেশিত করে নীতিমালাটি শীঘ্রই চূড়ান্ত করা হবে। পাওয়ার সেল সূত্র বলছে, সম্প্রতি প্রিপেইড মিটারে ভোগান্তি নিয়ে নানা সমালোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে বিল প্রদানের ক্ষেত্রে গ্রাহককে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ের দৃষ্টিতে এলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রিপেইড মিটার সংক্রান্ত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে প্রিপেইড মিটারে ভোগান্তি দূর করার পাশাপাশি দ্রুত মিটার সম্প্রসারণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর বিদ্যুত বিভাগ বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করে। ওই বৈঠকে প্রিপেইড মিটার সংগ্রহে নতুন নীতিমালা তৈরির কথা জানানো হয়। এছাড়া প্রিপেইড মিটারের বিল প্রদানের জন্য এক-পে পদ্ধতি প্রচলনের সিদ্ধান্ত হয়। তবে এখন প্রি-পেইড মিটারে মোবাইল অপরারেটরের মাধ্যমে বিল প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু চার্জ দিতে হয়। তবে ব্যাংক এবং ভেন্ডিং স্টেশনের মাধ্যমে বিল দিতে হলে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হয় না। নতুন এক-পে পদ্ধতিতেও সরকার চাইছে মোবাইল ফোন রিচার্জের মতো পদ্ধতি ব্যবহার করতে। গ্রাহক যেভাবে মোবাইল ফোনে অর্থ রিচার্জ করে একইভাবে প্রিপেইড মিটারেও অর্থ রিচার্জ করতে পারবেন। ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে এক-পে পদ্ধতিতে বিভিন্ন সেবা দাতাদের বিল সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগ বলছে প্রিপেইড মিটারের সব সমস্যা সমাধানে সরকারের কাছে সুপারিশ তুলে ধরতে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালককে আহ্বায়ক করে ১৩ সদস্যর কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে ডিপিডিসির ডিজিএম (আইসিটি) কামরুল হাসানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এখন একজন গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের ভাড়া বাবদ মাসে ২৫ টাকা দিতে হচ্ছে। আর একটি প্রিপেইড মিটার এখন ৩৪ ডলার বা দুই হাজার ৭০০ টাকায় কেনা যায়। একবারে মিটার কিনে নিলে আর মিটার ভাড়া দিতে হবে না। তবে খোলা বাজারে মিটার বিক্রি শুরু হলে দাম আরও কমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছ।
×