ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তিতাসের আবাসিক গ্রাহক বেড়েছে সাত লাখ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৪ জানুয়ারি ২০১৮

তিতাসের আবাসিক গ্রাহক বেড়েছে সাত লাখ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংযোগ বন্ধ থাকার পরও আবাসিকে এক বছরে সাত লাখ গ্রাহক বৃদ্ধি পেয়েছে তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানিতে। কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০১৫-১৬ সালে তিতাস গ্যাসের গ্রাহক ছিল ২০ লাখ ছয় হাজার আর ২০১৬-১৭ তে বলা হচ্ছে এই সংখ্যা ২৭ লাখ। আবাসিকে সংযোগ বন্ধ থাকার পরও কিভাবে বিপুল পরিমাণ সংযোগ বৃদ্ধি পেল এমন প্রশ্নের উত্তরে তিতাস বলছে ডাটাবেজ তৈরির সময় সকল বিতরণ এলাকা থেকে তথ্য এনে যোগ করে দেখেছে তাদের আবাসিকে প্রকৃত গ্রাহক সংখ্যা সাত লাখ বেশি। তবে এই যুক্তি কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এত বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের গড়মিল বা তথ্য না থাকাটা কোন সাধারণ বিষয় হতে পারে না। সরকার গ্যাসের স্বল্পতার কারণে আবাসিকে গ্যাসের সংযোগ বন্ধ রাখে। কিন্তু সরকারের এই সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তিতাসের কর্মকর্তাদের সহায়তায় অবৈধ সংযোগ নেয়ার বিষয়ে নানা সময়ে সমালোচনা হয়। সরকার আবাসিকে সংযোগ চালু করার পর ২০১৩ সালে অবৈধ সংযোগ বৈধ করার সুযোগ দেয়। ওই সময় লাখ লাখ মানুষ তাদের সংযোগ অবৈধ দাবি করে বৈধ করার আবেদন করেন। ওই সময় সেইসব সংযোগ বৈধও করে দেয়া হয়। কিন্তু এর পর আবার জ¦ালানি বিভাগের নির্দেশে আবাসিক সংযোগ বন্ধ রাখে তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানি। কিন্তু এখন এসে আবার বলা হচ্ছে তাদের সংযোগ সংখ্যা সাত লাখ বেড়েছে এক বছরে। তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানি অবশ্য এর ব্যাখ্যায় বার্ষিক প্রতিবেদনেই বলছে কোম্পানির ডাটাবেজ হালনাগাদ করা হয়েছে। এই হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী তাদের এই বাড়তি গ্রাহক সংখ্যার কথা জানিয়েছে তারা। জানতে চাইলে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মীর মশিউর রহমান বলেন, প্রকৃতপক্ষে এই গ্রাহক সংখ্যা এক বছরে বাড়েনি। আমাদের সকল গ্রাহকের তথ্য এক জায়গায় করার সময় ২৬টি বিতরণ এলাকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বাড়তি গ্রাহক থাকার কথা জানা গেছে। এত বড় সংখ্যক গ্রাহকের হিসেব তিতাসের কাছে না থাকাটা কতটা যৌক্তিক জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনতো বাস্তবতা এই রকমই দেখা যাচ্ছে। নাকি অবৈধভাবে সংযোগ দিয়ে এখন সংখ্যা বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবৈধভাবে সংযোগ দেয়া সম্ভব নয়, কারণ অনেকগুলো ধাপ অতিক্রম করতে হয়। তবে এ বিষয়ে এখনও তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে এর আগেও তিতাসের হিসেব নাম্বারে কয়েক শ’ কোটি টাকা জমা পড়েছিল গ্রাহকের বিল হিসেবে। তখন এই কোম্পানিটির আর্থিক শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কেন একটি কোম্পানির একাউন্টে শত শত কোটি টাকা হিসেবের বাইরে জমা হয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও কারও বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পরে ধরা পড়ে তিতাসের এক শ্রেণীর কর্মকর্তাদের সহায়তায় যেসব অবৈধ সংযোগ দেয়া হয়েছে এই টাকা ওইসব গ্রাহক জমা দিয়েছে। কোম্পানিটি বার্ষিক প্রতিবেদনে বলছে, সিএনজিতে গত অর্থবছরে তাদের সংযোগ ছিল ৩৩৩ এবার যা ৩৩৩ই রয়েছে। বাণিজ্যিক এ ১০ হাজার ৯১৭ থেকে ২টি বেড়ে ১০ হাজার ৯১৯টি, ক্যাপটিভ এ এক হাজার ৮৫ এর স্থলে ১ হাজার ৮৮, বিদ্যুতে ৩৮ থেকে ৫টি বেড়ে ৪৩টি সংযোগ থাকার কথা বলা হয়েছে।
×