ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৩৯ বছরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: ১৯:৫৩, ২২ নভেম্বর ২০১৭

৩৯ বছরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

আসিফ খান ॥ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চালের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। স্বাধীনতা পরবর্তী প্রতিষ্ঠিত প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এটি। প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৭৯ সালের ২২ নবেম্বর কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জেলার মধ্যবর্তী স্থান শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুরে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর ২২ নবেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ তম জন্মদিন। আর্ন্তজাতিক মানের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হলেও সে লক্ষ্য এখনও অর্জন করতে পারেনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৭৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হলেও এর কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির মাধ্যমে। দুইটি অনুষদের অধিনে ৪ টি বিভাগে ৩ শত শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বিভাগ চারটি হল থিওলজি অনুষদের অধিনে আল-কুরআন এ্যন্ড ইসলামিক স্টাডিজ, দাওয়াহ এ্যন্ড ইসলামিক স্টাডিজ এবং সমাজিকবিজ্ঞান অনুষদের অধিনে হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি, ব্যাবস্থাপন বিভাগ। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৫ টি অনুষদের অধিনে ২৫ টি বিভাগ রয়েছে। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন ৮ টি বিভাগের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। এ ৮ টি বিভাগ নিয়ে বর্তমানে বিভাগের সংখ্যা ৩৩ টি। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আছে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী। ইসলাম শিক্ষার সাথে সমন্বয় রেখে আধুনিক শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। শিক্ষা ও গবেষণায় দেশের পাশাপাশি বিদেশেও রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুনাম। শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অর্জনেও রয়েছে সফলতা। বর্তমানে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল চাম্পিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। ক্রিকেট, টেনিস, অ্যাথলেটিক, বেডমিন্টন, চাকতি নিক্ষেপসহ বিভিন্ন ক্রিড়া প্রতিযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রয়েছে অনেক অর্জন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আবাসনে আবাসিক হল রয়েছে মোট ৮ টি। এরমধ্যে ৫ টি ছাত্র হল এবং ৩ টি ছাত্রী হল। ছাত্রদের জন্য রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, সাদ্দাম হোসেন হল, শহীদ জিয়াউর রহমান হল, লালন শাহ হল, শেখ রাসেল হল এবং ছাত্রীদের জন্য রয়েছে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, শেখ হাসিনা হল, খালেদা জিয়া হল। এছাড়া দেশের ক্যাম্পাস ভিত্তিক সবচেয়ে বড় শহীদ মিনার ইবি ক্যাম্পাসেই অবস্থিত। ক্যাম্পাস ভিত্তিক সবচেয়ে বড় মসজিদও রয়েছে এখানে (নির্মান কাজ শেষ হলে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম মসজিদ)। এদিকে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিচ্ছবি হিসেবে রয়েছে স্মৃতিসৌধ এবং মুক্ত বাংলা ভাষ্কর্য। নির্মাণাধীন রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুরাল। এছাড়াও রয়েছে ১২০০ আসন বিশিষ্ট সম্পূর্ন শীততাপ নিয়ন্ত্রীত বীরশ্রেষ্ট হামিদুর রহমান মিলনায়তন। বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু নানা প্রতিকুলতার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি তার মূল লক্ষে পৌঁছতে সক্ষম হয়নি। বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। বিশ্ববিদ্যায়ের ভিসি অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় একটি প্রান্তিক বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে স্থানগতসহ অনেক সমস্যার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রসর হচ্ছে। বর্তমানে একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কাজে গতির সঞ্চালন হয়েছে। আশা করছি নিকট ভবিষ্যতে আমাদের লক্ষে পৌঁছতে পারব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলে যদি আন্তরিকতার সাথে কাজ করে তবে এটিকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় করা সম্ভব।’
×