ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কোহলির গর্ব কোহলির রোমাঞ্চ

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কোহলির গর্ব কোহলির রোমাঞ্চ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিরাট কোহলি যেন ‘বর্ন টু ক্যাপ্টেন’। নেতৃত্ব দেয়ার জন্যই জন্ম। ২০১৫ বিশ্বকাপের আগে যখন টেস্ট অধিনায়কের দায়িত্ব পান বয়স মাত্র ২৬। অনেকে ভেবেছিলেন এত বড় ক্রিকেটপাগল জাতির চাপ সামলাতে গিয়ে ব্যাটিংটাই না নষ্ট হয়ে যায়। অথচ এরই মাঝে রঙিন পোশাকের দায়িত্ব পেয়েছেন। দুই ভূমিকাতেই তিন ভার্সনে সমান সফল। ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, বাংলাদেশের বিপক্ষে সাফল্যের পর দু’বার শ্রীলঙ্কা সফর, একবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ওয়ানডে কি টেস্ট সমানে জিতে চলেছেন। ব্যাট হাতেও রানের বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন। এবার শ্রীলঙ্কা সফরে প্রতিটি সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করেছেন, টেস্টে ৩-০, ওয়ানডেতে ৫-০ আর টি২০তে ১-০। ক্রিকেট ইতিহাসে এমন ঘটনার মাত্র দ্বিতীয় উদাহরণ এটি। তবে ব্যক্তিগত রেকর্ড নয়, নেতৃত্বের গর্ব আর খেলাটির প্রতি অসম্ভব ভালবাসাই কোহলির কাছে সব। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে দেয়া বিশেষ সাক্ষাতকারে এমনটাই জানিয়েছেন ওয়ানডেতে দ্রুত ৩০ সেঞ্চুরির রেকর্ডগড়া সুপার এই উইলোবাজ। ‘তিন ফরমেটে অধিনায়কত্বের অনুভূতি অনেকটাই আলাদা। আগে যখন টেস্টের দায়িত্বে ছিলাম শুধু টেস্ট নিয়ে ভাবলেই চলত। এখন আলাদা আলাদা পরিকল্পনা করতে হয়। ব্যক্তিগতভাবে ব্যাটসম্যান হিসেবে কি করতে চান, সেই সময় খুব একটা হাতে থাকবে না। সবকিছু নিয়ে ভাবতে হবে এবং তার মধ্যে থেকেই সাফল্যের রাস্তা খুঁজে বের করতে হবে। এটাই চ্যালেঞ্জ আর আমি তাতে বেশ রোমাঞ্চও অনুভব করছি। ক্যারিয়ারে একটা নির্দিষ্ট সময় কাটানোর পর এটা একটা নতুন চ্যালেঞ্জ। আর আমি চ্যালেঞ্জকে শুধু মোকাবেলাই করতে চাইনি, বুকে জড়িয়ে নিতে চেয়েছি বরাবর। কিভাবে কোন কঠিন কাজ করা যায়, সেটা আমি আবিষ্কার করতে ভালবাসি। খুব গর্বিতও বোধ করি যে, আমাকে ক্রিকেটপাগল জাতি ভারতের মতো একটি দেশের অধিনায়কত্বের গুরুদায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’ যার কাছ থেকে দায়িত্ব পেয়েছেন রঙিন পোশাকে এখনও সতীর্থ হিসেবে আছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। কোহলি বলেন, ‘আমি এমএসডি’কে খুব মন দিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছি।’ পূর্বসূরি সফল অধিনায়ক প্রসঙ্গে কোহলি আরও যোগ করেন, ‘আমি মন দিয়ে ধোনির কথা শুনেছি। কত বছর ধরে এমএস এই চাপটা সামলেছে। মাঝে-মধ্যে মনে হবে সত্যি এটা একটা অন্য ধরনের কাজ। নিজে খেলোয়াড় হিসেবে যা করতাম, তারচেয়ে অনেক আলাদা। এক এক সময় ভারাক্রান্তও লাগতে পারে। তবু আমি মনে করি দায়িত্ব জীবনের একটা দারুণ ব্যাপার। দায়িত্ব ছাড়া পরিণত হওয়া যায় না। শেখা যায় না। বেড়ে ওঠা যায় না। যত বড় দায়িত্ব তত বড় পরীক্ষা। আমার মনে হয় ঈশ্বর দায়িত্ব দিয়ে পরীক্ষা নিতে চান, এই লোকটা কত শক্তিশালী।’ শ্রীলঙ্কা সফরে এবার স্বাগতিকদের টেস্ট, ওয়ানডে ও টি২০ মিলিয়ে ৯-০তে হারিয়েছে কোহলির ভারত। প্রতিপক্ষকে এক সিরিজের প্রতিটি ভার্সনে হোয়াইটওয়াশের মাত্র দ্বিতীয় ঘটনা এটি। এর আগে অস্ট্রেলিয়া যে কীর্তি গড়েছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। ব্যাট হাতে, নেতৃত্বে একের পর এক রেকর্ড গুঁড়িয়ে এগিয়ে চলেছে তার রথ। সমসাময়িক বিশ্বের অন্যতম সেরা তো বটেই, শচীন টেন্ডুলকর, স্যার ভিভ রিচার্ডস, রিকি পন্টিংদের মতো গ্রেটদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সর্বকালের সেরাদের দৌড়েও ঢুকে পড়েছেন। কোহলি আসলেই অন্য ধাতুতে গড়া, বিরল প্রজাতির ক্রিকেটার।
×