ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উচ্ছ্বসিত কৃষক, চাহিদা দিন দিন বাড়ছে

‘নেরিকা’ ধান চাষে অভাবনীয় সাফল্য

প্রকাশিত: ০৬:২২, ৩১ আগস্ট ২০১৭

‘নেরিকা’ ধান চাষে অভাবনীয় সাফল্য

জাহেদুল আনোয়ার চৌধুরী, সীতাকুন্ড ॥ চট্টগ্রামের সীতাকু-ে আফ্রিকান ‘নেরিকা’ প্রজাতির ধান চাষে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে কৃষকরা। খরা মৌসুমে বন্যা সহিষ্ণু উচ্চফলনশীল ‘নেরকিা’ প্রজাতির ধান চাষ করে সীতাকু-ের কৃষকরা উচ্ছ্বসিত, এর চাহিদা বাড়ছে এ অঞ্চলে দিন দিন। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারাও এ ধানে কৃষক লাভবান হওয়ায় সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে দ্বিগুণ। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী নিজেই এই ‘নেরিকা’ প্রজাতির ধানের বীজ আফ্রিকা থেকে নিয়ে আসেন এবং বাংলাদেশের কৃষি বিভাগকে এ ধান চাষে কৃষকদের উদ্বৃত্ব করতে অনুরোধ জানান। ইতিমধ্যে কৃষকরাও এই ধান চাষে অভাবনীয় সাফল্য পাওয়ায় দিন দিন এর চাহিদা বাড়ছে। রবিবার সকালে গিয়ে দেখা যায় কৃষকরা জমিতে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারাও কৃষকের ধান কাটা পরিদর্শন করতে কৃষকের ধারে ধারে যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছর আগে বর্তমান কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী প্রথম ‘নেরিকা’ প্রজাতির ধানের বীজ আনে আফ্রিকা থেকে। এরপর বাংলাদেশের কৃষি বিভাগকে নির্দেশ প্রদান করেন প্রতিটি উপজেলায় এই নেরিকা ধান চাষে কৃষকদের উদ্বৃত্ব করতে। এরই ধারাবাহিকতায় সীতাকু- উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নে প্রথম বছর ৫০ জন কৃষককে বাছাই করে তাদেরকে সরকারীভাবে ১০ কেজি উচ্চ ফলনশীল নেরিকা প্রজাতি ধানের বীজ, ২০ কেজি ইউরিয়া সার, ডিএসপি ১০ কেজি, এমওপি সার ১০ কেজি ও চাষাবাদ এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নগদ ৮০০ টাকা প্রদান করা হয়। কৃষি বিভাগের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেয়ে সংশ্লিষ্ট কৃষকরা তাদের জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে নেরিকা প্রজাতির ধানের চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে। যার দরুন এই উচ্চফলনশীল প্রজাতির ধান চাষে কৃষকদের দিন দিন চাহিদা বাড়ছে। বর্তমানে উপজেলায় উচ্চফলনশীল এই নেরিকা প্রজাতির ধান চাষ করছে ৭০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১০০ অধিক কৃষক। বৃষ্টিপাত কম হলেও খরা মৌসুমে এই নেরিকা প্রজাতির ধান হেক্টর প্রতি প্রায় ২.৬ মেট্রিক টন চাল উৎপাদিত হয়ে থাকে। কৃষি বিভাগ এবার ১০০ অধিক কৃষককে সরকারিভাবে নেরিকা প্রজাতির ধানের বীজ, নগদ টাকা ও বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করেন। এখন ধান কাটার মৌসুম। ধানের ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকরা ও কৃষি বিভাগ খুশি। সরেজমিনে উপজেলার বারৈয়াঢালার টেরিয়াইল ব্লকের কৃষক আবদুল মান্নানের জমিতে গিয়ে দেখা যায়,কৃষক মান্নান কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ধান কাটা শুরু করেছে,ধান হাতে নিয়ে খুশি কৃষক, আর উচ্চ ফলনে সফল হওয়ায় আনন্দিত কৃষি কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে বারৈয়াঢালা ব্লকের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা পিপাষ কান্তি চৌধুরী বলেন, বারৈয়াঢালার আবদুল মান্নানসহ আরও যারা কৃষক রয়েছেন তারা অত্যাধিক পরিশ্রমী। এখানে কৃষক পরিবারগুলো রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম করে তাদের ক্ষেতে ফসল ফলায়। কৃষিতে তারা আগেও সফলতার সঙ্গে কাজ করত। বর্তমানে গত কয়েকবছর থেকে নেরিকা প্রজাতির ধান চাষ করেও তারা অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। প্রথমবার চাষে একটু চিন্তিত থাকলেও এখন উচ্চ ফলনশীল নেরিক প্রজাতির ধান চাষে কৃষকরা খুশি।
×