ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবাসী প্রেমিকের হাতিয়ে নেয়া টাকায় মিতু এখন কোটিপতি

প্রকাশিত: ২২:০৮, ২৬ জুলাই ২০১৭

প্রবাসী প্রেমিকের হাতিয়ে নেয়া টাকায় মিতু এখন কোটিপতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া ॥ গৃহবধূ হনুফার স্বামীকে খুঁজে বের করার কথা বলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কলাপাড়ার নিশানবাড়িয়া গ্রামের মোসাম্মৎ মিতু আক্তার এখন কোটিপতি বনে গেছেন। হনুফা বেগমের স্বামী ফারুকের বিদেশ থেকে পাঠানো প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। এমনকি মিতুর মা আয়শা খাতুন নিজেকে রাজিয়া পরিচয় দিয়ে ব্যাংকে একাউন্ট খুলে মা-মেয়ে এ টাকা হাতিয়ে নেয়। জনতা ব্যাংক আমতলী শাখা থেকে এমন লেনদেন করতে মিতুর মা আয়শা খাতুনের ধর্ম ভাই মাহবুব নামের এক ব্যক্তির যোগসাজশে প্রায় কোটি টাকা ভাগাভাগির ঘটনাটি ঘটে। মিতু ৬০ লাখ টাকা প্রথমে খেপুপাড়া অগ্রনী ব্যাংকে জামা করেন। পরবর্তীতে ইসলামি ব্যাংক কলাপাড়া শাখায় ওই টাকা ট্রান্সফার করে নেয়। এ বছরের মে মাসের ৩ তারিখে মিতু এবং তার মা আয়শা বেগম স্বেচ্ছায় আমতলী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেয়া তাদের স্বীকারোক্তীতে এমনসব জালিয়াতির তথ্য বের হয়ে এসেছে। বরিশালের পাতারহাট থানার সৌদি প্রবাসী ফারুক সরদারের স্ত্রী হনুফা বেগমের দায়ের করা আমতলী থানায় তার স্বামীর কাছ থেকে পাঠানো টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রাজিয়া বেগমকেসহ দুইজনকে আসামী করে ১২ এপ্রিল একটি মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই রফিক তদন্ত করে মূল রহস্য বের করেন। বেরিয়ে আসে কোটি টাকার প্রতারণার কাহিনী। পুলিশ আসামি রাজিয়া বেগম ও তার মেয়ে মিতু আক্তারকে গ্রেফতার করলে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। পুলিশ ইতোমধ্যে ইসলামী ব্যাংক কলাপাড়া শাখার মিতুর হিসাবে জমাকৃত ৬০ লাখ টাকার খবর পেয়েছে বলে ব্যাংক সুত্রে জানা গেছে। হনুফা বেগম জানান, তার স্বামী ফারুক সরদার জীবিকার প্রয়োজনে সৌদি আরবে অবস্থান করছে। কয়েকবছর আগে তার সঙ্গে প্রথমে আয়শা খাতুনের পরিচয় ঘটে। আয়শা হনুফাকে ধর্ম মেয়ে এবং ফারুককে ছেলে বলে সম্পর্ক গড়ায়। আয়শা মোবাইল ফোনে ফারুককে জানায় তার মেয়ে মিতু একজন চিকিৎসক। ওই মেয়েকে ফারুকের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার কথা বলে মিতুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ফারুকের। বরিশালে একটি ক্লিনিক দেয়ার প্রস্তাব দেয়। আমতলী জনতা ব্যাংকে আয়শা বেগম রাজিয়া নাম দিয়ে একাউন্ট খুলে ৬৬লক্ষাধিক টাকা এবং আয়শা বেগমের মেয়ে মিতু আক্তারের তিনটি মোবাইলের মাধ্যমে ২৬ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়। বর্তমানে এসব আসামীরা জামিনে রয়েছেন। মামলাটি বর্তমানে সিআইডি পুলিশে হস্তান্তরিত হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা, বরগুনা সিআইডির পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত ওই মামলার নথি তার হাতে পৌছেনি। বর্তমানে অন্যের হাতিয়ে নেয়া টাকায় কোটিপতি বনে যাওয়া মিতু ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রভাবে এলাকার সাধারণ মানুষ অনেকটা সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। কলাপাড়া থানার ওসি জিএম শাহনেওয়াজ জানান, কাউকে হয়রানির অভিযোগ দেয়া হলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×