ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে দেশী শাড়ির চাহিদা বেশি

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২১ জুন ২০১৭

যশোরে দেশী শাড়ির চাহিদা বেশি

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ শাড়িতে নারী। শাড়ি না পরলে নারীকে মানায় না। যেন সাজগোজ অপরিপূর্ণ থেকে যায়। বাঙালী নারীর মানানসই একমাত্র শাড়ি। সময়ের প্রেক্ষাপটে বাঙালী নারীর মধ্যে এসেছে নানা সাজ, বিভিন্ন রূপ। তবু শাড়িতেই যেন সবচেয়ে সুন্দর নারী। শাড়ি সব বয়সী নারীর সবচেয়ে পছন্দের। উৎসব বা সামাজিক-সাংস্কৃতিক যে অনুষ্ঠানই হোক না কেন তাদের শাড়ি চাই। কারণ শাড়ি যে বাঙালীয়ানার পরিচয়। শাড়ি পছন্দ নয়, এমন বাঙালী নারী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। সাজগোজের পূর্ণতা পেতেই এই বস্ত্রটিকেই তারা বেছে নেয়। যে কোন উৎসবে শাড়ি তো থাকতেই হবে। ঈদ-উল-ফিতরে যত কেনাকাটাই হোক না কেন, অনেক বাঙালী নারী ভাবেন শাড়ি ছাড়া ঈদের সওদা অপূর্ণই থেকে যায়। নতুন প্রজন্মের আধুনিক পোশাকে পাশ্চাত্যের ছোঁয়া থাকলেও নারীদের পছন্দের শীর্ষে শাড়ি। যশোরে ঈদ বাজারের শেষের দিকে শাড়ির দোকানে তরুণীসহ সব বয়সী নারীর উপচেপড়া ভিড় শাড়ির বিপুল চাহিদারই যেন প্রতিধ্বনি। তরুণী থেকে শুরু করে মধ্য বয়সীদের আনাগোনায় জমজমাট যশোরের বাজার ও শপিংমলগুলোর শাড়ির দোকান। দেশী তাঁত, জামদানি, টাঙ্গাইল শাড়ির পাশাপাশি সিল্ক, কাতানও বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশী শাড়ির চাহিদা বেশি। গুণগত মান, দামে সহনীয় বলে দেশী শাড়ির দিকে ঝুঁকছেন সকলে। এ বছর ভারতীয় শাড়ির চাহিদা তেমন নেই। যে সব দোকানীরা ভারতীয় শাড়ি এনেছেন তারা পড়েছেন বিপদে। তাদের বক্তব্য ভিসা সহজ হওয়ায় ভারতের কলকাতায় গিয়ে শপিং করছেন বেশিরভাগ ক্রেতা। রংপুর নিজস্ব সংবাদদাতা রংপুর থেকে জানান, ঈদ বাজারে এবার দেশী কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। এরই মধ্যে শহরের মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে চলছে গভীর রাত পর্যন্ত ঈদের কেনাকাটা। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নি¤œবিত্ত, খেটে খাওয়া মানুষ সাধ্যমতো ঈদের কেনাকাটা করছেন। প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জ থেকে ঈদের বাজার করতে রংপুর শহরে আসা মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো। বড় বড় বিপণিবিতানের পাশাপাশি ফুটপাথের দোকানগুলোতেও মানুষের ঢল নেমেছে। ফুটপাথের দোকানগুলোতে সাধারণত রিক্সাচালক, দিনমজুরসহ সাধারণ মানুষের ভিড় বেশি। শহরের সালেক মার্কেট, স্টেশন মার্কেট, জামাল মার্কেট, হনুমানতলা মার্কেটে মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের সংখ্যাই বেশি। জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট, মায়া ফ্যাশন হাউস, গোল্ডেন টাওয়ার বিপণিবিতান, রজনীগন্ধা, শাহ আমানত, জাহাজ কোম্পানি শপিং কমপ্লেক্স, কারুপণ্য, সিটি প্লাজা, মতি প্লাজাসহ বড় বড় বিপণিবিতানে উচ্চ আয়ের মানুষ কেনাকাটার জন্য ভিড় করছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এবারে ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ দেশী পোশাক। এসব বিপণিবিতানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত মানুষ। বড় বড় বিপণিবিতানের শোরুমগুলোতে বাছাই করা পোশাক শোভা পাচ্ছে । কাওছার জামান ও বেবি জামান নামে দুই ক্রেতা জানান, অভিজাত মার্কেটগুলোতে পণ্যের দাম কিছুটা বেশি। প্যান্ট, শার্ট, থ্রিপিস, শাড়ি ও তৈরি পোশাকসহ সব পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা বেশি। শহরের কম দামের পোশাকের মার্কেট হিসেবে পরিচিত হনুমানতলায় ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ওই মার্কেটে কথা হয় রিক্সাচালক লোকমানের সঙ্গে। তিনি জানান, রিক্সা চালানোর দুই দিনের আয় ৫০০ টাকা দিয়ে দুই মেয়ে ও এক ছেলের জন্য ঈদের পোশাক কিনেছেন। স্ত্রীর জন্য দু’দিন পর শাড়ি ও স্যান্ডেল কিনবেন। তিনি জানান, এবার পোশাকের দাম বেশি। তাই নিজের জন্য কিছু না কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বরিশাল স্টাফ রিপোর্টার বরিশাল থেকে জানান, ঈদের আগে পছন্দের পোশাক ক্রয়ের জন্য বরিশালের ক্রেতারা ছুটছেন মার্কেটে। গত দুইদিনের অবিরাম বর্ষণেও থামাতে পারেনি ক্রেতাদের। তবে এ বছরই কেবল রুচি পরিবর্তন হয়ে বরিশালের ক্রেতারা নির্ধারিত পোশাকের দোকানের পাশাপাশি ভিড় করছেন ব্র্যান্ডের পোশাকের শো-রুমগুলো। নির্ধারিত পোশাকের দোকানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্র্যান্ডের শোরুমেও বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে বরিশালে নিয়মিত কোন না কোন ব্র্যান্ডের পোশাকের শো-রুমের দ্বার খোলা হচ্ছে। তবে এ বছরই কেবল কদর বেড়েছে এসব ব্র্যান্ডের পোশাকের। এরই মধ্যে নগরীর রিচম্যান, ক্যাটস্ আই, ইজি, টেক্সমার্ট, স্মার্টেক্স, রেমন্ড, ব্যাঙ, হাইক, চন্দ্রবিন্দু, পারফেক্ট, প্রাইডসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করেছে। বরিশালে প্রাইডের শো-রুম অনেক আগে আসলেও ২০১১ সালে আগমন ঘটে পোশাকের ব্র্যান্ড ব্যাঙের। এরপর থেকে প্রতিবছর কোন না কোন ব্র্যান্ডের পোশাকের শো-রুম যাত্রা শুরু করছে। শো-রুমগুলোকে ঘিরে বরিশালের ঈদ বাজারের বিক্রির ধরনও পরিবর্তন এসেছে। সূত্রমতে, নামকরা নির্ধারিত মূল্যের পোশাকের দোকানগুলো যেখানে মুখথুবড়ে পড়েছে সেখানে ব্র্যান্ডের পোশাকের বিক্রি অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। নগরীর চকবাজার, কাটপট্টি, ফজলুল হক এভিনিউয়ে পোশাকের দোকানগুলোতে দেখা গেছে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।
×