ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মুখর রাজধানী

জমজমাট বিপণিবিতান উৎসবমুখর পরিবেশে কেনাকাটা

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ১২ জুন ২০১৭

জমজমাট বিপণিবিতান উৎসবমুখর পরিবেশে কেনাকাটা

জনকণ্ঠ ফিচার ॥ ঈদের এখনও বাকি। অনেক বাকি। তবে কেনাকাটা দেখে সেটি বোঝার কোন উপায় নেই। ঢাকার সব শপিংমল বিপণিবিতান বিয়ে বাড়ির মতো করে সাজানো। সন্ধ্যা হতেই জ্বলে উঠছে নানা রঙের মরিচবাতি। ক্রেতাকে আকর্ষণ করতে আরও কত শত আয়োজন! অবশ্য ক্রেতার নিজেরও কম নয় আগ্রহ। নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটছেন। কেউ কেউ সকালে ঘর থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন। তার পর এই মার্কেট। ওই শপিংমল। অসহনীয় গরম এড়াতে কেউ কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায় বের হচ্ছেন। এভাবে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কেনাকাটা। ঈদের অনেক আগেই উৎসবের একটা আবহ তৈরি হয়ে গেছে। প্রতি বছরের মতো এবারও আগেভাগে নতুন জামা কাপড়ের পসরা সাজিয়েছিলেন দোকানিরা। রোজার একেবারে শুরুর দিনটি থেকেই বাহারি রং ও ডিজাইনের পোশাকে ভরে উঠেছিল শোরুমগুলো। ক্রেতা পেতেও সময় লাগেনি। প্রথম দফা কেনাকাটা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। যারা আগেভাগে ঢাকা ছেড়ে গেছেন তারা ছিলেন ওই মুহূর্তের ক্রেতা। আর এখন তো মূল সময়। প্রায় সবাই ব্যস্ত পোশাক কেনাকাটায়। ঈদে ছেলেদের পাঞ্জাবি চাই। মেয়েদের চাই শাড়ি। থ্রিপিস। এগুলো দিয়েই শুরু হয়েছে শপিং। বসুন্ধরা শপিংমল, যমুনা ফিউচার পার্ক, গুলশানের শপার্স ওয়ার্ল্ড, এলিফ্যান্ট রোড, বেইলী রোড, নিউ মার্কেট, গাউছিয়া থেকে শুরু করে অলি গলি ফুটপাথে চলছে উৎসবমুখর কেনাকাটা। তবে ঈদের কেনাকাটায় বিশেষভাবে আলোচিত বসুন্ধরা সিটি শপিংমল। রবিবার দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সব বয়সী মানুষের সরব উপস্থিতি। অনেকগুলো প্রবেশ পথ। তবু লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে শপিংমলে প্রবেশ করছিলেন ক্রেতা। লিফট এবং চলন্ত সিঁড়িতেও গায়ে গা লাগা অবস্থা। মূল শ্রোতটি চলে যাচ্ছিল পোশাকের বিখ্যাত শোরুমগুলোর দিকে। আড়ংয়ের প্রতি বরাবরই আকর্ষণ। দেশীয় ব্র্যান্ডের নতুন আউটলেট এরই মাঝে ক্রেতাদের প্রিয় ঠিকানা হয়ে উঠেছে। আলাদা আলাদা ফ্লোরে সাজানো হয়েছে পাঞ্জাবি ও থ্রিপিস। দুটো ফ্লোরে দাঁড়ানোর জায়গা করে নেয়া মুস্কিল হয়ে যাচ্ছিল। এত ভিড়! বিদেশী ব্র্যান্ডের শোরুমগুলোতে উপচে পড়া ভিড় নেই। তবে বিক্রি ভাল। প্রতিটিতেই ওয়েস্টার্ন ঢংয়ে তৈরি পোশাক সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ইনফিনিটি, ক্যাটস আই, ফ্রিল্যান্ড, এক্সট্যাসি, ম্যানজক্লাবসহ কয়েকটি ব্র্যান্ডের শোরুমে ক্রেতাদের নিয়মিত যাতায়াত। ঈদেও অভিন্ন দৃশ্য দেখা গেল। বিশালায়তন শোরুমগুলোতে পোশাকের বিপুল সম্ভার। নারী-পুরুষ এবং শিশুদের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। চড়া দাম। তবে এ জন্য বিক্রি থেমে নেই। বরং ক্যাশ কাউন্টারের হুড়োহুড়ি অবস্থা। পাঞ্জাবির ক্রেতারা বিশেষ ভিড় করেছিলেন লুবনানের শোরুমে। ভারত থেকে আমদানি করা গর্জিয়াস পাঞ্জাবি এখানে। অধিকাংশই শেরওয়ানির মতো দেখতে। তরুণরা খুব আগ্রহ নিয়ে দেখছিলেন। কিনছিলেন। লুবনানের ম্যানেজার রাজু জানালেন, অনেকগুলো ডিজাইন এরই মাঝে শেষ হয়ে গেছে। এখন কোন পাঞ্জাবি পছন্দ হলে কেউ আর রেখে যাচ্ছেন না। কারণ তারা জানেন, দ্বিতীয়বার এসে পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। আলাদা করে বলতে হয় ‘দেশী দশ’-এর কথা। দেশীয় দশটি ফ্যাশন হাউস এখানে একত্রে পোশাক প্রদর্শন করছে। ঐতিহ্য ও আধুনিক রুচির সুন্দর সমন্বয় ঘটিয়েছেন উদ্যোক্তারা। শৌখিন ক্রেতারা তাই এখান থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ফ্যাশন হাউস দেশাল-এর শোরুমের দায়িত্বে থাকা রোজারিও বলেন, আমরা দেশী কাপড়ে কাজ করি। রুচিশীল ডিজাইন ক্রেতাদের উপহার দিতে চাই। সবক’টি ফ্যাশন হাউসের কাজের এটি প্রথম শর্ত। এ কারণেই দেশী দশের পোশাকের বিক্রি ভাল বলে জানান তিনি।
×