ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইউরো পাউন্ডের দরপতনে ভর্তুকি চান উদ্যোক্তারা

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ইউরো পাউন্ডের দরপতনে ভর্তুকি চান উদ্যোক্তারা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পোশাকশিল্প মালিকরা পণ্য রফতানি করে আয় দেশে না এনে বিদেশে রাখছেন। সম্প্রতিক এনবিআর চেয়ারম্যানের এমন মন্তব্যের পর জরুরী সংবাদ সম্মেলনে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএয়ের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, সরকারের উচ্চপর্যায়ের একজন ব্যক্তি যখন গুরুত্বপূর্ণ শিল্প নিয়ে এ রকম ঢালাও মন্তব্য করেন, সেটি আমাদের পীড়া দেয়। তার এই বক্তব্য আমাদের আহত করেছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, যদি কোন ব্যক্তি অসৎ কাজ করেন, তাহলে কাস্টমস ও এনবিআর সুষ্ঠু তদন্ত করে সেই ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনছে না কেন? কেন তার মুখোশ উন্মোচন করছে না? তৈরি পোশাক আমদানি ও রফতানির তথ্য কাস্টমস ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আছে জানিয়ে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তথ্যের সমন্বয় করে অনিয়ম ধরা সম্ভব। ফলে কাস্টমস ও বাংলাদেশ ব্যাংক চাইলে সুষ্ঠু তদন্ত করে অসৎ ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় আনতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিজিএমইএ কখনই তার বিষয়ে কোন সুপারিশ করবে না। এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যানের মন্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এটি অব্যাহত থাকলে আমাদের দ্বিতীয় প্রজন্ম এ ব্যবসায় আসবে না এটি হলফ করেই বলা যায়। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বিজিএমইএয়ের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি এসএম মান্নান ও মোহাম্মদ নাছির, পরিচালক মিরান আলী, মুনির হোসেন, শহীদুল হক প্রমুখ। প্রসঙ্গত, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের একটি বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজিএমইএয়ের সভাপতি এ মন্তব্য করেন। গত সোমবার একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেছেন, একজন কারখানার মালিক ২৪৭ কনটেনার পোশাক রফতানি করেছেন, কিন্তু এর বিপরীতে একটি ডলারও দেশে আসেনি। তাহলে পোশাক রফতানি থেকে আয় করা বৈদেশিক মুদ্রা গেল কোথায়? সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বাজারে পোশাক রফতানি কমে যাওয়ার চিত্র তুলে ধরে সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে ধরেন বিজিএমইএয়ের সভাপতি। দাবির মধ্যে রয়েছে পোশাক খাতের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের কাছাকাছি দুটি শিল্প এলাকা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানা স্থানান্তর ও সংস্কারের জন্য বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন, ইউরো ও পাউন্ডের দরপতন মোকাবেলায় ব্যাংক সুদের ওপর বিশেষ ভর্তুকি ইত্যাদি। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, মুদ্রানীতিটি পূর্বের মুদ্রানীতির (জুলাই-ডিসেম্বর ২০১৬-১৭ অর্থবছর) পুনঃসংস্করণ বলা যায়। গত অর্থবছরের অর্জিত ৭.১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির ধারা ধরে রেখে চলতি অর্থবছরের ৭.২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আশাব্যঞ্জক সাফল্য অব্যাহত রাখা বর্তমান মুদ্রানীতির মূল লক্ষ্য হিসেবে দৃশ্যমান হয়েছে। তাই আগের মতোই রক্ষণশীল মুদ্রানীতি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে রফতানি খাতের প্রতিযোগী সক্ষমতা বিষয়ে বিশেষ করে মুদ্রা বিনিময় হার রফতানি খাতগুলোর জন্য আরও সহায়ক করা এবং সাম্প্রতিক বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জসমূহ যেমনÑ ব্রেক্সিট পরবর্তী পাউন্ডের মূল্য পতনের ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলা বিষয়ে যথেষ্ট দিক নির্দেশনা নেই। তিনি বলেন, প্রতিযোগী দেশগুলোর মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও ইউরো এবং পাউন্ডের দরপতন মোকাবেলায় ব্যাংক সুদের উপর বিশেষ ভর্তুকি প্রদান করলেও উদ্যোক্তারা কিছুটা স্বস্তি পাবে।
×