ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

না’গঞ্জ সিটি নির্বাচনে ইসির সম্ভাব্য ব্যয় ৫ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৬ নভেম্বর ২০১৬

না’গঞ্জ সিটি নির্বাচনে  ইসির সম্ভাব্য ব্যয়  ৫ কোটি টাকা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইসির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি টাকা। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচন পরিচালনা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা খাতে এ ব্যয় করা হবে। তবে জানা গেছে, বেশিরভাগ ব্যয় করা হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট বাহিনীর পেছনে। এর বাইরেও নির্বাচনী কর্মকর্তা বিশেষ করে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারসহ অন্য কর্মকর্তাদের ভাতা ও অন্যান্য খরচ বাবদ এ ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রয়োজনে এ ব্যয় বাড়ানো বা কমানো হতে পারে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমার কাজ শেষ করেছেন। আজ শনিবার রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়নপত্র বাছাই করবেন। নির্বাচনে আওয়ামী প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভী ও বিএনপি প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানসহ বিভিন্ন দলের ৯ জন মেয়র প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়া কাউন্সিলর পদে ১৭৫ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা পদে ৩৫ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হবে তারা তিন দিনের মধ্যে আপীল করতে পারবেন। বাছাই শেষে আগামী ৫ জানুয়ারি প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রতীক বরাদ্দ নিয়েই প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারে নামবেন। এদিকে নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী একজন মেয়র প্রার্থী এ নির্বাচনে ১৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন। দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন হওয়ায় দল থেকেও তাকে অনুদান দিতে পারবে। বিধি অনুযায়ী একটি রাজনৈদিক দল তার প্রার্থীর পক্ষে ৫ লাখ টাকা অনুদান দিতে পারবে। তবে ২০ হাজার টাকার বেশি অনুদান দিতে হলে তাকে চেকের মাধ্যমে দিতে হবে। বিধি লঙ্ঘনের রাজনৈতিক দলের জন্য জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। বিধি লঙ্ঘনে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। এছাড়া এ নির্বাচনে একজন কাউন্সিলর প্রার্থী তার নির্বাচনী ব্যয়ের জন্য ১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকার পর্যন্ত খরচ করতে পারবেন। তবে বিধি অনুযায়ী একজন প্রার্থীর তার সব ধরনের নির্বাচনী ব্যয় সংরক্ষণ করতে হবে। তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ের জন্য আলাদা ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। সব নির্বাচনী ব্যয় নতুন এ্যাকাউন্ট থেকে করতে হবে। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর সব আয় ও ব্যয় সংক্রান্ত হিসাব দাখিল করতে হবে। এমনকি নির্বাচনে খরচ হিসাবে দানের টাকার হিসাবও সংরক্ষণ করার কথা বলা হয়েছে। নির্বাচন শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে প্রার্থীর ব্যয়ের বিবরণী নির্বাচন কমিশনে দাখিল করতে হবে। এমনিভাবে কোন রাজনৈতিক দল থেকে তার প্রার্থীকে কত টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে তার হিসাব যথাযথভাবে কমিশনে দাখিল করতে হবে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বাছাইয়ে যেসব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে ঘোষণা করা হবে, প্রত্যাহারের পর থেকে তারা কমিশনের বৈধ প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন। তাদের অনুকূলে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। রাজনৈতিক দলের জন্য ইসির নিবন্ধিত প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য কমিশনের নির্ধারিত প্রতীক বরাদ্দ দেয় হবে। প্রতীক নিয়েই তারা নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারবেন। তবে রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের জন্য প্রতীক নির্ধারিত থাকলেও অন্য প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের আগে কেউ নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারবেন না। প্রতীক বরাদ্দের পরই কেবল তারা প্রচারে নামতে পারবেন। এছাড়া একবার বৈধ বিবেচিত হওয়ার পর নির্বাচনের আগেই কোন প্রার্থীর মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্ট পদে নির্বাচন স্থগিত করে দেয়ার কথা কলা হয়েছে। বিশেষ করে মেয়র বা কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের আগে কোন প্রার্থীর মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্বাচন বাতিল করে দেবেন। কমিশনের নিকট হতে অবহিত হওয়ার পর পুনরায় রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করবেন। তবে বিধি অনুযায়ী নির্বাচনের আগে যারা বৈধ প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত ছিলেন তাদের পুনরায় মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে না। আগামী ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে নারায়গঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। ইতোমধ্যে নির্বাচনকে ঘিরে এলাকায় তৈরি হয়েছে নির্বাচনী আমেজ। সংশ্লিষ্টদের মতে, নির্বাচনে মেয়র পদে ৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মূলত আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের সঙ্গে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের। সেলিনা হায়াত আইভী গতবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করলেও এবার তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। অপরদিকে বিএনপির সাখাওয়াত হোসেন এবারই প্রথম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি বিএনপি প্রার্থী হলেও জানা গেছে বিএনপির কোন কমিটিতে তার নাম নেই। তবে বিএনপির তৃণমূল নেতাদের মতামততের ভিত্তিতে তাকে দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান ইসির বিদায়বেলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন তাদের জন্য একটি টেস্ট কেস। ইসির পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে এ নির্বাচনকে তারা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে তারা বদ্ধপরিকর।
×