ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সেন্টমার্টিন দ্বীপের চুনাপাথর বিলুপ্ত হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সেন্টমার্টিন দ্বীপের চুনাপাথর বিলুপ্ত হচ্ছে

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার থেকে ॥ নির্বিচারে উত্তোলনের ফলে দেশের প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক চুনাপাথর দিনদিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের মন মাতানো নিদর্শন, নারিকেল জিনজিরা নামে খ্যাত প্রবাল ও চুনাপাথরের জন্য বিখ্যাত বিশ্বের অন্যতম প্রবালদ্বীপ এই সেন্টমার্টিন। প্রতি বছর দেশী-বিদেশী বহু পর্যটক, শিক্ষার্থী ও ভিআইপি ভ্রমণে আসেন এখানে। এ সময় জাহাজ মালিক, হোটেল মালিক, স্থানীয়দের আয় উপার্জন বেড়ে যায়। সরকারেরও অর্জন হয় প্রচুর রাজস্ব। এ দ্বীপের বালিতে রয়েছে বহুমাত্রিক মূল্যবান খনিজ পদার্থ। গবেষকগণের মতে, দ্বীপটিকে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে প্রবাল, শৈবাল, চুনাপাথর ইত্যাদি প্রাকৃতিক বস্তুকণার গুরুত্ব অপরিহার্য। কিন্তু প্রবালদ্বীপ থেকে ক্রমে প্রবাল, কেয়াবন, চুনাপাথর ইত্যাদি বস্তু নির্বিচারে উত্তোলন এবং ধ্বংস করার ফলে বিলুপ্ত হতে চলেছে। যত্রতত্র হোটেল-মোটেল তৈরি করায় পরিবেশেরও চরম ব্যাঘাত ঘটছে। জানা গেছে, পুরো দ্বীপের মধ্যে বেশি চুনাপাথর রয়েছে দক্ষিণ ও পশ্চিম অংশে। পরিবেশ কর্মীদের চরম উদাসীনতার কারণে পরিবেশের এ করুণ অবস্থা বলে মনে করেন দ্বীপের বাসিন্দাগণ। দ্বীপে কোটি টাকা মূল্যের অবকাঠামো ভবন থাকলেও পরিবেশ কর্মীদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান নূর আহমদ বলেন, দ্বীপের সামগ্রিক ভারসাম্য রক্ষার্থে প্রবাল, চুনাপাথর, কেয়াবনের বিকল্প নেই। তিনি এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, চুনাপাথরের জন্য বিখ্যাত সেন্টমার্টিনে কিছু অসাধু ব্যক্তি চুনাপাথর উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। খবর পাওয়ামাত্র ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তা কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়ে থাকে। এদিকে টেকনাফ সেন্টমাটিন পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় শয়ে শয়ে পর্যটক টেকনাফে এসে ফিরে যাচ্ছে। কোরবানির পর অসংখ্য দেশী-বিদেশী পর্যটক সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য টেকনাফে এলেও সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় হতাশ হয়ে তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে। সেন্টমার্টিনের হোটেল-মোটেল মালিকগণ কোরবানির পর প্রতিবছরের ন্যায় পর্যটক আগমন ঘটবে প্রত্যাশায় তাদের হোটেল-মোটেলগুলো সাজিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন জাহাজ চলাচলের অনুমতি না দেয়ায় তাদের আশার গুড়ে বালি পড়েছে। পর্যটকবাহী জাহাজ ব্যবস্থাপক মোঃ শাহ আলম জানান, আমরা চলতি মৌসুমের কোরবানির পর থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটক নেয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। জাহাজ চলাচলের বিষয়ে অনুমতির জন্য টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আবেদন করেছি। কিন্তু অনুমতি পাওয়া যায়নি। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শফিউল আলম জানান, বর্তমানে সাগরের অবস্থা অনুকূলে নয়। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়ার দায়িত্ব হচ্ছে জেলা প্রশাসকের। জেলা থেকে অনুমতি পেলেই জাহাজ মালিকদের ডেকে জানিয়ে দেব।
×