ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

করমজল কুমির প্রজননকেন্দ্র

জুলিয়েট ও পিলপিলের ডিম থেকে ফুটেছে ৪৭ বাচ্চা

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৫ আগস্ট ২০১৬

জুলিয়েট ও পিলপিলের  ডিম থেকে ফুটেছে ৪৭ বাচ্চা

নিজস্ব সংবাদদাতা, মংলা, ১৪ আগস্ট ॥ সুন্দরবনের করমজল কুমির প্রজননকেন্দ্রে দুই কুমিরের ৪৭টি বাচ্চা ফুটেছে। প্রজননকেন্দ্রে মা কুমির জুলিয়েট ও পিলপিলের ডিম থেকে রবিবার সকালে এ বাচ্চাগুলো ফোটে। তবে ৫১টি ডিম নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন প্রজননকেন্দ্রের ইনচার্জ জাকির হোসেন। তিনি জানান, গত ১২ মে জুলিয়েট ৫০টি ও পিলপিল ৪৮ডিম দেয়। এর পর থেকে তার তত্ত্বাবধানে কেন্দ্রের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে সঠিক তাপ ও আর্দ্রতা, পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও আলোর ব্যবস্থা এবং পানি প্রবেশ করতে পারে না এমন পরিবেশে রাখা হয়। অবশেষে রবিবার সকাল থেকে বাচ্চা ফুটতে শুরু করে। সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে ৪৭টি বাচ্চা ফুটে বের হয়। ভ্রƒণের মৃত্যু ও অনিষিক্ত হওয়ায় এবার ৫১টি ডিম নষ্ট হয়ে গেছে। এই কেন্দ্র থেকে ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, পটুয়াখালী বন বিভাগ ও সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খালে কুমির অবমুক্ত করা হয় বলে জানান জাকির হোসেন। বন বিভাগ জানায়, বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির নোনা পানির কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও তা সংরক্ষণে ২০০২ সালে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটনকেন্দ্রে বন বিভাগের উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় দেশের একমাত্র সরকারী এ কুমির প্রজননকেন্দ্র। বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশন প্রকল্পের আওতায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয় কেন্দ্রটি। শুরুতেই জেলেদের জালে ধরা পড়া ছোট-বড় পাঁচটি কুমির দিয়ে কেন্দ্রে প্রজনন কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে কেন্দ্রে নোনা পানির দুটি নারী কুমির জুলিয়েট ও পিলপিল এবং একটি পুরুষ কুমির রোমিও রয়েছে। ২০০৫ সাল থেকে গত ১১ বছরে জুলিয়েট ও পিলপিলের ৭২৩টি ডিম থেকে ৪৩৯টি বাচ্চা ফোটে। সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ সাইদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে তিন প্রজাতির কুমিরের অস্তিত্ব ছিল। লবণ পানির কুমির, মিঠা পানির কুমির ও গঙ্গোত্রীয় কুমির বা ঘড়িয়াল। এর মধ্যে মিঠা পানির কুমির ও ঘড়িয়ালের বিলুপ্তি ঘটেছে। এখন শুধু লবণ পানির কুমিরের অস্তিত্বই আছে। এরা সাধারণত ৬০-৬৫ বছর পর্যন্ত ডিম দিতে পারে। আর ৮০-১০০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
×