ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মিথ্যা ঘোষণায় ড্রোন আমদানি, শাহজালালে জব্দ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৭ জুলাই ২০১৬

মিথ্যা ঘোষণায় ড্রোন আমদানি, শাহজালালে জব্দ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বোমা সংযোজন করে যে কোন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটানো যেতে পারে এমন অত্যাধুনিক ড্রোন জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা। মঙ্গলবার দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জব্দ এই ড্রোন একটি পোস্টাল পার্সেলে আসে। ড্রোনটির ওজন চার কেজি। শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর ও তদন্ত বিভাগের মহাপরিচালক ড.ু মঈনুল ইসলাম খান জানান, সিঙ্গাপুর থেকে পোস্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে ৪ কেজি ওজনের ওই দুটো প্যাকেটে পার্সেল আসে। এর পার্সেল নং সিকিউ ৩০৩৩৪৪৫২০ এসকিউ এ্যান্ড সিকিউ ৩০৩৩৪৪৬৪৯ এসকিউ। এটি সোমবার এসকিউ-৪৪৬ ফ্লাইটে শাহজালালে ফ্রেইট ইউনিটে আসার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুরে শুল্ক গোয়েন্দা দলের উপস্থিতিতে স্ক্যানিং ও তল্লাশি করা হয়। পোস্টালের কাগজ যাচাই করে দেখা যায়, পার্সেলটি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাইফ আলী খানের নামে আনা হয়েছে। এই ড্রোন থাকা সত্ত্বেও একে খেলনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে; আমদানি নীতি আদেশ অনুযায়ী যা নিষিদ্ধ। ওই পার্সেল থেকে জব্দকৃত ড্রোনটি বোমা সংযোজন করে যে কোন নাশকতা করা যেতে পারে। এছাড়াও এতে ক্যামেরা বসিয়ে স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ যে কোন স্থাপনার ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করা যায়। ডঃ মঈনুল ইসলাম জানান, নিরাপত্তার জন্য এর অপব্যবহার ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচিত। বর্তমানে এই ড্রোন আমদানি ও ব্যবহার সম্পর্কে নীতিমালা তৈরি প্রক্রিয়াধীন। তাই আমদানিকারকের অবস্থান খুঁজে বের করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অপরদিকে আটক এই ড্রোনের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এদিকে এ ধরনের ড্রোন কি শুধুই শখের বশে আনা হয় নাকি নাশকতার কাজে ব্যবহারের উদ্দেশে আনা হয়; সেটাই তদন্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা। জব্দ ড্রোনটি কাস্টমস হেফাজতে রাখা হয়েছে। ড্রোনটির মালিক সাইফ আলী খানের সন্ধানে নেমেছে শুল্ক গোয়েন্দা। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের আকাশসীমায় ড্রোন ব্যবহার করার জন্য মাস তিনেক হলো একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে সিভিল এ্যাভিয়েশন অথরিটি। এখন যে কেউ ইচ্ছে করলেই বিনা অনুমতিতে শখের বশেও আকাশে ড্রোন ব্যবহার করতে পারবে না। এ বিষয়ে সিভিল এ্যাভিয়েশনের পরিচালক (এফ এস আর) উইং কমান্ডার জিয়াউল কবির জনকণ্ঠকে বলেন- ড্রোন ব্যবহার করা সম্পর্কে সারাদেশের পুলিশের কাছে সতর্কবার্তা ও নীতিমালার মূল তথ্য পাঠানো হয়েছে। কোথাও এ ধরনের ড্রোন ওড়ানো হলে তাৎক্ষণিক সিভিল এ্যাভিয়েশনের নজরে এনে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত কয়েক মাসে এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনার তথ্য আমাদের হাতে রয়েছে। পুলিশ সূত্র জানায়- বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোন অপরাধ কর্মে ড্রোন ব্যবহারের ঘটনা ঘটেনি। যদিও এ ধরনের ড্রোন দিয়ে ইরান, সিরিয়া, আফগানিস্তানসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে হামলার ঘটনাও উল্লেখ করার মতো। পাইলটবিহীন এই ড্রোন এক ধরনের ক্ষুদ্রাকৃতির উড়োজাহাজ- যা দূর নিয়ন্ত্রিত। নিরাপদে গোয়েন্দা তথ্য ও ছবি সংগ্রহের পাশাপাশি বোমা নিক্ষেপের মতো কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে এই ড্রোন। আশঙ্কাটা সেখানেই।
×