ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরেজমিন

উৎসবমুখর পরিবেশে রাজশাহী ও বগুড়ায় শান্তিপূর্ণ ভোট

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৫ জুন ২০১৬

উৎসবমুখর পরিবেশে রাজশাহী ও বগুড়ায় শান্তিপূর্ণ ভোট

সমুদ্র হক, বগুড়া/মামুন-অর রশীদ, রাজশাহী ॥ প্রখর রোদ আর ভ্যাপসা গরম উপেক্ষা করে শেষ ধাপের ইউপি নির্বাচনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে বগুড়া ও রাজশাহীর ভোটাররা ভোট দিয়েছেন। দু’একটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘেœ শেষ হয়েছে। রাজশাহীর তিন উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন আর বগুড়ার তিন উপজেলার ২১ ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারির কারণে তেমন বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বগুড়ার কয়েকটি কেন্দ্রের বাইরে একাধিক পক্ষের ধাওয়াধাওয়ি, দুটি কেন্দ্রের বাইরে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। বগুড়া ॥ আগের নির্বাচনগুলোতে যেখানে প্রতি ইউনিয়নে পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স ছিল একটি করে, সেখানে শেষ ধাপে ছিল চারটি করে। এর বাইরে বিজিবি ও র‌্যাবের টহল ছিল সর্বক্ষণিক। কোথাও কোন অঘটনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া মাত্র শৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত হস্তক্ষেপ করে। সোনাতলার ছোট বালুয়ার সরকারী প্রাথমিক স্কুল কেন্দ্রে সকাল ন’টার দিকে ভোট প্রয়োগকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী ধাওয়া হয়। পরে বাড়তি পুলিশ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। সকাল দশটার দিকে শেখেরকোলা ইউনিয়নের তেলিহারা আলিয়া মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলে প্রায় দেড় ঘণ্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। নামুজা হাই স্কুল ভোটকেন্দ্রে এক দলীয় এজেন্ট ভোটারদের ভোট প্রদানের পর ব্যালট পেপার দেখাতে বললে বাগ্বিত-া হয়। পুলিশের সঙ্গে বিজিবি গিয়ে ওই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। হাতেগোনা কয়েকটি কেন্দ্রে এ ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও দ্রুত তা নিয়ন্ত্রণ করে প্রশাসন। ঝুঁকিপূর্ণ ছিল বগুড়া সদরের ফাঁপোর ইউনিয়ন। নির্বাচনের আগে বলাবলি হচ্ছিল এ ইউনিয়নে গ-গোল হওয়ার আশঙ্কা আছে। অবশ্য শেষ পর্যন্ত কোন অঘটন ঘটেনি। সকাল দশটায় কৈচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটাররা সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে শৃঙ্খলিত অবস্থায় ভোট প্রদান করছে। প্রখর রোদের তাপও ভোটের আনন্দের কাছে হেরে গিয়েছিল। ভোটার আব্দুল লতিফ বললেন, ‘জ্যৈষ্ঠি মাসত রোদ তো উঠবিই, তাই কয়া ভোট দিবার যামো না।’ ভোট প্রদানের পর বাইরে এসে স্বস্তির শ্বাস নিয়ে বললেন, ‘সগলি (সকলেই) কছিল (বলেছিল) ভোটত গ-গোল হবি। কিছুই তো হলো না। ভোট দিয়া আনু।’ এ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মিজানুর রহমান জানালেন, কেন্দ্রের ভোটার ১ হাজার ১শ’ ১। সকাল দশটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয় ৪৩৪ জনের। কর্তব্যরত আনসার সদস্য জানালেন, আশপাশের এলাকা থেকে ভোটাররা ভালভাবেই আসছে। আশা করা হয়েছে, বিকেল চারটার মধ্যে ৯০ শতাংশ ভোটগ্রহণ করা যাবে। এলাকার লালন একাডেমি কেন্দ্রের ভোটার ১ হাজার ২শ’ ৬৪। বেলা এগারোটায় গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্র অনেকটাই সুনসান। এরই মধ্যে সৃশৃঙ্খলভাবে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। প্রিসাইডং অফিসার মাহবুব হায়দার খোশমেজাজে ছিলেন। বললেন, ‘এ কেন্দ্রে কোন সমস্যাই নেই।’ বাস্তবেও দিনভর তাই ছিল। রাজশাহী ॥ শনিবার শেষ দফার নির্বাচনে রাজশাহীর তিন উপজেলার ১৬ ইউনিয়নে শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে। কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা ছাড়া কেন্দ্রে কেন্দ্রে ছিল ভোটের উৎসব। সকাল থেকেই ভোটারদের নির্বিঘœ উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারির কারণে তেমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। শেষ ধাপে জেলার পবা, মোহনপুরের ১৩ ও বাঘা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ হয়। এসব ইউনিয়নে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ হয়েছে। সকাল আটটায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর থেকে রাজশাহীর কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও বড় ধরনের কোন সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। বাঘা উপজেলার নবগঠিত চক রাজাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় সর্বত্র ভোটের উৎসব। প্রখর রোদ উপেক্ষা করে ভোটারদের লম্বা সারি দেখা গেছে বিভিন্ন কেন্দ্রে। এসব কেন্দ্রে দুপুরের মধ্যে ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ ভোটগ্রহণ করা হয়। সকাল সাড়ে দশটার দিকে পবা উপজেলার দর্শনপাড়া ইউনিয়নের দর্শনপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় নারী ভোটারদের লম্বা লাইন। এ কেন্দ্রে দশটার মধ্যে ভোট কাস্ট হয় ৩১ ভাগ। একই উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের হাট রামচন্দ্রপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটারদের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ে। এ কেন্দ্রে দুপুর সোয়া দুটোর মধ্যে ভোট পড়ে ৭২ ভাগ। এদিন উপজেলার বেশিরভাগ কেন্দ্রেই দেখা যায় উৎসবমুখর পরিবেশ। এদিকে, ভোটগ্রহণের শুরুতে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের ভালাম এলাকায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একই ইউনিয়নের পারিলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঢুকে নারী চেয়ারম্যান প্রার্থী ফাহিমা বেগমের লোকজন বেশকিছু ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে সিল মারার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও বিজিবি গেলে তার কর্মী-সমর্থকরা পালিয়ে যায়। রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ধুরোইল ইউনিয়নের শিবপুর কেন্দ্রে সকালে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্টকে ঢুকতে না দেয়ার অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল মাহমুদ সেখানে গিয়ে ওই এজেন্টকে কেন্দ্রে ঢুকিয়ে পুলিশ মোতায়েন করেন। মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের ফতেপুর ও মতিয়ার কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর কর্মী-সমর্থদের মধ্যে সামান্য ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এছাড়া বিলপাড়া কেন্দ্রে ভোটারদের আসতে বাধা দেয়ায় বিএনপি প্রার্থী ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুপুর বারোটার দিকে পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের বেড়পাড়া কেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ সমর্থক মেম্বার প্রার্থী সাইদুর রহমান বাদলসহ পাঁচজন আহত হন। কয়েকটি কেন্দ্রে সামান্য অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া গেলেও সার্বিকবাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল সব কেন্দ্রে। নারায়ণগঞ্জ ॥ মোঃ খলিলুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, প্রচ- ভ্যাপসা গরম ও কাঠফাটা রোদ উপেক্ষা করে অন্যের সহায়তায় তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে ছুটে এসেছেন ৯০ বছর বয়সী নারী ভোটার ইয়াদুন নেছা। তিনি নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে দুপুরে ভোট দেন। শেষ বয়সে ভোট দিতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন তিনি। শুধু ইয়াদুন নেছাই নয় তার মতো ফয়জুন নেছা (৭৫) ও আব্দুল আউয়ালসহ (৮৫) অনেক প্রবীণ ভোটার ভোট দিতে ছুটে এসেছেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হওয়ায় পুরুষ ভোটারের পাশাপাশি মহিলা ভোটাদেরও দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে দেখা গেছে। ষষ্ঠ ও শেষ ধাপে সারা দেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ হয়েছে শনিবার। কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকাল ৮টা থেকে বিকেলে ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোগ গ্রহণ চলে। সন্ধ্যা ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৫টি ইউনিয়নের কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। কলাগাছিয়া ইউনিয়নের সালসারদি কেন্দ্রে সকালে ভোট দিতে অন্যের কোলে চড়ে ছুটে আসেন পঁচাশি বছর বয়সী ভোটার আব্দুল আউয়াল। এ সময় তিনি জানান, ভোট আমার অধিকার। তাই নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে এসেছি। আবার কবে ভোট হবে জানি না। সে সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকব কিনা জানি না। তাই ভোট দিতে পেরে আমি আনন্দিত। দুপুর সাড়ে ১২টায় ধামগড় ইউনিয়নের ৩০ নং বুনিয়াদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নারী ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। ভোটার খাদিজা জানান, ৩০ মিনিট রোদে দাঁড়িয়ে আছি। তবুও আমার ভোট আমি পছন্দের প্রার্থীকে দিয়েই যাব। ৩০ নং বুনিয়াদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এএসআই হারুন জানান, এ পর্যন্ত এ কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। আশা করি, অবশিষ্ট সময়ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না। নীলফামারী ॥ গাছের পাতাগুলোও যেন ঘুমিয়ে আছে। হাওয়া বাতাস বলতে কিছু নেই। গত কয়েকদিনের ভ্যাপসা গরম যেন কিছুইতেই সরছে না। বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ। জনজীবনে হাঁসফাঁস অবস্থা। জ্যৈষ্ঠের কাঠফাটা রোদ্রে মাঠঘাট প্রান্তর যেন খাঁ-খাঁ করছে। প্রকৃতির এমন বৈরী আবহাওয়া রুখতে পারেনি সাধারণ ভোটারদের। ঘামে ভিজে একাকার আর শরীরের চিটপিটানীতেও ভোট উৎসবে মেতে ছিল লাখো নারী-পুরুষ ভোটারা। মজার বিষয় ছিল বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রের বাহিরে দৃশাবলী। ভোট কেন্দ্রের অদূরে বসে ভোটের হাট। আর সেই হাটে জমে উঠে মধু মাসের আম জাম কাঁঠাল বিক্রি আর খাওয়া দৃশ্য। রাজশাহীর আমের কদর ভোট কেন্দ্রর ভোটের বাজার মিষ্টি করে তোলে। শনিবার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের ষষ্ঠ ও শেষ ধাপে নীলফামারীর সদরের একটি ও সৈয়দপুর উপজেলার ৫টিসহ মোট ৬টি ইউনিয়নের নির্বাচনের ভোট প্রদানে সকাল ৮টা থেকে ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপচে পড়া ভিড়ের দীর্ঘ সারি বলে দেয় ভোটের উৎসবমুখর আমেজ। টানা বিকেল চারটা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। তবে দুপুর দুইটার পর ভোট কেন্দ্রগুলো ফাঁকা হয়ে যায়। খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেল সকাল ৮টা থেকে দুপুর দেড়টার মধ্যেই প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের ৭৫ থেকে ৮০ ভাগ ভোটার তাদের ভোট প্রদান করে বাড়ি ফিরে গেছে। রাজনৈতিক দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাকের পার্টিসহ স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাও বেজায় খুশি। বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র ঘুরে এবং ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তারা নিজের ভোট পছন্দ মতো প্রার্থীকে দিতে পেরে মহাখুশি। না কোন গুমকি ধমকি বা বাধা প্রদানে কারো সাহস ছিল না। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, জেলা সদরের চাপড়াসরমজানী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী থাকলেও দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোন দলের প্রার্থী এখানে ছিল না। অপর তিন প্রার্থী ছিল স্বতন্ত্র। আওয়ামী লীগের প্রার্থী খলিলুর রহমান জানালেন আমরা ৪ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মিলেমিশে ভোট করেছি। সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। এই ইউনিয়নের স্বতন্ত্র তিন প্রার্থী যথাক্রমে আমিনুর রহমান (মোটরসাইকেল), এছলাস উদ্দিন টেলিফোন) ও শরিফুল ইসলাম প্রামানিক (আনারস) জানালেন ভোট গ্রহণে কেউ প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। প্রশাসনের নজরদারিতে এবং আমাদের সকলের সহযোগিতায় সাধারণ ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে এসে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করেছে। আমরা অবাধ সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হওয়ায় অত্যন্ত খুশি। অপরদিকে জেলার সৈয়দপুর উপজেলার ৫ ইউনিয়নের মধ্যে কামারপুকুরে ৮, খাতামধুপুরে ৪, কাশিরাম বেলপুকুরে ৮, বোতগাড়ীতে ৭ ও বাঙালীপুরে ৪ জনসহ মোট ৩১ জন চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। এ সকল ইউনিয়নের প্রতিটিতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী অংশ নেয়। এছাড়া কাশিরাম বেলপুকুরে ওয়ার্কার্স পার্টির হাতুড়ি প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নারী প্রার্থী কামরুন নাহার ইরা ও জাকের পার্টির গোলাপফুল প্রতীকে লানচু হাসান চৌধুরী ছিলেন। নারী প্রার্থী কামরুন নাহার ইরা সাংবাদিকদের বলেন, দলীয় ব্যানারে ভোটের কারণে বিশেষ কিছুর দলের প্রভাব থাকে। ভোটারদের মধ্যে দলীয় চিন্তা-চেতনা রয়েছে। তারপরও তিনি নারী হয়ে চেয়ারম্যান পদে ভোট করলেন। তিনি অবাধ সুষ্ঠু ভোট গ্রহণে প্রশাসনের ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়েছেন। জাকের পার্টির চেয়ারম্যান প্রার্থী লানচু হাসান চৌধুরী বললেন, জীবনে এমন অবাধ সুষ্ঠু ভোট দেখিনি। নীলফামারীর ছয় ইউনিয়নের ৫৫টি ভোট কেন্দ্রে ১ লাখ ১২ হাজার ৭৭২ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৫৬ হাজার ৩৩৪ জন ও নারী ভোটার ৫৬ হাজার ৪৩৮ জন ভোটারের প্রায় অধিকাংশ ভোটার তাদের ভোট প্রয়োগ করেছে বলে মনে করেন ভোট কেন্দ্রয়ের দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং কর্মকর্তাগণ। রংপুরেও ছিল ভোট উৎসব ॥ ষষ্ঠ ও শেষ দফার ইউপি নির্বাচনের ভোট উৎসবে মেতে ছিল রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা ৯ ও সদর উপজেলার একটিসহ ১০টি ইউনিয়নের সাধারণ ভোটাররা। ভোট উৎসবে রংপুরের ওই ইউনিয়নগুলোর গ্রামীণ জনপদ ছিল উৎসবমুখর। বাস্তব চিত্রে জ্যৈষ্ঠের ভ্যাপসা গরমকে হার মানিয়ে ভোট উৎসব হয়েছে। রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার নোহালী, গজঘন্ট, গঙ্গাচড়া সদর, লক্ষ্মীটারী বেতগাড়ি, মর্নেয়া, আলমবিদিত, বড়বিল কোলকোন্দ ও রংপুর সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের থেকে খবর পাওয়া গেছে সুষ্ঠু ও অবাধ নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের ও স্বতন্ত্রসহ মোট ৭১ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
×