ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাতের প্রবন্ধে তথ্য উপস্থাপন

বাংলাদেশে জঙ্গী গোষ্ঠীগুলো সম্মুখযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত!

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২০ মার্চ ২০১৬

বাংলাদেশে জঙ্গী গোষ্ঠীগুলো সম্মুখযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত!

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ইসলামী শরীয়াভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে বাংলাদেশের জঙ্গীগোষ্ঠীগুলো সশস্ত্র সম্মুখ যুদ্ধের জন্য এখন প্রস্তুত বলে তথ্য দিয়েছেন অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারকাত। ‘বাংলাদেশ মৌলবাদ ও মৌলবাদী জঙ্গীত্বের রাজনৈতিক অর্থনীতি’ শীর্ষক এক প্রবন্ধে গবেষণার এ চিত্র তিনি তুলে ধরেন। শনিবার বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের উদ্যোগে আয়োজিত আঞ্চলিক সেমিনারে তার প্রবন্ধে এ সংক্রান্তে গুরুত্বপূর্ণ অংশ তুলে ধরে আবুল বারকাত জানান, এদেশে ইসলামী জঙ্গীবাদ ‘দাওয়া’ স্তর পার হয়েছে। অতিক্রম করেছে দ্বিতীয় স্তর ‘ইদাদ’। এখন তাদের অবস্থান জিহাদের তৃতীয় ও চতুর্থ স্তরের মধ্যবর্তী পর্যায়ে অর্থাৎ ‘রিবাত’ ও ‘কিলাল’ এর মাঝে। তার মতে, জঙ্গীরা ইসলামী শরীয়াভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে সশস্ত্র সম্মুখ যুদ্ধের জন্য এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে দিনব্যাপী এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি ড. ইরশাদ কামাল খান। উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সমিতির সভাপতি ড. আশরাফ উদ্দিন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন সমিতির চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সাধারণ সম্পাদক একেএম ইসমাইল এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ। আবুল বারকাত বলেন, ধর্মের নামে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলই হয়তবা মৌলবাদী জঙ্গীত্বের শেষ কথা নয়। বৈশ্বিক পুুঁজিবাদী ব্যবস্থাপনাকে চিরস্থায়ী করাই সম্ভবত চূড়ান্ত লক্ষ্য। আর ওই চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছতে আরও অনেক পথ পন্থা পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম মাধ্যমই হলো ধর্মভিত্তিক মৌলবাদ ও জঙ্গীত্ব। তিনি বলেন, ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক জঙ্গীত্ব এখনই নির্মূল সম্ভব নয়। কারণ, যেসব জটিল ভিত্তির উপর এটি দাঁড়িয়ে আছে তা কয়েকদিনে ভেঙ্গে ফেলা যাবে না। তবে তিনি ক্ষতি হ্রাস ও ঝুঁকি হ্রাসের কৌশল দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য বেশকিছু উদ্যোগের কথা বলেন। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৭১ সালে যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ করেছেন, যারাই মৌলবাদী জঙ্গীদের গড়ফাদার, তাদের বিচার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে তা কার্যকর করা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুরো বিষয়টি আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে করতে পারলে দেশ জাতির জন্য মঙ্গল। জঙ্গীদের অর্থায়নের উৎস সম্পর্কে সরকারের যা কিছু জানা আছে অতি দ্রুত গণমাধ্যমে প্রকাশ-প্রচার করা প্রয়োজন। এছাড়া জঙ্গী অর্থায়নের উৎসমুখ বন্ধ করতে সরকারকে কঠোর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। সকাল সোয়া দশটায় জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে সেমিনার শুরু হয়। প্রথম কার্য অধিবেশনে আঞ্চলিক সংযোগ ও জাতীয় উন্নয়নে বর্তমান চ্যালেঞ্জ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউজিসি অধ্যাপক ড. মঈনুল ইসলাম। এ প্রবন্ধে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে ভারতের যে সমস্যা তা বড় কিছু নয়। মূল সমস্যা রাজনীতি। ভূরাজনৈতিক কারণে আঞ্চলিক সংযোগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যার ফলে ঝুলে যাবে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দরের ভবিষ্যত। দ্বিতীয় অধিবেশনে আবুল বারকাতের প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।
×