ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

৩টি পৌরসভা ও ১৫ ইউনিয়নকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত

বরেন্দ্র অঞ্চলে পানীয় জল সঙ্কটের শঙ্কা

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বরেন্দ্র অঞ্চলে পানীয় জল সঙ্কটের শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ ভূগর্ভস্থ পানির অবাধ ব্যবহারের কারণে স্তর ক্রমাগতভাবে নিম্নমুখী হওয়ায় রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চল সেচ ও পানীয় জলের সঙ্কটের শঙ্কায় পড়েছে। এরই মধ্যে পানীয় জলের জন্য এ অঞ্চলের ৩টি পৌরসভা ও ১৫ ইউনিয়নকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ডাসকো ফাউন্ডেশন পরিচালিত সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (আইডাব্লিউআরএম) নামে একটি প্রকল্প জরিপ চালিয়ে এসব এলাকা চিহ্নিত করেছে। ঝুঁকিপূর্ণ ওই সব এলাকায় অতি জরুরীভাবে ভূগর্ভস্থ থেকে পানি উত্তোলন বন্ধ করে বিকল্প উপায়ের মাধ্যমে পানি ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। এ অবস্থা চলতে থাকলে কয়েক বছরের মধ্যেই ওই সব এলাকায় সেচসহ মিঠা পানির (পানীয় জল) তিব্র সঙ্কট দেখা দেবে বলে আশঙ্কার ইঙ্গিত দিয়েছে সংস্থাটি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দীর্ঘ ১ বছর ধরে বরেন্দ্র অঞ্চলে জরিপ চালিয়ে তৈরি প্রতিবেদন সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে দাখিল করেছে আইডাব্লিউআরএম নামের সংস্থাটি। ২০১৪ সালে পুরো বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠপর্যায়ে এ জরিপটি পরিচালনা করা হয়। সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, এক যুগ আগে এ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে ৬০ থেকে ৯০ ফুটের মধ্যে সচরাচর পানি পাওয়া যেত। বর্তমানে তা ১৬০ ফুট বা তারও নিচে গিয়ে পানি মিলছে। ঝুঁকিপূর্ণ ওই সব এলাকা হলো- রাজশাহীর তানোর উপজেলার মু-ুমালা পৌরসভা, গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর পৌর এলাকা। এছাড়া রাজশাহী তানোর উপজেলার বাঁধাইড, কলমা, পাঁচন্দর, গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর, পাকড়ী, গোদাগাড়ী ইউনিয়ন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, গোবরাতলা ও ঝিলিম, নাচোল উপজেলার কসবা ও নেজামপুর ইউনিয়ন, ভোলাহাটের দলদলি ইউনিয়ন, গোমাস্তাপুরের পাবর্তীপুর, রহনপুর ও রাধানগর ইউনিয়ন। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা ৬৫ সেন্টিমিটার। ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়ন ও পৌর এলাকাগুলোতে অতি দ্রুত গভীর নলকূপের পানি দিয়ে বোরো আবাদ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে পানির রিচার্জ করতে বিদ্যমান বড় পুকুর ও খাড়িগুলো খনন করে ভূ-উপরস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে বলা হয়েছে। আইডাব্লিউআরএমের মাঠপর্যায়ের (তানোর উপজেলার বাঁধাইড় ও মু-ুমালা) দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিউনিটি মবিলাইজার শিশির কুমার রায় জানান, ২০১৪ সাল থেকে বরেন্দ্র অঞ্চলের ৩৫টি ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভা নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। এই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে ইতোমধ্যে জনসাধারণ ও কৃষকদের নিয়ে বিভিন্ন জনসচেতনমূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন সুপারিশমালাও তৈরি করা হয়েছে। এসব বিষয়ে শীঘ্রই পানি ব্যবস্থাপনায় টেকসই পদক্ষেপ না নিলে এ অঞ্চলে পানির তীব্র সঙ্কটে পড়তে হবে।
×