ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা

ঘন কুয়াশা ও হাড় কাঁপানো শীতে দরিদ্রদের জীবন দুর্বিষহ

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২৭ জানুয়ারি ২০১৬

ঘন কুয়াশা ও হাড় কাঁপানো শীতে দরিদ্রদের জীবন দুর্বিষহ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ঘন কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো শীতের কারণে সারাদেশে জনজীবন প্রায় দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। প্রচ- শীতে ব্যাহত হচ্ছে প্রতিদিনের কাজ। ঠা-াজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশুসহ অনেকে। বোরো মৌসুম শুরু হলেও কনকনে ঠা-ায় মাঠে কাজে যেতে পারছে না কৃষক। শীত নিবারণের মতো প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র না থাকায় ভোগান্তিতে পড়ছে ছিন্নমূল ও দরিদ্র মানুষেরা। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতার। রংপুর জেলায় বেশ কয়েকদিন ধরেই ঘন কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো শীতের রাজত্ব চলছে। মঙ্গলবার এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। চলতি শীত মৌসুমের এটাই ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এদিকে ঘন কুয়াশা আর শীতের কারণে আরও কাহিল হয়ে পড়েছে স্থানীয় ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মজুর শ্রেণীর মানুষ। প্রচ- শীতে নিত্যদিনের কাজ করতে পারছেন না তারা। মঙ্গলবার ভোর থেকে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত টানা কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টির মতো ঠা-া কুয়াশাপাত হয়েছে এখানে। এখানকার দরিদ্র মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। কুড়িগ্রাম ॥ এ জেলায় গত চার দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠা-ায় জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। ঠা-ার প্রকোপ থেকে বাঁচতে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া ঘর হতে বের হচ্ছে না মানুষজন। এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তবে মঙ্গলবার দুপুরের পর কিছুক্ষণের জন্য সূর্যের মুখ দেখা গেলে মানুষজনের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। অনেকে একটু রোদের পরশ পাওয়ার জন্য ঘর থকে বের হয়ে পড়েন। এদিকে গরম কাপড়ের অভাবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমূল মানুষসহ শিশু ও বৃদ্ধরা। প্রচ- ঠাণ-ায় দুর্র্বল হয়ে পড়েছে গবাদিপশু। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। উত্তরীয় হিমেল হওয়ায় ঠা-ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় কাজে যেতে পারছে না শ্রমজীবী মানুষেরা। বোরো মৌসুম শুরু হলেও কনকনে ঠা-ায় মাঠে কাজ করতে পারছে না কৃষি শ্রমিকরা। অনেকে কাজের সন্ধানে বের হলেও কাজ জুটছে না। গাইবান্ধা ॥ গত কয়েকদিন ধরে প্রচ- শৈত্যপ্রবাহের কারণে তীব্র ঠা-ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সোমবার সারারাত ঘন কুয়াশা ও বৃষ্টির মতো শিশির পড়েছে। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত হিমেল হাওয়া ও কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে এ জেলার সর্বত্র। দিনের বেলায় অনেক যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হয়। মঙ্গলবার দুপুর ১টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীপথে গাইবান্ধার সাঘাটা, ফুলছড়ি, সুন্দরগঞ্জ ও সদর উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলোর সঙ্গে জেলা ও উপজেলা সদরের নৌ চলাচল বন্ধ থাকে। এর ফলে চরাঞ্চলের মানুষদের চরম বিপাকে পড়তে হয়। জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত সর্দি-কাশি, হাঁপানি, পেটের পীড়া, কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তীব্র শীতের কারণে শিশু ও বৃদ্ধরাই আক্রান্ত হয় বেশি। তীব্র ঠা-া ও ঘন কুয়াশায় বোরোচারাসহ সবজিক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এদিকে ঠা-ার কারণে কৃষকরা জমি চাষ বা ধানের চারা রোপণ করতে না পেরে চরম বিপাকে পড়েছে। ঠাকুরগাঁও ॥ ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠা-া বাতাস অব্যাহত থাকায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে কাবু হয়ে পড়েছে জেলার সাধারণ মানুষজন। ফলে অনেক বেলা অবধি নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হচ্ছে না মানুষজন, কমে গেছে যানবাহন চলাচল। যেসব যানবাহন চলাচল করেছে সেগুলো চলেছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। এদিকে তীব্র শীতের ছোবলে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষজন। দরিদ্র দিনমজুর মানুষ কাজে যেতে না পেরে অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছে। তারা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ে শীতে কাতর অসহায় দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছে জনতা ব্যাংকের এরিয়া অফিস। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেনÑ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জীতেন্দ্রনাথ রায়, জনতা ব্যাংক ঠাকুরগাঁওয়ের এরিয়া অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান সরকার, ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মঞ্জুনুর রহমান প্রমুখ।
×