ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাপার সেমিনার

নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে দেশ এখনও পিছিয়ে

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৭ মার্চ ২০১৫

নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে দেশ এখনও পিছিয়ে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাধীনতার পর গত চার দশকের লড়াইয়ে বাংলাদেশ খাদ্যের অভাব দূর করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে দেশ এখনও পিছিয়ে রয়েছে। এজন্য সবার আগে প্রয়োজন জনসচেতনতা। পাশাপাশি সরকার ও গণমাধ্যমেরও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ভোক্তা অধিকার আইন প্রণীত হলেও তা কঠোরভাবে কার্যকরের কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। সচেতনতা সৃষ্টি ও আইন কার্যকরের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে হবে সরকারকেই। আর সহায়ক শক্তি হিসেবে গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন রাখবে সক্রিয় ভূমিকা। এভাবে বিভিন্ন পক্ষের সমন্বিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যের উৎপাদন ও বিতরণ সম্ভব। সোমবার রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) হলরুমে ‘নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিতকরণে নাগরিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস-২০১৫ উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর আয়োজন করে। বাপা’র সহসভাপতি অধ্যাপক এএম মুয়াজ্জাম হুসেইনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন খাদ্যের গুণগত মান নিশ্চিতকরণ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও রসায়নবিদ জাহেদুর রহমান। আলোচকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. শহীদুল ইসলাম, কৃষিবিদ মো. নুরুল ইসলাম, বাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিদুল হক খান, এনজিও সংগঠন পিস এর উপদেষ্টা ড. আবদুল হাই মজুমদার প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস। মূল বক্তব্যে জাহেদুর রহমান নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে খাদ্য উৎপাদন ও বিতরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্তরের মানুষের ভূমিকার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এগুলো হলো- কৃষিজাত ও খামারজাত খাদ্য উৎপাদন স্তরে সচেতনতা, সঠিকভাবে খাদ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, পরিবহন ও সরবারহ করা, দেশে পৃথক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল তৈরি, স্বাস্থ্যসম্মত স্থায়ী ও অস্থায়ী বাজার এবং শপিং মল স্থাপন করা, হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা, বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ফাস্ট ফুডের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতন করা, উৎপাদন থেকে শুরু করে বিতরণের সর্বশেষ পর্যায়ের যাবতীয় তথ্য জানার অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়া এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে নিয়মের ব্যত্যয় হলে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। তবে এসব করতে হলে খাবার বিষয়ক ভাবনার ক্ষেত্রে জনগণের নৈতিক উন্নতির কোন বিকল্প নেই বলেও মনে করেন জাহেদুর রহমান। পরে আলোচকরা তাদের বক্তব্যে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করার জন্য সরকার, গণমাধ্যম ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনকে সমন্বিতভাবে কাজ করার তাগিদ দেন। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক এএম মুয়াজ্জাম হুসেইন বলেন, খাদ্য অধিকার বলতে শুধু খাদ্যের পর্যাপ্ততা বুঝায় না। নিরাপদ খাদ্য পাওয়াও মানুষের অধিকার।
×