ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

পনেরো থেকে ২০ হাজার টাকায় দক্ষ কর্মী নেবে সৌদি কর্তৃপক্ষ

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ২৬ জানুয়ারি ২০১৫

পনেরো থেকে ২০ হাজার টাকায় দক্ষ কর্মী নেবে সৌদি কর্তৃপক্ষ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সৌদি কর্তৃপক্ষ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নেবে। দেশটির চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোই সব খরচ বহন করবে। এখানে মধ্যস্বত্বভোগীর কোন স্থান নেই। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সৌদি কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সৌদি আরব সফর শেষে রবিবার সকালে রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, দেশটির কর্তৃপক্ষ খুব শীঘ্রই কর্মী নিয়োগের কার্যক্রম শুরু করবে। কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে অভিবাসন ব্যয় ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। ভিসা বাণিজ্যে কেউ জড়িত থাকলে, সৌদি আইন অনুযায়ী তাকে ১৫ বছরের কারাদ- দেবে সৌদি সরকার। বিশেষ করে সৌদিতে বসবাসরত বাঙ্গালী যদি ভিসা বাণিজ্য করেন তাহলে তাদের এই শাস্তি ভোগ করতে হবে। দেশে কোন দালাল চক্র সৌদি আরবে কর্মী পাঠানোর বেলায় কোন ভূমিকা রাখতে পারবে না। কারণ গোটা বিষয়টিই সরকারী পর্যায় থেকে হবে। কোন কর্মী যাতে প্রতারণার শিকার না হন সেদিকে মন্ত্রণালয়ের কঠোর নজরদারি থাকবে। কর্মী নেয়ার ক্ষেত্রে ভিসা, যাতায়াত ও মেডিক্যাল খরচ বহন করবে সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট কারখানা মালিক। জনশক্তি রফতানিকারক বা দালাল চক্রের মাধ্যমে সৌদি যেতে একজন কর্মীকে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা গুনতে হয়। কিন্তু এবার কর্মীরা মাত্র ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ করেই সৌদিতে যেতে পারবেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কর্মীদের পাসপোর্ট, এজেন্সি ফি ও ঢাকায় তাদের যাতায়াত মিলিয়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। কর্মী নিয়োগের সব খরচ তো সংশ্লিষ্ট কোম্পানিই বহন করবে। এর আগে কখনও কর্মীরা এমন সুযোগ পাননি। খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিদেশ যেতে আগ্রহী নিবন্ধনকৃত ২২ লাখ কর্মী তালিকার বিষয়ে সৌদি সরকারকে জানানো হয়েছে। তারা বাংলাদেশে একটি টিম পাঠাবে। এরপর দুই দেশের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি যৌথ কমিটি করা হবে। এই কমিটি কর্মীদের একটি যৌথ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করবে। সেক্ষেত্রে সৌদি সরকার যত কর্মী নিতে আগ্রহী হবে, নিবন্ধন তালিকা থেকে তার তিনগুণ কর্মী তাদের দেয়া যাবে। সেখান থেকে তারা দক্ষ করতে পারবেন। যৌথ কমিটির বাছাইয়ের মাধ্যমে সৌদিতে কর্মী নিয়োগ হবে। উল্লেখ্য, সৌদি আরবে বাংলাদেশের শ্রম বাজার দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবার বাজারটি উন্মুক্ত হলো। দেশের জনশক্তি রফতানির জন্য সৌদি আরবই সবচেয়ে বড় বাজার। সরকার পুরনো বাজারগুলো উদ্ধারের জন্য যে কর্মসূচী হাতে নিয়েছে তারই অংশ হিসেবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি দেশটি সফর করেন। সৌদি শ্রমমন্ত্রী আবদেল ফকিহর সঙ্গে বৈঠকের পরই বাজারটি খোলার ঘোষণা আসে। এর আগে সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যতবার আলোচনা হয়েছে, তারচেয়ে এবারের আলোচনা অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশেই হয়েছে। তারা বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ করতে যথেষ্ট আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে তারা দক্ষতাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। একই সঙ্গে কর্মীদের অপরাধপ্রবণনতা কমানোর জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
×