ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দিশাহারা চাষী ও ব্যবসায়ী

নাটোরে সবজি বাজারে অচলাবস্থা

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ২৪ জানুয়ারি ২০১৫

নাটোরে সবজি বাজারে অচলাবস্থা

সংবাদদাতা, নাটোর, ২৩ জানুয়ারি ॥ দেশব্যাপী টানা হরতাল-অবরোধের কারণে মাঠের সবজি মাঠেই নষ্ট হচ্ছে। পরিশ্রম আর অধিক ব্যয়ে জমিতে উৎপাদিত সবজি বাজারজাত করতে না পেরে চরম বিপাকে সবজি চাষীরা । অন্যদিকে সবজি কিনে তা রাতের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠাতে না পেরে বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে তারা চাষীদের কাছ থেকে মাল ক্রয় করা বন্ধ করে দিয়েছেন। এর ফলে অচল হয়ে পড়েছে জেলার বড় বড় কাঁচামাল আড়ৎ। সবজি চাষী এবং ব্যবসায়ী উভয়ের মধ্যেই বিরাজ করছে চরম হতাশা আর আশঙ্কা। উত্তরবঙ্গের মধ্যে নাটোর জেলা থেকে সবজির বিরাট অংশ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রফতানি করা হয়ে থাকে। অথচ জেলার মধ্যে হয়বতপুর, দত্তপাড়া, বনপাড়া, আহম্মদপুর, রাজাপুর, দয়ারামপুরসহ সবজির বড় বড় বাজারে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। প্রতিদিন এসব বাজার থেকে প্রায় দেড় শতাধিক ট্রাকের মাধ্যমে কাঁচামাল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়ে থাকে। কিন্তু হরতাল-অবরোধে হাতেগোনা ট্রাক সবজি নিয়ে যাতায়াত করছে। ফলে লাখ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। অবরোধে জ্বালাওপোড়াও আর নাশকতার ভয়ে গাড়ি বের করছেন না অধিকাংশ যানবাহনের মালিক। দূরপাল্লার যেসকল ট্রাক, মিনিট্রাকসহ অন্যান্য পরিবহন ঝুঁকি মাথায় নিয়ে মহাসড়কে চলাচল করছে সেগুলোর অধিকাংশই পণ্য রফতানির জন্য দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করছে। এছাড়া চালকদের প্রাণনাশের ভয় তো রয়েছেই। এছাড়াও দ্বিগুণ ভাড়ায় পাঠানো পণ্য অর্ধপথে পচে কিংবা নাশকতায় পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে ব্যবসায়ীদের। এর ফলে ক্রয়কৃত টাটকা সবজি যানবাহনের অভাবে রফতানি করতে লোকসানের ঝুঁকি থাকায় কাঁচামাল কেনা থেকে বিরত থাকছেন পাইকারি ক্রেতা-বিক্রেতারা। এর মধ্যে যারা মাল বোঝাই ট্রাক নিয়ে ভাড়া খাটছেন তারা নিতান্তই পেটের দায়ে, তবে সাথে থাকছে পুলিশী পাহারা। তাছাড়া সবজি বোঝাই ট্রাকের সাথে পুলিশ, র‌্যাব পাহারায় কতদিনই বা ব্যবসা চালানো যায়। সদর থানার লক্ষীপুর খোলাবাড়ীয়া এলাকার সবজি চাষী কবির হোসেন আক্ষেপের সাথে জানান, দেশে হরতাল-অবরোধের কারণে ব্যবসায়ীরা মাল বাইরে পাঠাতে না পেরে আমাদের কাছ থেকে মাল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। হরতাল-অবরোধ না থাকলে ব্যবসায়ীরা বাড়ি এসে মাল কিনে নিয়ে যায়। আর এখন আমরা যারা চাষী তারা বাজারে মাল নিয়ে গিয়েও বিক্রি করতে পারছি না। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া চাষীরা এখনও মনে করছেন দু’একদিনের মধ্যে হরতাল-অবরোধ তুলে নেয়া হলে তারা হয়ত লোকসানের পরিমাণ কিছুটা হলেও কমিয়ে আনতে পারবেন। দেশের সবজি বাজারকে টিকিয়ে রেখে দেশের অর্থনীতির চাকা চাঙ্গা রাখতে দেশ থেকে হরতাল-অবরোধ তুলে নেয়ার আহ্বান জানান চাষী ও ব্যবসায়ীরা।
×