ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এটা কোন হরতাল নয়, সন্ত্রাস ॥ আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১৬ জানুয়ারি ২০১৫

এটা কোন হরতাল নয়, সন্ত্রাস ॥ আইনমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের জনগণ ও সব রাজনৈতিক দল একমত হলে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচী বন্ধে সরকার আইন করবে। হরতাল-অবরোধের নামে একটি রাজনৈতিক দল যা করছে তা সন্ত্রাস, এটা কোন হরতাল নয়। এই সন্ত্রাস বন্ধে সন্ত্রাস দমন আইন প্রয়োগ করা হবে। যারা হরতাল সহিংসতা করে তারা সন্ত্রাসী। আর সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আলোচনা নয়। তালেবানদের সঙ্গে আলোচনা না হলে কেন সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আলোচনা হবে। আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক এ কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত সংগঠনের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের সংশোধনীর খসড়া প্রস্তুত হয়েছে। জানুয়ারির শেষ দিকে এ খসড়া মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে বলে আশা করছি। মানবতাবিরোধী অপরাধের জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপীল বিভাগের চূড়ান্ত রায় প্রকাশের পর রিভিউ পিটিশন করার জন্য চেষ্টা করা হবে। বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আরও বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমান পলাতক। তাকে ফিরিয়ে আনা হবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। এক বছর শান্ত থাকার পর দেশে নতুন করে রাজনৈতিক সহিংসতা ফিরে এসেছে। অবরোধ হরতালের নামে জানমালের ক্ষতি সাধন হচ্ছে। হরতালের নামে এখন যেটা হচ্ছে সেটা সন্ত্রাস। যে আইনে জনগণের সম্পৃক্ততা রয়েছে, সে আইন করা হয়। হরতাল বন্ধের জন্য দাবি উঠলে এ বিষয়েও আইন করা হবে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন। আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে সুপ্রীমকোর্টেও বিচারপতি নিয়োগের আইন হবে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকা- সম্পর্কে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘পেশাদার খুনীরা খুন করলে অনেক সময় অপরাধ প্রমাণ করা কঠিন হয়ে যায়। তবু আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। কিছু নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে সেটা গোপন রাখা হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই তদন্তের মাধ্যমে আসল খুনী ধরা পড়বে। এছাড়া সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন এই সরকার সহ্য করবে না। সাংবাদিক পেশায় কাজ করতে ব্যাঘাত আসলে তা সহ্য করা হবে না। আইনমন্ত্রী এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, পাকিস্তানে ১৩২ স্কুল শিক্ষার্থীকে হত্যা করেছে তালেবানরা। সেখানে কি সংলাপ সম্ভব? তালেবানদের সঙ্গে আলোচনা করা না গেলে, কোন সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা নয়। আর আলোচনার জন্য এজেন্ডা কী? বিশৃঙ্খলা করে আলোচনার জন্য বলা হলে বসব না। কেউ যদি দেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চান তাহলে একশ’বার আলোচনায় বসব। বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, আমাকে বিশ্বাস করুন। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। নুর চৌধুরী কানাডায়, রাশেদ আছেন ইউএসএ। তারা যেন ওই দেশ থেকে পালাতে না পারেন সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। একইভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যাদের দ- দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে যারা পলাতক আছে তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। তবে নিরাপত্তার জন্য আর কিছু বলা যাবে না। অন্য সময়ের চেয়ে জোরদার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আইনমন্ত্রী বলেন আমি যেহেতু পেশাজীবী ছিলাম সে জন্য আপনারা আমার সহযোগী। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে সকল হত্যার বিচার করা উচিত। বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকা-ের বাধা দেয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা কোন রাজনৈতিক কর্মকা-ে বাধা দিচ্ছি না। আমরা শুধু সন্ত্রাসী কর্মকা- দমন করছি। আর জনগণের জানমাল রক্ষায় যা করা দরকার সরকার তাই করবে।
×