
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে সহায় সম্বলহীন একটি দরিদ্র পরিবারের তিন সদস্যের একই ঘরে বসবাস। স্বামীর রেখে যাওয়া একটি ঘরেই ছেলে ও মেয়ে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেন বিধবা ছকিনা বেওয়া।
প্রতিদিন সকাল হলেই ছুটে চলেন ছকিনা অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজে। বড় ছেলে সিদ্দিক নবম শ্রেণিতে ও মেয়ে সাদিয়া আক্তার ৪র্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। একদিকে দুই সন্তানের পড়াশোনার খরচ ও অপরদিকে সন্তানের খাবার জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন ছকিনা বেওয়া। আলোচিত ছকিনা বেওয়া রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চেতনা গ্রামের বাসিন্দা, মৃত ছামাদ পাগলের দ্বিতীয় স্ত্রী।
ছকিনা বেওয়া বলেন, আমাদের কোনো সঞ্চয় নেই, প্রতিদিন অন্যের বাড়িতে কিংবা কৃষিকাজে শ্রম বিক্রিই আমার একমাত্র আয়ের উৎস। কাজ করতে পারলে ভালমন্দ খেতে পারি, কাজ না জুটলে থাকতে হয় উপোস। বড় ছেলে সিদ্দিক পড়াশোনা করে, সেও মাঝে মাঝে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কৃষিকাজ করে। ছোট মেয়ে সাদিয়া আক্তার সে প্রাইমারিতে পড়ে। স্বামী রেখে গেছে মাত্র সাড়ে তিন শতক জমি, তারও অর্ধেক আমার বড় সতিন পাবে। সরকার অসহায় মানুষের জন্য কত কিছু করে, হামরা কিছুই পাই না। যুবক সন্তানসহ একই ঘরে থাকতে হয় বলতেও লজ্জা লাগে। অভাবের সংসারে জীবনের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হচ্ছে হামাক।
এ বিষয়ে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুস প্রামাণিকের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ছকিনার ছেলে সিদ্দিক বলেন, আমি ক্লাস নাইনে পড়তেছি, আমার বোন ক্লাস ফোরে পড়ে। আমাদের পড়াশোনার খরচ ও খাবার জোগাতে মা হিমশিম খাচ্ছে। মাঝে মাঝে আমি ক্লাস ফাঁকি দিয়ে গ্রামে কৃষিকাজে যাই। মা ও আমার দৈনন্দিন কাজের পারিশ্রমিকের টাকা দিয়ে সংসার চলে। আমাদের নেই আবাদি জমি, কিনে খেতে হয় নিয়মিত। যখন কেনার সামর্থ্য থাকে না, তখন মা ঝিয়ের কাজ করে যতটুকু খাবার নিয়ে আসে সেটাই ভাগ করে তিনজন খাই।
অসহায় ছকিনা বেওয়ার জীবনগল্প বিষয়টি শুনে সমবেদনা প্রকাশ করে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল ইমরান বলেন, আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অসহায় পরিবারটিকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার চেষ্টা রাখব, ইনশাআল্লাহ।
আফরোজা