ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

মধুপুরে অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকার আত্মহত্যা! প্রেমিক শিক্ষকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন!

হাফিজুর রহমান, নিজস্ব সংবাদদাতা, মধুপুর-ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল:

প্রকাশিত: ২১:২৯, ৩ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২১:২৯, ৩ জুলাই ২০২৫

মধুপুরে অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকার আত্মহত্যা! প্রেমিক শিক্ষকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন!

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কুড়ালিয়া ইউনিয়নের কেউটাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা লুৎফুন্নাহার লাকী (৩২) প্রেমের ফাঁদে পড়ে চরম মানসিক যন্ত্রণার শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ হৃদয়বিদারক কিছু তথ্য থেকে উঠে এসেছে এই মৃত্যুর অন্তরালে থাকা নির্মম বাস্তবতা।

সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ জুন নিজ কক্ষে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন লাকী। পরবর্তীতে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ২৭ জুন তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর পর তার কক্ষ থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরির পাঁচটি পাতায় উঠে আসে সহকর্মী শিক্ষক ইবনে মাসুদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ। গোপিনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইবনে মাসুদের সঙ্গে ২০২৪ সালে এক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পরিচয় হয় লাকীর।

অভিযোগ রয়েছে, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাসুদ তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। দীর্ঘ প্রায় দুই বছরের প্রেমের সম্পর্কের এক পর্যায়ে লাকী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিয়ের জন্য চাপ দেন। তখন মাসুদ জানান, তিনি বিবাহিত এবং বিয়ে করতে অপারগ। লাকীর আত্মহত্যার আগে লেখা ডায়েরিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, ‘তোমার অবজ্ঞার কারণেই আজ আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিলাম। তুমি চাচ্ছো আমি মরে যাই, আর তুমি সুখে থাকো?’

এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে গত ২৮ জুন লাকীর বাবা আব্দুল লতিফ মধুপুর থানায় ইবনে মাসুদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমরানুল কবীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রতারণা করে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে মাসুদ। পরবর্তীতে গর্ভবতী হলে শিক্ষিকা লাকীকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে মানসিক চাপে তিনি আত্মহত্যা করেন। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সচেতন মহল দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

আফরোজা

×