ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৯ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

স্বর্ণালংকার ও ৬ সন্তানের মাকে নিয়ে পালাল যুবক, মাকে ফিরিয়ে দিতে সন্তানদের আকুতি

মামুন হোসাইন, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, চরফ্যাশন, ভোলা

প্রকাশিত: ২৩:২৩, ২৮ জুন ২০২৫; আপডেট: ২৩:২৭, ২৮ জুন ২০২৫

স্বর্ণালংকার ও ৬ সন্তানের মাকে নিয়ে পালাল যুবক, মাকে ফিরিয়ে দিতে সন্তানদের আকুতি

ছবি: সংগৃহীত

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার জন্ম দিয়েছেন মুরাদ হাওলাদার (৩২) নামে এক যুবক। অভিযোগ উঠেছে, তিনি স্থানীয় কাঠ মিস্ত্রি মো. ইয়াকুব মুন্সির স্ত্রী আয়েশা বেগম (৩৬), তার তিন সন্তান, নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে গেছেন। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুরে ভুক্তভোগীর সন্তানেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়ে মায়ের সন্ধান চান।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ২৪ জুন (মঙ্গলবার) বেলা ১১টার দিকে চরফ্যাশনের জিন্নাগড় ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইয়াকুব মুন্সির বাড়ি থেকে তার স্ত্রী আয়েশা বেগম ও তিন সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যান একই এলাকার আব্দুর রব হাওলাদারের ছেলে মুরাদ হাওলাদার। অভিযোগে দাবি করা হয়, এ কাজে মুরাদকে সহায়তা করেন ইউএনও অফিসের কর্মচারী সোহাগ হাওলাদার ও তার স্ত্রী পপি।

ক্ষুব্ধ স্বামী ইয়াকুব মুন্সি বলেন, “সেদিন বাজার থেকে ফিরে দেখি ঘরে তালা ঝুলছে, চাবি পড়ে আছে। পরে ছেলেরা জানায়, মা নেই। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে সন্তানদের চাপ দিলে তারা জানায়, মুরাদ ও সোহাগ প্রায়ই আমাদের বাসায় যেতেন এবং মাকে নিয়ে গেছে। সন্তানদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল, যদি আমাকে কিছু বলে তাহলে তাদের মেরে ফেলা হবে।”

ইয়াকুবের দাবি, “মুরাদ ও সোহাগ আমার ঘরে থাকা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং তিন সন্তানসহ আমার স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। আমি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার চাই।”

এদিকে, ইয়াকুবের ছেলে ইয়াসিন বলেন, “আমরা ৫ ভাই ও ১ বোন। সবাই সুখেই ছিলাম। কিন্তু মুরাদ ও সোহাগ আমাদের পরিবার ধ্বংস করে দিয়েছে। থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর একটি ফোন নম্বর ট্র্যাক করলে দেখা যায়, সোহাগ ও তার স্ত্রী সরাসরি এ ঘটনায় জড়িত।”

স্থানীয়রা জানান, আয়েশা বেগম মোবাইলে দীর্ঘক্ষণ কথা বলতেন এবং স্বামী বাড়িতে না থাকলে মুরাদ ও সোহাগ তাদের বাসায় যেতেন। তারা আরও দাবি করেন, মুরাদ আগেও এমন দুটি ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

অভিযুক্ত মুরাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে তালা ঝুলছে। তার ভাই সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।

অন্যদিকে অভিযুক্ত সোহাগ হাওলাদার বলেন, “আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে। ঘটনার দিন আমি হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম এবং মুরাদ আমার মোবাইল নিয়ে চলে যায়।”

চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজান হাওলাদার বলেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসনা শারমিন মিথির মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফলে এ বিষয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

আসিফ

×